সুরুচির থিমের সঙ্গে সংযোজিত রয়েছে বৃদ্ধাশ্রম।
স্টাফ রিপোর্টার: উৎসবের কলকাতায় অন্যতম সেরা শারদ আয়োজন সুরুচি সংঘে ‘থিম সং’ লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, একেবারে গানের কথা মিলিয়ে পুজোর শিল্পসৃষ্টির সঙ্গে সংযোজন করিয়েছেন একটি আস্ত বৃদ্ধাশ্রম। পুজোর উদ্বোধনী সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সুরুচির কর্ণধার মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী দিদি শুধুমাত্র গান লেখেননি, আমাদের প্রতিটি পরিবারের উৎসের কথা মনে করিয়ে দিতে, বাবা-মাকে হৃদয়ে রাখতে একটি বৃদ্ধাশ্রমও থিমের সঙ্গে রাখতে বলেন। তাই এবারের পুজোর শুধু থিম সং নয়, পুরো ভাবনাটাই দিদির।”
আর বিশ্বজুড়ে বাড়তে থাকা এই বৃদ্ধাশ্রমের যন্ত্রণা এবং আবেগের কথা যে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর গানের পঙ্ক্তিতে ব্যবহার করেছেন তা মণ্ডপে পা রাখলেই শিল্পী মহালক্ষ্মী আইয়ারের কণ্ঠে শোনা যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘যাঁদের জন্য এসেছে সুদিন/ তাঁরাই তো আজ হয়েছে প্রবীণ, তাঁরাই উৎসবের প্রেরণা।’ মমতার এই গান যে সুরুচিতে পা রাখা লক্ষ লক্ষ দর্শকের অন্তরাত্মাকে ছুঁয়ে যাচ্ছে, তা মণ্ডপের শেষ প্রান্তে বাঁদিকে বৃদ্ধাশ্রমের সামনে এসে থমকে যাওয়া দেখে অনুভব করছেন পুজোর স্বেচ্ছাসেবকরা। পুজোর সম্পাদক স্বরূপ বিশ্বাসের কথায়, ‘‘গরুর গাড়ি থেকে দ্রুত গতির প্রাইভেট কার, বাইক, টেলিফোন, সব পুরাতন সামগ্রী, সঙ্গে মন কেড়ে নেওয়া আলোর খেলা থাকলেও দর্শকরা বৃদ্ধাশ্রমের সামনে এসে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ছেন।’’
তিনি আরও জানান, “মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ মেনে বৃদ্ধাশ্রম ফুটিয়ে তুলতে গিয়ে শুধুমাত্র জীবনের শেষপ্রান্তে পৌঁছে যাওয়া প্রবীণ-প্রবীণাদের যুগল পায়ের উপস্থিতি যেমন রয়েছে, তেমনই জপমালার সারি ঝুলছে। এমন দৃশ্য কাউকে যেমন বৃন্দাবনের প্রবীণদের ঠিকানা মনে করিয়ে দিচ্ছে, তেমনই নবনীড়ের বহু পরিবার বিচ্ছিন্ন বৃদ্ধ-বৃদ্ধার অসহায়তাকেও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে যে আমাদের সকলের জীবনের উৎস বাবা-মা, প্রবীণদের আগলে রাখতে বলেন, তার প্রমাণ পুজো উদ্বোধনের শেষে প্রতি বছর তিনি নবনীড়ে যান। সময় কাটান পরিবারবিচ্ছিন্ন মানুষের সঙ্গে। আবার বাড়ির কালীপুজোয় গাড়ি পাঠিয়ে আমন্ত্রণ জানিয়ে বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের নিয়ে আসেন নিজেই।” আর সেই কারণে এবার সুরুচির পুজোতেও ‘পুরনো সেই দিনের কথা’ ভাবনায় বৃদ্ধাশ্রম জুড়ে দিয়ে সবার পরিবারের উৎস ‘বাবা-মাকে আগলে রাখতে’ বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.