ঝুপড়ি থেকে বহুতলে 'উত্তরণ' কলকাতার বসতিবাসীর!
অভিরূপ দাস: ভাঙাচোরা,জরাজীর্ণ, জঞ্জালে ঢাকা নয়। বাংলার বসতিও দেখতে হবে মাথা উঁচু করে। সেখানে এখন উঠবে বহুতল! বস্তিবাসীরা যাতে নিজস্ব জমিতে বহুতল তুলতে পারেন তার জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার।
উল্লেখ্য, বাংলার সিংহভাগ বসতি ঠিকা জমিতে। ঠিকা জমিতে বাড়ি তৈরির পথ সুগম করতে বিধানসভায় পাশ হয়ে গেল দি ওয়েস্টবেঙ্গল ঠিকা টেন্যান্সি (সংশোধনী বিল)। রাজ্যের আর পাঁচটা এলাকার মতোই ঠিকা জমির উপরেও এখন বহুতল তুলতে আর বাধা নেই। এতদিন তিলোত্তমার ক্ষেত্রে এই ছাড়পত্র দিত কলকাতা পুরসভা। হাওড়াতে হাওড়া পুরসভা। নতুন নিয়মে কেএমডি-কেও সংযোজন করা হল। এবার থেকে কেএমডিএ-র তরফেও তাদের এলাকায় ঠিকা জমিতে বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হবে।
এবার থেকে ঠিকা জমিতে বাড়ি করতে চেয়ে আবেদন করলে হাতে হাতে মিলবে ছাড়পত্র। যেসমস্ত ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা রয়েছে সেখানেও দু’মাসের মিটবে সমস্যা। যাঁরা ঠিকা জমিতে বাড়ি করতে চেয়ে আবেদন করবেন তাঁদের আবেদনের ১৫ দিনের মধ্যে ঠিকা জমির লিজ ডিডের পাশাপাশি ঠিকা মিউটেশন দেওয়া হবে। এমনকি ঠিকা ভাড়াটে বিল্ডিং প্ল্যানের জন্য আবেদন করলে অনুমোদন মিলবে ১৫ দিনের মধ্যে। নতুন সংশোধনের ফলে পুরসভার পাশাপাশি কেএমডিএ থেকে মিলবে বাড়ি নির্মাণের ছাড়পত্র। বিধানসভায় এদিন বিধায়ক দেবাশিস কুমার বলেন, “এই সংশোধনী ছোট হলেও তাৎপর্যপূর্ণ। নতুন এই অ্যাক্ট বেআইনি বাড়ি তৈরিকে প্রতিহত করতে পারবে। সকলের জন্য বাসস্থান করা হবে। কেএমডিএ এই অ্যাক্টে যুক্ত হলে ঠিকা জমি, ঝুপড়ি থাকবে না। কেএমডিএ এই অ্যাক্টের সুফল দিতে পারবে।” উত্তর হাওড়ার বিধায়ক গৌতম চৌধুরিও জানান, নগরোন্নয়ন দপ্তরকে যুক্ত করা হলে তার সুফল বসতিবাসী আরও বেশি করে পাবে।
এদিকে শনিবারই এস এন ব্যানার্জি রোডে নতুন ঠিকা কন্ট্রোলার অফিসের উদ্বোধন হল। এই অফিসে শহরের প্রতিটি ঠিকা জমির অ্যাসেসমেন্ট এবং ঠিকা রেকর্ড থাকবে। ঠিকা জমিতে বাড়ি করতে চেয়ে দপ্তরে দপ্তরে ঘোরার দিন শেষ। রাজ্যের পুর নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চান ঠিকা জমিতে যে সমস্ত বস্তিবাসীরা রয়েছেন তাদের দ্রুত উত্তরণ হোক। সেই জন্যেই তিনি ঠিকা ব্যবস্থাকে নগরোন্নয়ন দপ্তরের অধীনে নিয়ে এসেছেন। নতুন ঠিকা কন্ট্রোলার অফিস থেকে ঢিল ছোঁড়া দুরত্বে পুরসভায় মেয়র নিজে থাকবেন। ফলে জটিলতা অনেকটাই কাটবে।
এদিন মেয়র জানিয়েছেন, ঠিকা জমিতে বাড়ি করতে চেয়ে গোপালনগরের মানুষকে দিনের পর ঘুরতে হয়েছে। তারপরেই ঠিকা অফিসকে পুরসভার কাছে আনার সিদ্ধান্ত নিই। মেয়ররের কথায়, “আর ঝুপড়ি নয়, শহরে সুন্দর সুন্দর বাড়ি থাকবে। জলের লাইনে দাঁড়িয়ে সেখানে জল নিয়ে মারপিট হবে। বসতির মানুষও নিজস্ব বাথরুমে শাওয়ারে স্নান করবেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.