ছবি প্রতীকী
অর্ণব আইচ: রাতের অন্ধকারে টিনের পাতের উপর পা দিতেই মাটির তলা থেকে চিৎকার। বরং বলা যায় আর্তনাদ। প্রথমে কারারক্ষী চমকে উঠলেও টিনের পাত উঠিয়ে ম্যানহোলে টর্চ ফেলতেই ধরা পড়ল ‘১৭৩৩’ নম্বর বন্দি।
আলিপুর সেন্ট্রাল জেল থেকে পালানোর ছক কষেছিল। কিন্তু শুকনো ম্যানহোলের ভিতর লুকিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত কারারক্ষীদের চেষ্টায় ধরা পড়ে গেল ডাকাতির অভিযুক্ত এক বন্দি। কারা সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরখানেক আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থানার পুলিশের হাতে একটি ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিল অর্ঘ্য মণ্ডল নামের ওই অভিযুক্তকে। তখন থেকেই সে আলিপুর জেলে। থাকত এক নম্বর ওয়ার্ডের দোতলায়। বুধবার সন্ধ্যায় গুনতির সময় ‘১৭৩৩’ নম্বর ওই বিচারাধীন বন্দি অর্ঘ্যর কোনও সাড়া মেলেনি। কিছুক্ষণের মধ্যেই কারারক্ষীরা বুঝতে পারেন যে, গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে বন্দি। সঙ্গে সঙ্গে কারাকর্তাদের তা জানানো হয়। ততক্ষণে অন্ধকার হয়ে গিয়েছে। সাধারণত বন্দি পালানোর খবর পেলে পাগলাঘণ্টি বাজানোর দস্তুর রয়েছে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে কোনও বন্দিকেই সতর্ক করতে চাননি কারাকর্তারা। তাই পাগলাঘণ্টিও বাজানো হয়নি। কারারক্ষীরা টর্চ নিয়ে পুরো জেলজুড়ে খুঁজতে শুরু করেন ওই বন্দিকে। কিন্তু কোথাও তার সন্ধান মেলেনি। পাঁচিলের কাছেও খোঁজ করা হয়। যদি পাঁচিল টপকেও সে পালিয়ে গিয়ে থাকে, তবে তার চিহ্ন থাকবে পাঁচিলে।
[জে বি রায় আর্য়ুবেদিক কলেজে গণপিটুনি, চোর সন্দেহে যুবককে ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে মার]
জেলের একপ্রান্তে রয়েছে পুরনো প্রেসের বাড়ি। তার কাছেই পুরনো রান্নাঘর। সেদিকে বিশেষ কেউ যায় না। কিন্তু সেই দিক থেকেই একবার পাঁচিল টপকে পালিয়েছিল কয়েকজন বন্দি। তাই সেদিকেও চলে কারারক্ষীদের নজরদারি। কিন্তু কোথাও পাওয়া যায়নি তাকে। তখন রাত অনেকটাই। সন্ধান চালাতে চালাতেই একটি টিনের পাতের উপর পা দেন এক কারারক্ষী। সঙ্গে সঙ্গেই তলা থেকে আর্তনাদ। এক সেকেন্ডের মধ্যে পাতটি তুলে ফেলে দেখেন তার নিচে রয়েছে একটি শুকনো ম্যানহোল। তার ভিতর টর্চ ফেলতেই দেখা যায়, লুকিয়ে রয়েছে ওই বন্দি। জেরার মুখে ওই বন্দি জানায়, জেলের মধ্যে ঘুরতে ঘুরতেই শুকনো ম্যানহোলটি চোখে পড়ে তার। তখনই তার মাথায় পালানোর মতলব আসে। বিকেলেই ম্যানহোলে লুকিয়ে পড়ে উপরে টিনের পাত চাপা দেয়। কারারক্ষী টিনের পাতের উপর দাঁড়াতে তার মনে হয়েছিল, ঘাড়ের উপর পড়তে চলেছে কেউ। তাই চিৎকার করতে ওঠে সে। সন্ধান থেমে গেলে ম্যানহোল থেকে বেরিয়ে পাঁচিল টপকে পালানোর ছক কষেছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।
[পঞ্চায়েত এলাকার উন্নয়নে বিশেষ নজর, মন্ত্রীগোষ্ঠী তৈরির সিদ্ধান্ত মমতার]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.