সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়: শহরের উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক এবং ঐতিহ্যবাহী স্থান রাজা রামমোহন রায় মিউজিয়ামে চুরির খবর বুধবার প্রকাশ্যে আসতেই লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ তৎপর হয়ে উঠেছিল। মিউজিয়ামের সর্বক্ষণের রক্ষী নারায়ণ প্রামাণিক অভিযোগ দায়ের করেছিলেন আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায়। কে বা কারা জানলার লোহার রড কেটে ভিতরে ঢুকে বেশ কিছু দুর্মূল্য জিনিস চুরি করে নিয়ে গেল সেই সন্ধানেই ছিল পুলিশ। তবে দিন ঘুরতেই বৃহস্পতিবার ওই মিউজিয়াম থেকেই ধরা পড়ল চোর। কীভাবে? নেপথ্য কাহিনি কিন্তু বেশ মজার।
[আরও পড়ুন: রামমোহন মিউজিয়ামে রহস্যজনক চুরি, তদন্তে গোয়েন্দারা]
রাজা রামমোহন রায় মিউজিয়ামে চুরির অভিযোগে ধরা পড়েছে মোট তিন জন। তার মধ্যে একজন নাবালক, বয়স ১৩। ধরা পড়া তিন চোরের মধ্যে দু’জনের নাম- মহম্মদ বাদল এবং অভিজিৎ অধিকারী। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই তিনজনই রাজা রামমোহন রায় সরণির ফুটপাতের বাসিন্দা। সোমবার মিউজিয়াম থেকে চুরি করা বহুমূল্য জিনিসগুলি স্থানীয় এক লোহা ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে তারা। সেখানে ভাল দাম ওঠায় লোভের বশে ফের বুধবার রাতে চুরি অভিযান চালায় রাজা রামমোহন রায় মিউজিয়ামে। অন্যদিকে, মিউজিয়ামে চুরির খবর প্রকাশ্যে আসতেই বুধবার রাত থেকে জোর টহলদারি চালাচ্ছিল পুলিশ। সেই খবর হয়তো ছিল না চোরদের কাছে। সেটাই কাল হল তাদের। বুধবার রাতে মিউজিয়ামে পা রাখতেই আর যায় কোথায়? ব্যাস অমনি পুলিশের খপ্পরে!
[আরও পড়ুন: পরিবেশ বাঁচাতে ‘সবুজের অভিযানে’ মুখ্যমন্ত্রী, ৬ কিমি পদযাত্রা মমতার]
আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার অন্তর্গত রাজা রামমোহন রায় সরণিতে রয়েছে রামমোহন রায়ের নামাঙ্কিত এই মিউজিয়াম। এই বাড়িতে থাকতেন রাজা রামমোহন রায় নিজে। এরপর সেই বাড়িতে তাঁরই নামাঙ্কিত মিউজিয়াম তৈরি হয়। সপ্তাহের প্রতি সোমবার এই মিউজিয়াম বন্ধ থাকে। মঙ্গলবার সকালে মিউজিয়াম খুললে কেয়ারটেকার নারায়ণ প্রামাণিক দেখতে পান, মিউজিয়ামের পাঁচটি জানলার লোহার রড কাটা। সেখান দিয়ে কেউ হাত বাড়িয়ে হোক, কিংবা ভিতরে ঢুকেই হোক চুরি করে নিয়ে গিয়েছে দুষ্প্রাপ্য পিতলের হাতল ও কড়া। সেগুলি সবই রামমোহনের আমলের। কাজেই অ্যান্টিক জিনিসের বাজারদর যে মহার্ঘ হতে পারে, তাতে সন্দেহ ছিল না। আর প্রথম দফায় চুরি করা জিনিসে চড়া দাম পেয়েই দ্বিতীয় দিনও সেই লোভে পা রেখেছিল মিউজিয়ামে। তবে পুলিশ রণে ভঙ্গ দেওয়ায় সেই সাধ আর মিটল না মহম্মহ বাদল, অভিজিৎ অধিকারী-সহ ওই নাবালকের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.