শুভঙ্কর বসু: বর্তমান পরিস্থিতিতে কোন স্কুলে কত শতাংশ ফি (School Fee) ছাড় দেওয়া হবে তা স্থির করবে শিক্ষক ও অভিভাবক প্রতিনিধিদের দ্বারা গঠিত কমিটি। বেসরকারি স্কুলের ফি বৃদ্ধি মামলায় সোমবার এই নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট (Kolkata High Court)।
প্রতিটি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকদের আর্থিক ও সামাজিক অবস্থান ভিন্ন। সেক্ষেত্রে সার্বিকভাবে ফি হ্রাসের কোনও নির্দেশ সেভাবে কার্যকরী নাও হতে পারে। সে কথা মাথায় রেখেই এবার এই সিদ্ধান্ত নিল বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য ডিভিশন বেঞ্চ। ফি-সংক্রান্ত সমস্যা মেটাতে সমস্ত বেসরকারি স্কুলগুলিকে আগেই কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল বেঞ্চ। সেখানে বলা হয়েছিল কমিটিতে স্কুলের প্রিন্সিপাল বা প্রধান শিক্ষক ছাড়াও তিনজন প্রবীণ শিক্ষক (Teachers) এবং তিনজন অভিভাবক (Parents) প্রতিনিধি থাকবেন। এদিন আদালত জানিয়েছে, কমিটিতে অভিভাবকদের তরফে যে প্রতিনিধিরা থাকবেন তাঁদের কোনওভাবেই মনোনীত করা চলবে না। বদলে একটি লটারির মাধ্যমে কমিটির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন প্রক্রিয়া সারতে হবে। সেক্ষেত্রে সমস্ত ক্লাসের ছাত্রদের অভিভাবক সেই লটারিতে অংশ নিতে পারবেন।
এছাড়াও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যর বিশেষ কমিটির কাছে স্কুলগুলিকে আয়-ব্যয় হিসাব দাখিল করতে বলেছিল আদালত। জানা গিয়েছে, বেশ কিছু স্কুল এখনও তাদের আয়-ব্যয়ের সংক্রান্ত তথ্য কমিটির কাছে জমা দেয়নি। সেইসব স্কুলগুলিকে শীঘ্রই মুখ বন্ধ খামে কমিটি ও আদালতে আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি শিক্ষক ও অভিভাবক প্রতিনিধিদের নিয়ে যে কমিটি গঠিত হবে সেখানে অভিভাবক প্রতিনিধিদের সামনে সেই হিসাব তুলে ধরতে বলেছে বেঞ্চ। কমিটি সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখে ও বিবেচনা করে ফি ছাড়ের হার নির্ধারণ করবে। এছাড়াও যেসব স্কুল আগেই ফি ছাড় দিয়েছে তাদের ক্ষেত্রে সেই ফি ছাড়ের অঙ্ক কতটা যুক্তিযুক্ত তা নির্ধারণ করবে শিক্ষক ও অভিভাবক প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত কমিটি। তবে আদালতের অনুরোধ, যেসব অভিভাবক পুরো ফি দিতে সমর্থ তাঁরা যেন পরিস্থিতির সুযোগ না নেন। এক্ষেত্রে অবশ্য আদালত আগেই জানিয়ে দিয়েছিল আগস্ট-সেপ্টেম্বরের ৮০ শতাংশ ফি আজ, মঙ্গলবার অর্থাৎ ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সকল অভিভাবককে মিটিয়ে দিতে হবে। স্কুল গেটের সামনে কোন ধারণা বা বিক্ষোভ চলবে না।
এদিকে, কলকাতার চার্চ অফ নর্থ ইন্ডিয়া (সিএনআই) পরিচালিত স্কুলগুলিকে বেশ কিছু ক্ষেত্রে অব্যাহতি দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল সিএনআই পরিচালিত স্কুল। এদিন মামলার নির্দেশে বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, যেসব সিএনআই পরিচালিত স্কুল শিক্ষক ও অভিভাবক প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি গঠন করবে তাদের আয় ব্যয় সংক্রান্ত তথ্য আদালত নির্ধারিত বিশেষ কমিটির কাছে পেশ করতে হবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.