মানিক ভট্টাচার্য। ফাইল ছবি
গোবিন্দ রায়: প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে দু বছরের সামান্য কম সময়ে জেলবন্দি ছিলেন পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার শর্তসাপেক্ষে কলকাতা হাই কোর্টে জামিন মিলেছিল। তবে বন্ড সংক্রান্ত বিষয়ে বেশ কিছু জটিলতা থাকায় জেলমুক্তি হয়নি। শুক্রবার সন্ধের পর জেল থেকে বেরলেন মানিক। আর বেরিয়েই তাঁর মুখে শোনা গেল সত্যের বাণী! বললেন, ‘সত্যমেব জয়তে’।
বৃহস্পতিবার মানিক ভট্টাচার্যের জামিন মঞ্জুর করার সময়ে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ চারটি শর্তের কথা জানিয়েছিলেন। সেসব মেনেই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়কের জেলমুক্তি হবে। হাই কোর্টের নির্দেশ ছিল, তদন্তকারী অফিসারের কাছে মানিকবাবুকে মোবাইল নম্বর দিতে হবে। নিম্ন আদালতে পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। কোনও সাক্ষীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা যাবে না বা তাঁদের প্রভাবিত করা চলবে না। তাঁদের হুমকি দেওয়া চলবে না। তদন্তকারী অফিসারের অনুমতি ছাড়া বাইরে যাওয়া চলবে না।
এসব মেনে বৃহস্পতিবার জেল থেকে বেরতে পারেননি তিনি। কারণ ছিল বিবিধ। জামিন মঞ্জুর হওয়ার নির্দেশের পর ওইদিন দুপুর দুটোয় মানিকের আইনজীবীরা এই বিষয়টি নিয়ে বিচারপতি ঘোষের এজলাসের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বিচারপতিকে জানানো হয়, দশ লক্ষ টাকার রেজিস্ট্রার বন্ড পেতে সমস্যা হবে। বিচারপতি ঘোষ তখন ১০ লক্ষের মধ্যে ৫ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ড এবং পাঁচ লক্ষ টাকার রেজিস্ট্রার বন্ডের নির্দেশ দেন। ভারচুয়ালি আদালতের কাছে মানিকবাবু আবেদন রাখেন, গোটাটাই যদি ব্যক্তিগত বন্ড করানো যায়। বিচারপতি সে আর্জি শোনেননি।
ঘড়ির কাঁটা তখন আড়াইটে পেরিয়েছে। নির্দেশে সই-সাবুদ ইত্যাদি করে আপলোড হতে আরও ঘন্টাখানেক পার হয়ে যাবে। ফলে সন্ধে গড়িয়ে গেলে জেল থেকে বেরনো কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই মানিকবাবু আবারও আর্জি জানান, যদি সইটা একটু তাড়াতাড়ি করা যায়! তা শুনে বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ বিরক্ত হয়ে চিৎকার করে বলেন, ”আদালতকে কাজ বোঝাবেন না। আদালতকে আদালতের কাজ করতে দিন।” আর কিছু বলেননি মানিক ভট্টাচার্য। তবে শুক্রবার সমস্ত নিয়ম মেনে অবশেষে জেল থেকে বেরতে পারলেন তিনি। আর বেরিয়েই বললেন, ‘সত্যমেব জয়তে’, অর্থাৎ সত্যের জয় হল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.