গৌতম ব্রহ্ম: একজনের বয়স ১৫। আর একজনের ১৩। উৎসেচকের উৎপাতে পঙ্গু হয়ে পড়েছিল দুই ভাই। হাঁটাচলা তো অনেক দূরের ব্যাপার, নিজের পায়ে দাঁড়ানোর ক্ষমতাটুকুও ছিল না। দেড় বছর পর অবশেষে ‘শাপমুক্তি’। হাসপাতাল থেকে হেঁটে বাড়ি ফিরল ২ ভাই। আনন্দে চোখে জল চলে এল সরকারি আয়ুর্বেদিক হাসপাতালের চিকিৎসকদের।
[ফের শহরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, সিঁথিতে পুড়ে ছাই গ্যারাজ]
দুই ছেলে গোবিন্দ ও উজ্জ্বলকে নিয়ে মহা বিপাকে পড়েছিল সোনারপুরের প্রতাপনগরের মণ্ডল দম্পতি। স্কুলে যাওয়া দূরের কথা, হাঁটাচলাই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল দুই ভাইয়ের। বছর চারেক আগে রোগ ধরা পড়ে। তখন থেকেই চিকিৎসা শুরু হয়। বি সি রায় শিশু হাসপাতাল থেকে বরানগর অর্থোপেডিক হাসপাতাল তো আছেই, আরও অন্তত এক ডজন চিকিৎসকের ‘কনসালটেশন’ নিয়েছিলেন মণ্ডল দম্পতি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং দিন দিন শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। বেঁকে গিয়েছিল হাত,পা। শেষপর্যন্ত আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হন চন্দন মণ্ডল ও তাঁর শেফালি। গত বছরের সেপ্টেম্বর ২ ছেলেকে দেখান সরকারি আর্য়ুবেদিক হাসপাতাল শ্যামাদাস বৈদ্যশাস্ত্রপীঠে আউটডোরে। প্রদ্যোৎবিকাশ করমহাপাত্রের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় চিকিৎসা। তিনি জানিয়েছেন, ‘ বিরল তরুণাস্থি ও অস্থিক্ষয় রোগে ভুগছিল ২ কিশোর। এখন পুরোপুরি সুস্থ তারা।”
[নয়া বিতর্কে ভারতী, ৪৫ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের]
প্রথম দু’মাস বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা চলে। হাতে, পায়ে বিভিন্ন জড়িবুটি দিয়ে ফোটানো তেল মালিশ করা হয়। দেওয়া হয়েছিল খাওয়ার ওষুধও। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক প্রদ্যোৎবিকাশ করমহাপাত্রের দাবি, অল্প কিছুদিনের মধ্যে সুফল মিলতে শুরু করে। ধীরে ধীরে হাতে ও পায়ে জোর ফেরে। ডিসেম্বর থেকে প্রায় মাস দেড়েক হাসপাতালে ভরতি থাকার ছাড়া পেয়েছে গোবিন্দ ও উজ্জ্বল। এখন পায়ে হেঁটে নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে তারা। সরকারি আয়র্বেদিক হাসপাতালে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ‘কন্ডো ডিসট্রফি’ নামে একটি রোগে আক্রান্ত হয়েছিল গোবিন্দ ও উজ্জ্বল। এই রোগ আক্রান্তদের হৃদযন্ত্র-সহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের পেশি দুর্বল হয়ে যায়। পুষ্টি অভাবে দেখা যায় কোষে। ফলে শরীর জুড়ে তরুণাস্থি ও হাড়ের বিষম বৃদ্ধি ঘটে। সাধারণভাবে বংশগতকারণেই ‘কন্ডো ডিসট্রফি’ রোগ হয়। তবে শেষপর্যন্ত যে ওই ২ কিশোরকে নিজের পায়ে দাঁড় করানো গিয়েছে, তাতে আয়ুর্বেদেরই জয় হয়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
[হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমেও পড়াশোনা সম্ভব, পথ দেখাচ্ছেন মিত্র ইনস্টিটিউশনের প্রাক্তনীরা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.