Advertisement
Advertisement

Breaking News

দ্রুত অপরাধীদের জেলে ভরতে হবে, প্রশাসনকে নির্দেশ কমিশনের

বেশ কয়েকটি জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয় কমিশন।

The Election Commisssion has instructed authorities to jail rogue elements
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:March 16, 2019 2:44 pm
  • Updated:March 16, 2019 2:44 pm  

শুভঙ্কর বসু: ভোটের আগে যেন কোনও অপরাধী জেলের বাইরে না থাকে। রাজ্য ও জেলা প্রশাসনকে এমনই নির্দেশ দিল নির্বাচন কমিশনের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল। অনেক আগেই বিভিন্ন জেলাকে জামিন যোগ্য ও জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করতে বলেছিল কমিশন। সূত্রের খবর, বেশ কয়েকটি জেলায় সমস্ত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এখনও পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। অবিলম্বে সেসব জেলাকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। জানা গিয়েছে, রাজ্যজুড়ে প্রায় ১০ হাজার অপরাধী এখনও ধরা পড়েনি। তাদের নিয়েই চিন্তায় রাজ্য প্রশাসন। তবে ভোটের আগে এদের সকলকে জেলে ঢোকানো হবে বলে কমিশনকে আশ্বাস দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।

শনিবার সকালেই উপ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈনের নেতৃত্বে এক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল পা রাখে শহরে। কার্যত তারপরই কাজে লেগে যায় তারা। প্রথমে সবক’টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দেখা করে তাদের অভিযোগ শোনেন তাঁরা। তারপর উত্তরবঙ্গের কিছু জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স হয় তাঁদের। এরপর দক্ষিণবঙ্গের জেলশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠক করে এই উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল। সবশেষে রাজ্য প্রশাসন ও সিইও অফিসের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে সার্বিক ভোট প্রস্তুতি নিয়ে কথা হয় কমিশনের প্রতিনিধিদের। ইতিমধ্যেই রাজ্যের সমস্ত বুথকে স্পর্শকাতর হিসাবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছে বিজেপি-কংগ্রেস। এদিনও তারা তাদের দাবিতে অনড় রয়েছে। এদিন আরও একবার কমিশনের প্রতিনিধিদের সামনে সেই দাবি পেশ করেছে বিজেপি। যদিও বৈঠক থেকে বেরিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিজেপি ছল চাতুরির আশ্রয় নিচ্ছে। মিথ্যাচার করছে।”

Advertisement

[নির্বাচনী আবহে কালো টাকার লেনদেন রুখতে পদক্ষেপ আয়কর বিভাগের]

এদিন জেলাগুলির তরফে কমিশনের প্রতিনিধি দলের কাছে সার্বিক ভোট প্রস্তুতি নিয়ে দু’টি রিপোর্ট পেশ করা হয়। একটি রিপোর্টে জেলার নিরাপত্তা পরিকল্পনা ও সার্বিক আইনশৃঙ্খলাজনিত তথ্য পেশ করা হয়। অন্য রিপোর্টে জেলার সার্বিক ভোট প্রস্তুতি কোন পর্যায়ে রয়েছে তা তুলে ধরা হয়। যেহেতু রাজ্যের সবক’টি বুথকে স্পর্শকাতর দাবির প্রশ্নে শাসক-বিরোধী রাজনৈতিক তরজা এখনও চলছে সেকারণে প্রতিটি জেলার স্পর্শকাতর এলাকা সম্পর্কে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত হয়ে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের তথ্য জানাতে বলা হয়েছিল। সেইমতো এদিন রিপোর্ট পেশ করে জেলাগুলি। সূত্রের খবর, বেশ কয়েকটি জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয় কমিশন। জানা গিয়েছে, জামিনযোগ্য ও জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করার ক্ষেত্রে এখনও পিছিয়ে রয়েছে একাধিক জেলা। এব্যপারে যে কোনও গাফিলতি চলবে না, তা ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট জেলাগুলিকে জানিয়ে দিয়েছে কমিশন।

