সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শহরবাসীর সমস্যা সমাধানে এবার অভিনব পদক্ষেপ কলকাতা পুরসভার। শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ডের সমস্ত বাসিন্দার যে কোনও সমস্যা সরাসরি জানানো যাবে মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে। অভিনব এই টক টু মেয়র পরিষেবা চালু হয়ে গেল বুধবার থেকেই। শহরবাসীর সমস্যার সমাধান খোদ মহানাগরিক শুরু করলেন ফোনের মাধ্যমে।
এবার থেকে মেয়রের কানে নিজের দাবি, চাহিদা বা অভিযোগ জানানোর জন্য আর পুরভবনে ছুটে যেতে হবে না। শুধু হাতে একটা ফোন থাকলেই মুহূর্তে পেয়ে যাবেন মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে। অকপটে জানাতে পারবেন পুর-পরিষেবা নিয়ে নিজের মতামতও। মেয়র অভিযোগ শুনে সঙ্গে সঙ্গেই সামনে বসে থাকা পুর অফিসারদের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেবেন। সাত দিন পরে অভিযোগের সমাধান হয়েছে কি না তা ওই নাগরিককে ফোন করে জেনে নেওয়া হবে। মেয়রের এই ‘টক টু মেয়র’ পরিষেবার জন্য কলকাতা পুরভবনে নয়া টোল ফ্রি ফোন নম্বর ১৮০০৩৪৫১২১৩ চালু হচ্ছে।
এমনিতেই সপ্তাহে সাতদিনই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে নানা কর্মসূচিতে ঘুরে বেড়ান মেয়র। কথা বলেন, সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গেও। স্বাস্থ্য সচেতনতা ও অ্যাসেসমেন্ট কর্মসূচি নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষও। যাচ্ছেন মেয়র পারিষদ ও কাউন্সিলররা। কিন্তু তবু এবার সরাসরি শহরবাসীর অভিযোগ নিজে কানে শুনতে চান মেয়র। কারণ, তাঁর কাছে অনেক অভিযোগ-ক্ষোভ ‘ফিল্টার’ করে আসছে বলে একাধিক ঘটনায় তিনি প্রমাণ পেয়েছেন। এমনকী লোকসভা ভোটে একাধিক ওয়ার্ডে হারের মূল কারণ পুরসভার পরিষেবা ও কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ। তৃণমূলেরই কিছু কাউন্সিলরের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ নিয়ে তাঁদের ওয়ার্ডের মানুষের অসন্তোষ ভোটে প্রতিফলিত হয়েছে। বস্তুত এই কারণে মেয়র সরাসরি যেমন সপ্তাহে এক ঘণ্টা করে ফোনের সামনে বসে থাকবেন। তেমনই আবার ১০০ নাগরিককে ফোন করে তাঁদের ক্ষোভ বা পরামর্শও রেকর্ড করবে। জেনে নেওয়া হবে ওই এলাকায় রাস্তা, পানীয় জল, নিকাশি, জঞ্জাল সাফাই থেকে শুরু করে পুরকর-মিউটেশন সংক্রান্ত পুরসভার পরিষেবা ঠিক আছে কি না। পার্ক ও সবুজায়ন থেকে সৌন্দর্যায়ন রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক আছে কি না তা জানা হবে।
ফোন কলের সমস্ত তথ্যও মেয়রের কাছে পেশ করার পাশাপাশি ব্যবস্থাও নেবেন পুর কমিশনার খলিল আহমেদ। মেয়র ফিরহাদ জানিয়েছেন, “সপ্তাহে প্রতি বুধবার বিকেল তিনটে থেকে এক ঘণ্টা ফোনের সামনে থাকব। সঙ্গে থাকবেন পুর কমিশনার, সমস্ত বিভাগের ডিজি, চিফ ইঞ্জিনিয়ার ও অফিসাররা। ফোন আসা মাত্রই তা যেমন রেকর্ড হবে, তেমনই লাউড স্পিকারে সামনে বসে থাকা সবাই শুনতে পাবেন। অভিযোগ শুনে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ৭ দিনে সমাধান না হলে ভারপ্রাপ্ত অফিসারকেই জবাব দিতে হবে।” গত জানুয়ারি মাসে মেয়র হিসাবে দায়িত্ব নিয়েই অভিযোগ জানানোর জন্য নিজের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর সাধারণ নাগরিককে দিয়েছিলেন ফিরহাদ। প্রতিদিন শতাধিক মেসেজ ও ছবি আসছে ওই হোয়াটসঅ্যাপে, নাগরিকদের তরফে মেসেজ আসার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.