ফাইল ছবি
অর্ণব আইচ ও অভিরূপ দাস: করোনা (Coronavirus) আতঙ্কে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। তার মাঝেই মাথাচাড়া দিচ্ছে কিছু প্রতারণা চক্র। সদ্যই কলকাতা পুলিশের জালে ধরা পড়েছে ভেজাল স্যানিটাইজার (Sanitizer) বিক্রেতারা। এবার সামনে এল কোভিড পরীক্ষার নামে প্রতারণা চক্র। এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালের অভিযোগের ভিত্তিতে নেতাজিনগর থানার পুলিশ এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তারও করেছে।
দিনকয়েক আগে এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে ভরতি হতে যান নাকতলার বাসিন্দা পেশায় ব্যাংক কর্মী বিমল কুমার সিনহা। তিনি কোভিড পরীক্ষার একটি রিপোর্ট দেখান ওই হাসপাতালে। ওই রিপোর্ট দেখে সন্দেহ হয় এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালের সুপারের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁর দেখানো পজিটিভ রিপোর্ট আদতে ‘ভুয়ো’। সেই রিপোর্টে থাকা একটি নম্বর দেখেও সন্দেহ হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। অভিযোগ জানানো হয় নেতাজিনগর থানায়। পুলিশ অভিযোগ খতিয়ে দেখে। তদন্তও শুরু হয়। তাতেই সামনে আসে এসএসকেএম হাসপাতালের ল্যাবরেটরির চুক্তিভিত্তিক কর্মী বিশ্বজিৎ সিকদার, আরজি কর হাসপাতালের ল্যাবের চুক্তিভিত্তিক কর্মী ইন্দ্রজিৎ সিকদার এবং অনীক পায়রা-সহ মোট তিনজনের নাম।
পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয় তাদের। ঠিক কীভাবে অসহায় রোগী এবং তাঁদের পরিজনদের সঙ্গে প্রতারণা করত তারা, তাও জানতে পারে পুলিশ। অভিযুক্তদের মধ্যে একজন আইসিএমআরের স্ট্যাম্প দেওয়া একটি ফর্ম চুরি করে। সেই ফর্মই জেরক্স করে রমরমিয়ে প্রতারণা চক্র চালিয়ে যাচ্ছিল। বিভিন্ন হাসপাতালে ঘোরাফেরা করে রোগী এবং তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করত ওই অভিযুক্তরা। কম খরচে কোভিড টেস্ট করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিত। কোনও কোনও রোগী এবং রোগীর পরিবার তাদের কথায় রাজি হয়ে যেত। আর তারপরই ইচ্ছামতো কাউকে নেগেটিভ, আবার কাউকে পজিটিভ রিপোর্ট দিত ওই ধৃতরা। এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালের চিকিৎসকদের ওই রিপোর্ট দেখে সন্দেহ হওয়ার ফলেই সামনে এল প্রতারণা চক্র। শুধু এই তিনজন নাকি প্রতারণা চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এ প্রসঙ্গে এসএসকেএম হাসপাতালের সুপার রঘুনাথ মিত্র বলেন, “আমরা এ বিষয়ে স্বাস্থ্যদপ্তরের সঙ্গে কথা বলেছি। যারা অভিযুক্ত তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আরও কেউ এই চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকলে তাদের কাউকেই রেয়াত করা হবে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.