Advertisement
Advertisement

পুজোয় টালা ব্রিজে বন্ধ বাস চলাচল, পরিস্থিতি সামলাতে আসরে মুখ্যমন্ত্রী

তবে ট্যাক্সি ও অ্যাপ ক্যাব চলবে।

Tala Bridge found 'unfit for use' in RITES report, CM arranges meeting

পুরনো টালা ব্রিজের ছবি

Published by: Bishakha Pal
  • Posted:September 26, 2019 2:29 pm
  • Updated:September 26, 2019 2:29 pm

দীপঙ্কর মণ্ডল: মাঝেরহাট সেতু কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে উত্তর কলকাতার কঙ্কালসার টালা ব্রিজে বাস-সহ সমস্ত ভারী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি হচ্ছে। উত্তর কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ এই সেতু শহরতলি-সহ উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়ার বিস্তীর্ণ অংশে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। এদিনের সিদ্ধান্তে পুজোর সময় দর্শনার্থী-সহ প্রচুর মানুষের সমস্যা হবে। সরকারি কর্তারা জানিয়েছেন, যে কোনও মুহূর্তে সেতুটি ভেঙে পড়তে পারে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার খাতিরেই ভারী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে টালা সেতুর ভগ্নদশার রিপোর্ট জমা পড়েছে। এই বিষয়ে শুক্রবার নবান্নে ফের বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যসচিব মলয় দে’র নেতৃত্বে বৈঠকে এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেতুটির বেহাল দশা। সেকথা মাথায় রেখে আগেই বাস বাদে ভারী যানে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। এদিন নবান্নে ঠিক হয়েছে পুজোর আগেই ‘হাইট বার’ বসানো হবে টালা ব্রিজের উপরে। কেন্দ্রীয় সংস্থা রাইটসের সমীক্ষা অনুযায়ী যেকোনও সময় বিপদ ঘটতে পারে এই সেতুতে। তা এড়াতেই ভারী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে সরকার। নবান্নে এদিন সমীক্ষা সংস্থা রাইটস, পূর্ত দপ্তর, কেএমডিএ, কলকাতা পুরসভা, কলকাতা পুলিশের কর্তারা হাজির ছিলেন।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: মোবাইলে এবার মিলবে না পুজোর খবর, বন্ধ হয়ে গেল লালবাজারের ‘উৎসব’ অ্যাপ ]

প্রসঙ্গত, গতবছর ৪ সেপ্টেম্বর মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ে। যার জেরে দক্ষিণ শহরতলির সঙ্গে যোগাযোগে প্রবল সমস্যা দেখা দেয়। বেইলি ব্রিজ তৈরি করে কিছুটা সামাল দেওয়ার ব্যবস্থা করে সরকার। টালা ব্রিজের যা অবস্থা তাতে যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে বলে মনে করছে রাইটস। এই ব্রিজের উপর দিয়ে উত্তর শহরতলির সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করা যায়। বাস ও মিনিবাস চলাচল বন্ধ হলে যাত্রীদের যে সমস্যা হবে তা বলাই বাহুল্য। বাস, মিনিবাস, লরি, ম্যাটাডর-সহ সমস্ত বড় গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে ট্যাক্সি, অ্যাপ ক্যাব চলবে। পুজোর সময় যাতে সাধারণ মানুষের অসুবিধা না হয় তা নিশ্চিত করবে পুলিশ। বিকল্প রাস্তায় বাস চালানো হবে। বাসের বিকল্প রুট ঠিক করবেন কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক কর্তারা।

নবান্নের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, নিরাপত্তার স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভারী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি না হলে হঠাৎ প্রবল বিপত্তি ঘটতে পারে। অন্যদিকে, এই সেতুর নিচে প্রায় দু’শো মানুষ থাকেন। তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করতে ‘হ্যাঙার’ তৈরি হবে। মেয়র তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, সেতুর নিচে যাঁরা আছেন তাঁদের ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। কাউকে উচ্ছেদ করা হবে না। 

[ আরও পড়ুন: হাতে স্মার্ট রেশন কার্ড? শপিং মলেও গেরস্থালির সামগ্রীতে মিলবে ছাড় ]

টালা সেতুর বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর ‘রাইটস’ সংস্থাকে সমীক্ষার দায়িত্ব দেয় রাজ্য সরকার। সমীক্ষার রিপোর্ট জমা দিয়েছে রাইটস। তারা ব্রিজ ভাঙার পরামর্শ দিয়েছে। দ্রুত ভাঙার কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। সমীক্ষা সংস্থা ‘রাইটস’ নিরাপত্তার খাতিরে উত্তরের যোগাযোগের এই গুরুত্বপূর্ণ সেতু ভেঙে নতুন করে গড়ার সুপারিশ করেছে। সেই মতো বুধবার রাইটস ছাড়াও গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স, রেল ও পূর্ত দপ্তরের আধিকারিক, ইঞ্জিনিয়াররা টালা ব্রিজ এলাকা ঘুরে দেখেন। নবান্নে এদিন এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা পড়ে। তারপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের পর থেকেই নিয়ম করে কলকাতা-সহ রাজ্যের একাধিক সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে তিন-চারদিন সেতু বন্ধ রাখতে হচ্ছে। চরম হয়রানির শিকার হচ্ছে আমজনতা। জানা গিয়েছে, ব্রিজের স্বাস্থ্যপরীক্ষায় এবার ব্যবহার করা হবে বিশেষ যন্ত্র। কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ সংস্থা রাইটস মোবাইল ব্রিজ ইউনিট নিয়ে পূর্ত দপ্তরের দক্ষিণ জোনের ৩২টি সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবে। তারাতলা ব্রিজ দিয়ে শুরু হয়েছে ‘হেলথ অডিট’। টালা সেতুর পর বেলঘরিয়া সেতু, বালি ব্রিজ, বারাকপুর সেতু, মধ্যমগ্রাম ব্রিজ, মোড়গ্রাম ব্রিজ ও মাতলা নদীর উপর সেতুরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে ‘মোবাইল ব্রিজ ইউনিট’ দিয়ে। এই ইউনিটের সুবিধা হল, গাড়িতেই ‘হাইড্রলিক প্রসেস ইউনিট’ আছে। গাড়ির মধ্যে থেকে হাতের মতো ক্রেন বেরিয়ে আসে। ক্রেনের সাহায্যে সেতুর যে কোনও জায়গার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা যায়। এই গাড়ি ব্যবহার করলে, সেতু বন্ধ রাখতে হয় না।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement