অভিরূপ দাস: কোনও ভিডিও থেকে তেরো, কোনওটা থেকে পঁচিশ! নোংরা, অশ্রাব্য, ঘৃণ্য কথা বলেই পকেটে ঢুকছিল হাজার হাজার টাকা। বেশ তো রোজগার হচ্ছে। পরিশ্রম না করে, স্রেফ খিস্তি দিয়েই ভরছে পকেট। বিশিষ্টরা বলছেন, দ্রুত জনপ্রিয়তা আর আয় বাড়াতে অনির্বাণ রায় বেছে নিয়েছিলেন এই পন্থা। রোদ্দুর রায়ের (Roddur Roy) নাম ভাঁড়িয়ে ইউটিউব, ফেসবুকে শুরু হয় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ! লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে ‘ভিউ।’
বাঙালি ইউটিউবাররা বলছেন, সাধারণত বাংলা আঞ্চলিক ভাষা হওয়ায়, বাংলা ভাষায় ভিডিও তৈরি করলে রোজগার কম। যে কারণে রোদ্দুর রায়ের ভিডিওতে প্রচুর ইংরেজি কথা। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রোদ্দুর রায়ও চেয়েছিলেন জাতীয় স্তরেও তাঁর ভিডিওর দর্শক বাড়ুক। পকেটে আসুক টাকা।
দু’লক্ষ, আড়াই লক্ষ জনতা শুনতেন বিখ্যাত লোকেদের সমন্ধে তাঁর অশ্রাব্য খিস্তি। আর টাকা কামাতেন রোদ্দুর রায়। ইচ্ছাকৃতভাবেই রোদ্দুর টার্গেট করতেন বিখ্যাত লোকেদের। শুধু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন, দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বিদ্রোহ কবি কাজী নজরুল ইসলামও বাদ যাননি তাঁর কুৎসিত আক্রমণ থেকে। প্রজাতন্ত্র দিবসকে কালিমালিপ্ত করেছেন।
রবীন্দ্র গবেষক পূর্ণেন্দু বিকাশ সরকার জানিয়েছেন, রবি ঠাকুরের গানের গ্রহণযোগ্যতা সবর্স্তরে। রবীন্দ্রনাথকে গালি দিয়ে আদতে নিজে নাম কামাতে চেয়েছেন রোদ্দুর। পূর্ণেন্দুবাবুর কথায়, “সারা পৃথিবীর কাছে বাঙালির সম্মান বাড়িয়ে দেন রবীন্দ্রনাথ। রোদ্দুর রায়ের ওই ভিডিও দেখে বিশ্বের লোকই বা কী ভাবছেন?” এদিকে সোশ্যাল সাইটে শুরু হয়েছে মৌখিক আন্দোলন। ‘রোদ্দুর রায়ের মুক্তি চাই।’
বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটায় ব্যাঙ্কশাল কোর্টের সামনে জমায়েত হবেন ইউটিউবাররা। থাকবেন অগুনতি সাধারণ মানুষ। যাঁর রোদ্দুর রায়ের নিঃশর্ত মুক্তি চান। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রোদ্দুর রায়কে তোলা হবে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে। ছাড়া পাবেন তিনি? লেখক অর্ক দেব জানিয়েছেন, রাষ্ট্রযন্ত্র দুর্নীতিগ্রস্ত, মৌলবাদীদের চেয়ে রোদ্দুর রায়দের ‘খতরনাক’ মনে করে। আইন আইনের পথে চলুক। তবে গ্রেপ্তারির প্রতিবাদেই স্বতঃস্ফূর্ত জমায়েত হবে বৃহস্পতিবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.