সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দ্বিতীয়বার রাজ্য সভাপতির পদে বসেই অন্যদের সতর্ক করে দিয়েছিলেন, তাঁর থেকে ভাল কথা কেউ যেন আশা না করে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রমাণ করলেন নিজের কুকথায় আরও শান দিচ্ছেন। হাওড়ায় অভিনন্দন যাত্রার পর জনসভায় দিলীপ ঘোষ বললেন, ”বিরোধীদের মা-বাবার ঠিক নেই। তাই তারা কাগজ দেখাবেন না বলে শোরগোল তুলছেন। আমাদের কাগজ দেখাতে কোনও ভয় নেই। কারণ, আমাদের মা,বাবা ঠিক আছে।” অর্থাৎ CAA-NRC’র বিরোধিতা যারাই করছেন, তাঁদের কারও ‘মা-বাবার ঠিক নেই’ বলেই মনে করছেন দিলীপ ঘোষ। যথারীতি তাঁর এই কুরুচিকর মন্তব্যের নিন্দার ঝড় উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। সিপিএম, কংগ্রেস, তৃণমূল – সকলে একযোগে বিজেপি রাজ্য সভাপতির সমালোচনায় মুখর।
রাজনীতির ময়দানে বাক্যবাণও এক শক্তিশালী অস্ত্র। মন্তব্য, পালটা মন্তব্যকে হাতিয়ার করে লড়াই চালিয়ে যান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা। তবে কুকথার উপর ভর করেও ইদানিং রাজনৈতিক লড়াই চলছে। অনুব্রত মণ্ডল, দিলীপ ঘোষরা বরাবরই তাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। বিজেপি রাজ্য সভাপতি যখনই আক্রমণাত্মক কথা বলেন, তখনই তাতে কোনও না কোনও বিতর্কের ছোঁয়া থাকে। দ্বিতীয়বার রাজ্য সভাপতির পদে বসে সেই তালিকা দীর্ঘায়িত করে চলেছেন তিনি। একই ঘটনা বীরভূমের তৃণমূল সভাপতির ক্ষেত্রেও। তবে এবার বিরোধীদের নিশানা করতে গিয়ে প্রায় নজিরবিহীন ভাষা প্রয়োগ করে ফেললেন দিলীপ ঘোষ। বিরোধীদের জন্মপরিচয় টেনে আনলেন। বললেন, ”NRC-CAA বিরোধীদের মা,বাবার ঠিক নেই। তাই তারা এ নিয়ে চিন্তা করছে।”
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং NRC নিয়ে দিলীপ ঘোষের আরও হুঁশিয়ারি, ”প্রত্যেককে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হবে। বাংলাদেশ আসা লোকজনকে তো করতেই হবে। সব শরণার্থীকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা শুনে যাঁরা আবেদন করবেন না, তাঁরা বিপদে পড়বেন। ভোটার কার্ড, আধার কার্ড কিছুই কাজে লাগবে না। আবেদনই শেষ কথা।”
এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের মন্তব্য, ”রাজনীতি না জানা, না বোঝা মানুষ দিলীপ ঘোষ। এঁর সম্পর্কে কিছু বলতে আমি ঘৃণা বোধ করি। বাংলার মানুষই শুনুন, উনি কী বলছেন। তাতে বিজেপি নেতৃত্বের প্রতি স্বচ্ছ ধারণা হবে। যাঁরা বিজেপিকে সমর্থন করছেন, তাঁরা ভাবুন আগামী দিনে কী করবেন।” সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ি প্রশ্ন তুললেন, ”কাদের হাতে আমরা দেশকে তুলে দিচ্ছি?” কংগ্রেস বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানের কটাক্ষ, ”পাগলের কথার উত্তর দিতে নেই।” এসব সমালোচনা যতই হবে, ততই হয়ত কুরুচিকর মন্তব্যের প্লাবনে বিরোধীদের ধুয়ে দিতে আরও বদ্ধপরিকর হবেন দিলীপ ঘোষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.