Advertisement
Advertisement

Breaking News

করোনা সংক্রমণ রোধকারী পিপিই কতটা সুরক্ষিত? জানাবে কৃত্রিম রক্তের পরীক্ষা

কলকাতার সরকারি অস্ত্র কারখানায় বসছে এই পরীক্ষার যন্ত্র।

Test with synthetic blood will confirm the safety of PPE to resist cororna infection
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 28, 2020 10:58 am
  • Updated:April 28, 2020 11:00 am  

অর্ণব আইচ: করোনা সংক্রমণের হাত থেকে মানুষকে বাঁচায় পিপিই। কিন্তু খোদ পিপিই যদি সুরক্ষিত না হয়? কোনওভাবে পিপিই-র ‘ফেব্রিক’ ভেদ করে যদি করোনা আক্রান্ত রোগীর দেহরস স্পর্শ করে চিকিৎসক, নার্স বা রোগীকে উদ্ধারকারীদের শরীরে? তাহলে তার ফল হতে পারে মারাত্মক। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যবহার করার আগে নিশ্চিত হতে হবে যে পিপিই বা ‘কভারঅল’ যথেষ্ট সুরক্ষিত।

সেই সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই এবার কলকাতার সরকারি অস্ত্র কারখানায় বসছে পিপিই পরীক্ষা করার যন্ত্র। এই যন্ত্রের সাহায্যে কৃত্রিম রক্ত ঢেলে দেখা হবে পিপিইর ‘ফেব্রিক’ চিকিৎসক বা নার্সদের রক্ষা করতে পারবে কি না। সেই কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণ কৃত্রিম রক্ত মজুত রাখা হচ্ছে। এই রাজ্যে পিপিই তৈরি করছে, এমন সংস্থাগুলিকে আহ্বান জানাচ্ছে অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড, যাতে কোন ঝুঁকি এড়িয়ে করোনার থাবা থেকে বাঁচতে এই যন্ত্রের মাধ্যমে সেগুলি সহজেই পরীক্ষা করে নেওয়া যায়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বৃদ্ধ দম্পতির বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিল পুলিশ, ভরতির ব্যবস্থা ক্যানসার রোগীকেও]

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সব থেকে বেশি ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন চিকিৎসক-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। কারণ, করোনা সংক্রমিত রোগীদের সরাসরি সংস্পর্শে তাঁরা আসেন। সেই কারণে তাদের পরতেই হয় পিপিই অথবা ‘কভারঅল’। যেহেতু পুলিশকর্মীদের রোগী উদ্ধার করতেও যেতে হয়, তাই প্রত্যেকটি থানায় পিপিই পাঠানো হয়েছে। অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড বা ওএফবি সূত্রে জানা গিয়েছে, অতি ঘন পলিইথিলিন বা এইচডিপিই দিয়ে এই ফেব্রিক তৈরি হয়। তার ফলে এই ‘কভারঅল সুট’ দিয়ে ঘাম বা তাপ বেরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু কোনও তরল পদার্থ অথবা বাতাসে ভেসে বেড়ানো ক্ষুদ্র বস্তু ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না। তাই তৈরি করার সময় সেলাইয়ের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া, যাতে কোনওভাবে লিক না হয়। বেশ কিছু অংশে ‘লিকুইড টাইট সিল’ ব্যবহার করা হয়। জিপারও থাকে ‘লিকুইড টাইট’। ওএফবি কানপুরের অস্ত্র কারখানায় ইতিমধ্যেই যে পিপিই তৈরি করতে শুরু করেছে, তা কম্পিউটারের প্রোগ্রামের ভিত্তিতে বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে কাটা হয়। সেলাই করার ক্ষেত্রে সাহায্য নেওয়া হয় যন্ত্রের। প্রত্যেক বর্গমিটারে এর ওজন হয় ৭০ গ্রাম।

কিন্তু পিপিই যে উপকরণ দিয়ে তৈরি হচ্ছে, তা যদি কোনওমতে লিক করে, নিমেষের মধ্যে চিকিৎসক-নার্সদের শরীরে সংক্রমিত হবে করোনা ভাইরাস। তা থেকে রক্ষা পেতে শুরু হয় ‘ব্লাড রেজিস্ট্যান্স টেস্ট’। প্রথমে এই পরীক্ষা করত কোয়েম্বাটুর এর সাউথ ইন্ডিয়ান টেক্সটাইল রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন। কিন্তু সারা দেশে যেভাবে করোনা থাবা বসিয়েছে, তা থেকে বাঁচতে ওএফবি চেন্নাই ও কানপুরের অস্ত্র কারখানায় শুরু করে এই পরীক্ষা।

[আরও পড়ুন: করোনার উপসর্গ নাকি সাধারণ কাশি? ধরা পড়বে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের তৈরি যন্ত্রে]

অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের যুগ্ম অধিকর্তা ড. উদ্দীপন মুখোপাধ্যায় জানান, পূর্ব ভারতে যাতে পিপিইর ওই পরীক্ষা বা ‘ব্লাড রেজিস্ট্যান্স টেস্ট’ করা যায়, তার জন্য এবার কলকাতার ইছাপুর গান এন্ড সেল ফ্যাক্টরি লাগোয়া মেটাল এন্ড স্টিল ফ্যাক্টরিতে বসানো হয়েছে যন্ত্র। কিছুদিনের মধ্যেই এই যন্ত্র চালু হয়ে যাবে। কৃত্রিম রক্ত ব্যবহার করে বিশেষজ্ঞরা পিপিইর নমুনা পরীক্ষা করবেন। পিপিই কতটা কার্যকর, তা জানতে এই পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি। কোনও নমুনা যদি ফেল করে তবে সেটিকে আর কোনমতেই ব্যবহার করতে দেওয়া উচিত নয়। পিপিই বা কভার অল-এর চাহিদা ক্রমে বেড়েই চলেছে দেশে। যদি কানপুরের কারখানায় চাপ বাড়ে, তাহলে কলকাতায় নিয়ে এসেও সেই নমুনা পরীক্ষা করা যেতে পারে। এ ছাড়াও রাজ্যের যে সংস্থাগুলি পিপিই তৈরি করছে, তাদের কাছে আবেদন করা হচ্ছে, যাতে কলকাতার এই অস্ত্র কারখানায় ফেব্রিক-এর নমুনা তারা পরীক্ষা করে। এই বিষয়ে রাজ্য সরকারকেও সাহায্যের জন্য ওএফবি প্রস্তুত।

Synthetic-Blood

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই পরীক্ষার জন্য কৃত্রিম রক্ত বা সিন্থেটিক ব্লাড অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সাধারণভাবে ফ্লোরিন ও কার্বনের যৌগ দিয়েই এই রক্ত তৈরি হয়। লাল রঙের এই পদার্থটির ঘনত্ব মানুষের রক্তের মতোই। পিপিইর ফেব্রিক এই বস্তুটিকে আটকে দিলে নিশ্চিত হওয়া যাবে যে, করোনা রোগীর দেহরস পিপিই ব্যবহারকারীকে সংক্রমিত করতে পারবে না। এই যন্ত্রটি চালু হওয়ার ফলে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মানুষের হাত আরও শক্ত হবে বলে জানিয়েছে ওএফবি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement