ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ: ইসরো থেকে শুরু করে নাসা – সবই নাকি তাদের হাতের মুঠোয়! দেড়গুণ বা দ্বিগুণ দাম দিলে সুদূর নাসা থেকে আসা তেজস্ক্রিয় বস্তুও (Radioactive elements) মিলবে। বহু আশ্চর্যজনক কাজকর্ম তারা ঘটাতে পারে তেজস্ক্রিয় বস্তুর সাহায্যে। এই টোপ দিয়েই কর্ণাটকের (Karnataka)এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সোয়া দু’কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল প্রতারকদের একটি চক্র। কড়েয়ার একটি অফিসে তল্লাশি চালিয়ে এই চক্রের তিন মাথাকে গ্রেপ্তার (Arrest) করলেন শেক্সপিয়র সরণি থানার আধিকারিকরা। এই চক্রের সঙ্গে অন্তত এক ডজন ব্যক্তি যুক্ত বলে ধারণা পুলিশের। তাদের খোঁজ চলছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত তিন ব্যক্তির নাম রুদ্র সেন, উৎপল সাহা ও সন্দীপ দাস। গত বছরের মার্চ মাসে দালালদের মারফৎ ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে অভিযুক্তদের পরিচয় হয়। ব্যবসায়ীর আসল বাড়ি কর্ণাটকে হলেও তিনি উত্তর শহরতলির বরানগরে থাকেন। তাঁকে শেক্সপিয়র সরণি এলাকার একটি হোটেলে ডাকা হয়। অভিযুক্তরা নিজেদের ইসরো (ISRO) ও নাসার (NASA) সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করে। তারপর জানায়, তাদের কাছে তেজস্ক্রিয় উপাদান রয়েছে। নমুনা হিসাবে একটি কালো রঙের কাগজে মোড়া প্লাস্টিকের বোতল নিয়ে এসেছিলেন তারা। তার ভিতর রেখে দেয় ফ্লুরোসেন্ট বস্তু। অন্ধকারে বোতলে টর্চের আলো ফেললেই ভিতর থেকে তা জ্বলে ওঠে।
ব্যবসায়ীকে বোঝানো হয় যে, ওই বস্তুটির তেজস্ক্রিয় রশ্মি বিকিরণের ক্ষমতা রয়েছে। সেটি অত্যন্ত দামি। এর উপকারিতাও অসীম। কিন্তু ব্যবসায়ীকে তা অত্যন্ত সস্তায় দেওয়া হবে বলে দাবি করা হয়। ওই বস্তুটি সরাসরি নাসা থেকে নিয়ে আসতে হবে বলে দাবি করে তারা। এভাবে কয়েক দফায় কুড়ি লক্ষ টাকা নেওয়া হয় ওই ব্যবসায়ী। তার বদলে একটি ভুয়া সংস্থার বিল দেয় তারা। এবার ওই ধরনের বস্তুর কিছুটা একটি বাক্স করে নিয়ে আসা হয়। বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্য তারা ইসরো ও নাসার লোগো ব্যবহার করে। বলা হয়, ওই বাক্সও বিশেষভাবে তৈরি। হাতের কৌশলে ওই তেজস্ক্রিয় বস্তুর সংস্পর্শে নিয়ে এসে ছোট মাপের চাল ‘বড়’ করিয়ে ব্যবসায়ীকে দেখায়।
এভাবে কোনও বিল বা ক্যাশমেমো না দিয়ে কয়েক দফায় আরও ২ কোটি ৯ লক্ষ টাকা নেয় বলে অভিযোগ। কিন্তু ব্যবসায়ী ওই বস্তুটি হাতে নেওয়ার পর কোনও কাজ না হওয়ায় শেষে বুঝতে পারেন যে, তিনি প্রতারণার শিকার। শেক্সপিয়র সরণি থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর কড়েয়ার অফিসে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তাদের ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। উদ্ধার হওয়া বস্তু ফরেনসিকে পাঠানো হচ্ছে। চক্রের পলাতক সদস্যদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.