নির্বাচন ঘোষণার পর থেকে নিরাপত্তা জোরদার করতে ইতিমধ্যেই একাধিক পদক্ষেপ করেছে জেলাগুলি। ইতিমধ্যেই সবক’টি জেলায় শুরু হয়েছে নাকা চেকিং। সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে সীমানা সিল করে দেওয়া হয়েছে। সীমানা এলাকার সংলগ্ন জেলাগুলির সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক করা হয়েছে। সরকারি বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং সরানোর কাজ চলছে পুরোদমে। এছাড়াও সার্বিক ভোট প্রস্তুতি অর্থাৎ ভোট কেন্দ্রে ন্যূনতম সুবিধা প্রদান। শারীরিকভাবে অক্ষমদের বিশেষ সুবিধাপ্রদান থেকে শুরু করে একগুচ্ছ পদক্ষেপের কথা জানানো হয়েছে কমিশনের প্রতিনিধিদলকে। জেলাগুলিকে কমিশনের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে বলা হয়েছে জেলাগুলিকে। এবার শারীরিকভাবে অক্ষম ভোটারদের জন্য একগুচ্ছ ব্যবস্থা নিয়েছে কমিশন। এব্যাপারে রাজ্যের উদ্যোগে খুশি কমিশন। শারীরিকভাবে অক্ষম ভোটারদের যাতে কোনওরকম অসুবিধা না হয় সে কারণে এবার একাধিক উদে্যাগ নিয়েছে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর। একজন অক্ষম ভোটাররাও যাতে বাদ না পড়ে সে কারণে রাজ্যে প্রথম বারের জন্য সিইও অফিসের দপ্তরের তরফে নিয়োগ করা হয়েছে এক্সেসিবিলিট অবজারভার।

[বেনজির! জেল থেকে SET পরীক্ষায় পাস করলেন মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম]

সিইও অফিসের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছে কমিশনের প্রতিনিধি দল। যদিও রাজ্যের সর্বত্র এখনও সরকারি বিজ্ঞাপন সরানোর কাজ শেষ না হওয়ায় রাজ্যকে মৃদু তিরস্কারও করেছে কমিশন। শীঘ্রই এ কাজ শেষ করতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ইতিমধে্যই প্রথম দফা নির্বাচনে ইভিএম ‘র‌্যান্ডামাইজেশনের’ কাজ শেষ হয়েছে। ইভিএম-ভিভিপ্যাট আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে কমিশনের নির্দেশমতো চূড়ান্ত সতর্কতা বজায় রাখতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে কমিশনের প্রতিনিধিদল। এছাড়াও ভোটের আগে সমস্ত লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র জমা করার কাজ শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পৌঁছে গিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। আপাতত মোট ১০ কোম্পানি বাহিনী এসেছে রাজ্যে। শনিবারই তারা রুট মার্চ শুরু করবে বলে খবর। রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সঞ্জয় বসু জানিয়েছেন, উত্তর দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, দুই মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছে বাহিনী। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনমতো ধাপে ধাপে বাহিনী চলে আসবে। বাহিনীকে রাজে্য স্বাগত জানিয়েছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এ প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোটের সময় আসে, আবার চলেও যায়। তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না, অসুবিধা নেই। আগের নির্বাচনেও বাহিনী ছিল। কিন্তু তাও আমরা ২১১টা সিট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলাম। উলুবেড়িয়া লোকসভা উপনির্বাচনে পাঁচ লক্ষ ভোটে জিতেছে তৃণমূল। দুই জায়গার বিধানসভা উপনির্বাচনে ৬০ হাজার ভোটে জিতেছেন আমাদের প্রার্থীরা। কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেই গেল গেল, বিজেপি দখল করে নিল এমন নয়। আইন শৃঙ্খলা রাজ্যের। পুলিশ ভাল কাজ করছে। যারা সুরক্ষা দিতে পারে, উন্নয়ন করে মানুষ তাদের ভোট দেয়। কেন্দ্রীয় বাহিনী বুথ পাহারা দিক। এমনিতেই মানুষ সুনিশ্চিত রয়েছে। তবে ওঁরা যদি ভাবে তবে থাকুক। ওঁরা বুথ গার্ড দেওয়ার জন্য রয়েছে। যদি বাহিনী এলে সুরক্ষিত থাকেন তবে আসুক। এমনিতেই মানুষ সুরক্ষিত রয়েছে। বিরোধীরা যাই করুক, মানুষ তো আমাদের ভোট দিচ্ছে এবং সুরক্ষা, উন্নয়নের পক্ষে দাঁড়িয়ে ভোট দেবে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement