সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা পরিস্থিতিতে কি কলকাতার দুর্গাপুজো এবার হবে না? শারদোৎসব কি তবে শিকেয় উঠল? দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কলকাতার পুজো সংগঠনগুলি থেকে শিল্পীরা। কিন্তু করোনাসুরকে তো বধ করতেই হবে। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে যাতে মারণ ভাইরাসের আঁচ না লাগে তার জন্য সবরকম প্রচেষ্টা চালাচ্ছে কলকাতার নামী পুজো কমিটিগুলি। হোক বাজেটে কাটছাঁট, কিন্তু পুজো হওয়া চাই-ই। সেইমতো কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে অনেক ক্লাব। তাদের মধ্যে অন্যতম হল দক্ষিণ কলকাতার নামী ক্লাব সন্তোষপুর লেকপল্লি। করোনাকে থোড়াই কেয়ার! লকডাউনের মধ্যেই পুজোর প্ল্যান রেডি। এমনকী শিল্পীকেও অগ্রিম দিতে চলেছেন সংগঠকরা।
সন্তোষপুর লেকপল্লির এবারের পুজোর দায়িত্ব যাঁর কাঁধে, তিনি হলেন শিল্পী সোমনাথ মুখোপাধ্যায়। পুজোশিল্পের পরিচিত নাম। তিনি এবার আরও কয়েকটি ক্লাবের পুজোর কাজও করছেন। কিন্তু তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে লেকপল্লির সংগঠকদের উৎসাহ। এই সময়ে যখন ছোট-বড় সব ক্লাবই তাদের পুজোর ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত। সেখানে রীতিমতো ফ্রন্টফুটে খেলেছে লেকপল্লি। সোমনাথবাবু জানিয়েছেন, ‘অনেকেই নেতিবাচক ভাবছেন এই সময়ে। কিন্তু এত বড় একটা শিল্প, যার সঙ্গে লক্ষ লক্ষ মানুষের রুজি-রুটি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে তার কথাও তো ভাবতে হবে। বিপর্যয় আগেও এসেছে, কিন্তু সেই বিপর্যয়ের মধ্যেও লক্ষ্য স্থির রেখে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই করোনা যুদ্ধে জয়ী হওয়া যাবে। বাজেট কাটছাঁট হোক না, কিন্তু পুজোটা হলে কিছু মানুষের মুখে হাসি ফুটবে।’ শুধু শিল্পীকে অগ্রিম দেওয়াই নয়, করোনা মোকাবিলায় ৬২৬টি নিরুপায় পরিবারের পাশে দাঁঁড়িয়ে তাদের সাধ্যমতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী হাতে তুলে দিয়েছে সন্তোষপুর লেকপল্লি।
শিল্পী জানিয়েছেন, অন্য বছর এই গ্রীষ্মেই পুজোর কাজকর্ম শুরু হয়ে যায়। প্যান্ডেলের নকশা, মাপজোক, সহশিল্পীদের তব্দির করা আরও কত কী! কিন্তু লকডাউনে সেসব বন্ধ। কাজকর্ম অথৈ জলে। সেই পরিস্থিতিতে ক্লাব সংগঠন যদি নিরুৎসাহ হয়ে পড়ে তাহলে পুজোর কী হবে? তাই এই যে লেকপল্লি শিল্পীকে এই লকডাউনের মধ্যেও অগ্রিম দিচ্ছে, এটাই বাড়তি পাওনা। বড় উৎসাহ। শুধু লেকপল্লিই নয়, সম্প্রতি লকডাউনের মধ্যেও পুজো বাঁচিয়ে রাখার জন্য এগিয়ে এসেছে সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যার পুজো কমিটিও। কুমোরটুলিতে শিল্পী মিন্টু পালের হাতে প্রতিমা তৈরির অগ্রিম তুলে দেন উদ্যোক্তারা। এইভাবেই এগিয়ে আসুক পুজো কমিটিগুলি, বিপদের মধ্যেও খুশির হাসি ফুটুক শিল্পীদের মুখে। এই না হলে পুজোওয়ালা!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.