রাহুল চক্রবর্তী: গ্যালিফ স্ট্রিটে সাপ্তাহিক পাখির হাট কি উঠে যাচ্ছে? কেন্দ্রের একটি নির্দেশের পর চিন্তায় পাখি ব্যবসায়ীরা। সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয়েছে মামলা। চলতি মাসেই মামলার শুনানি। শীর্ষ আদালতের রায়ের দিকেই এখন তাকিয়ে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা৷ কারণ এই রায়ের উপরই নির্ভর করছে গ্যালিফ স্ট্রিটের ভবিষ্যৎ৷
[ফ্ল্যাটে কুকুর না রাখার ফতোয়া, প্রতিবাদে মার খেলেন যুবক ]
ইতিহাস বলছে, শতাব্দীপ্রাচীন হাতিবাগান পাখির মার্কেট। নবাব সিরাজদ্দৌলার সময় এখানে ছিল হাতিশাল, এমন তথ্যও রয়েছে। প্রতি রবিবার গ্যালিফ স্ট্রিটে সাপ্তাহিক হাট বসে। হাজারের উপরে ব্যবসায়ী পসরা সাজিয়ে বসেন। ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত পশু, পাখি বিক্রি চলে।পাখি ব্যবসায়ীরা বলছেন, কেন্দ্রের একটি নির্দেশের পর সাপ্তাহিক হাট আর থাকবে কি না, সেটাই বড় প্রশ্ন। কেন্দ্রীয় সরকারের পরিবেশ ও বনমন্ত্রক চলতি বছরের ৬ সেপ্টেম্বর একটি নির্দেশ জারি করে। যেখানে বলা হয়, এক্সোটিক বার্ড বা বিদেশি পাখির রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। যাঁদের পেট শপ আছে, তাঁরা রেজিস্ট্রেশন ছাড়া পাখি বিক্রি করতে পারবে না। এমনকী, যদি কেউ বাড়িতে পাখি পুষে তারপর বংশবৃদ্ধি করে বিক্রি করেন সেক্ষেত্রেও রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। পাখি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঘরে হোক বা হাটে, সবকিছুই পেট শপের আওতায় আনতে চাইছে কেন্দ্র। যার বিরুদ্ধে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছে পাখিপ্রেমীদের সংগঠন। পশ্চিমবঙ্গ এক্সোটিক বার্ড লাভার অর্গানাইজেশনের সহ-সভাপতি দেবব্রত আকুলি বলেন, “গ্যালিফ স্ট্রিটে প্রতি রবিবার যে হাট বসে, সেটাও পেট শপ আইনের আওতায় আনতে চাইছে কেন্দ্র। টেম্পোরারি স্ট্রাকচার দিয়ে সাপ্তাহিক হাট বসবে না, এমন নির্দেশই কার্যকর হতে চলেছে। আমরা এর বিরুদ্ধে গিয়ে দেশের শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করেছি। আর প্রতিটি পাখির পৃথকভাবে ফিট সার্টিফিকেট দেওয়া সম্ভবপর নয় বলে জানিয়েছি।”
[বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হলে হবেন মমতাই! কেন এমন বললেন দিলীপ ঘোষ?]
দেবব্রতবাবু জানিয়েছেন, বাংলার প্রায় পাঁচ লক্ষ পরিবার পাখি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। গ্যালিফ স্ট্রিটে হাজারের উপর হকার রয়েছে। সাপ্তাহিক পাখির হাট বন্ধ হয়ে গেলে, তাঁদের রুটিরুজিতে টান পড়বে৷ সুপ্রিম কোর্টে মামলা লড়ছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আইনজীবী সলমন খুরশিদ। এখন সুরাহার জন্য সুপ্রিম কোর্টের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন পাখি ব্যবসায়ীরা। তাঁদের বক্তব্য, পাখিদের বড় খাঁচা, পরিষ্কার জায়গা সবেরই ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু সাপ্তাহিক হাট বন্ধ হয়ে গেলে রুটিরুজিতে টান পড়বে। তেমনই গ্যালিফ স্ট্রিটের ঐতিহ্যবাহী পাখির বাজারের গরিমাও নষ্ট হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.