ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ: সরাসরি সেনা বা আধাসামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতের ছক জঙ্গিদের (Terrorists)? কলকাতা থেকে সেনাদের ‘অ্যাকশন ক্যামেরা’ উদ্ধারের পর এই প্রশ্নই তুলেছেন গোয়েন্দারা। এছাড়াও আধুনিক চিনা ড্রোন (Chinese drone) উদ্ধারও উসকে দিয়েছে এই ধারণা। এই নিষিদ্ধ বস্তুগুলি পাচারের উৎস খুঁজতে এখন শুল্ক দপ্তরের গোয়েন্দাদের নজরে দু’টি কুরিয়র সংস্থাও। তাদের একটি কলকাতা ও অন্যটি চেন্নাইয়ের। ওই দুই কুরিয়র সংস্থার কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান তদন্তকারীরা। তাঁদের মতে, অনেক সময় ডার্ক ওয়েবে (Dark Web) অর্ডার দিয়েও এই নিষিদ্ধ বস্তুগুলি হাতে পেয়ে যাচ্ছে জঙ্গিরা। সেগুলি চিনের গোপন এজেন্টরা কুরিয়রের মাধ্যমে পাঠাচ্ছে। এই ক্ষেত্রে চেন্নাইয়ের একটি কুরিয়র সংস্থার মাধ্যমে বউবাজারের (Bowbazar) ম্যাডন স্ট্রিটের একটি কুরিয়র সংস্থায় পাঠানো হয়। ওই দুই কুরিয়র সংস্থার সিসিটিভির ফুটেজও পরীক্ষা করা হবে।
শনিবার মধ্য কলকাতার ম্যাডন স্ট্রিট থেকে উদ্ধার হয় চারটি আধুনিক চিনা ড্রোন। এছাড়া খোঁজ মেলে চারটি চিনা ক্যামেরার, যেগুলি অ্যাকশন ক্যামেরা (Action Camera) নামেই পরিচিত। দিনের মতো রাতের অন্ধকারেও অতি সহজে ওই ক্যামেরায় উঠতে পারে ছবি। কিন্তু নিছক ছবি তোলার জন্য ওই ক্যামেরা ব্যবহার করা যায় না। ওই ক্যামেরা থাকে মূলত সেনাদের হেলমেটে। জঙ্গি অভিযান বা যুদ্ধক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয় অ্যাকশন ক্যামেরা। গোয়েন্দারা অনেকটা নিশ্চিত যে, কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীই চিন (China) থেকে চোরাপথে পাচার করেছে এই আধুনিক ও উচ্চমানের ক্যামেরাগুলি।
সাধারণত অভিযান বা যুদ্ধে এই ধরনের ক্যামেরা সেনারা ব্যবহার করে থাকে, তাই জঙ্গিরাও সেনা (Army) বা আধাসামরিক বাহিনীর সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে যাওয়ার জন্যই এসব ব্যবহার করত, এমন সম্ভাবনা গোয়েন্দারা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। এক্ষেত্রে কোন জঙ্গিগোষ্ঠী এই ক্যামেরা পাচারের ছক কষেছে, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। তবে মোট ন’লক্ষ টাকা দামের চিনা ড্রোন ও অ্যাকশন ক্যামেরা যে একই জঙ্গিগোষ্ঠী পাচারের ছক কষে, সেই ব্যাপারে গোয়েন্দারা নিশ্চিত। যেহেতু চিনা ড্রোন পাচার হয়, তাই প্রত্যন্ত ও সীমান্তবর্তী এলাকায় জঙ্গিরা এগুলি ব্যবহার করত, এমন সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ ওই ড্রোনে রয়েছে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা, যা রাতেও স্পষ্ট ভিডিও ফুটেজ তুলতে পারে। ফলে এগুলি যে গুপ্তচরবৃত্তির (espionage) জন্য ব্যবহার করা হত। গোয়েন্দাদের প্রাথমিক অনুমান এমনই।
এই ব্যাপারটি খতিয়ে দেখছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারাও। ওই ক্যামেরা ব্যবহার করার ফলে অ্যাপের (App) সাহায্যে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেও বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। গোয়েন্দাদের মতে, এই পদ্ধতিতে কোনও সংঘাতের সময় জঙ্গলের মধ্যে গোপন শিবির থেকে ওই ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করত জঙ্গি নেতারা। সেইমতো প্রয়োজনে পালটানো হত অ্যাকশন প্ল্যান। আবার গুপ্তচরবৃত্তির জন্যও ওই ক্যামেরাগুলি ব্যবহার হতে পারত বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.