অভিরূপ দাস: স্বামী প্রভুপাদ, মোরারজি দেশাই আর তিনি একই দিনে জন্মেছিলেন। অন্য দু’জনের প্রয়াণের কয়েক যুগ পেরিয়ে গেলেও এখনও ঝকঝকে তরতাজা স্বামী শিবানন্দ মহারাজ (Shivananda Maharaj)। যোগার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য গত মার্চে পদ্মশ্রী (Padma Shri Award) সম্মানে ভূষিত হয়েছেন ১২৬ বছরের স্বামীজি। পুরস্কার গ্রহণের মঞ্চে তাঁকে হাতজোড় করে নমস্কার করেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendara Modi)। এবার দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সী পদ্ম পুরস্কার বিজয়ীকে নাগরিক সংবর্ধনা জানাবে শহর কলকাতা। আগামী বৃহস্পতিবার ২৩ জুন হবে ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।
তিলোত্তমার সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাগৃহ রবীন্দ্রসদনের (Ravindra Sadan) সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee)। বুধবার কলকাতার প্রেস ক্লাবে স্বামী শিবানন্দ মহারাজের বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন সঞ্জয় সর্বজ্ঞ, অসীম কৃষ্ণ পাইন, সুব্রত ঘোষ এবং স্বামীজির চিকিৎসক ডা. সুভাষ চন্দ্র গড়াই। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. গড়াই জানিয়েছেন, দিনে দুটো রুটি, একমুঠো ভাত, একবাটি ডাল আর সবজি সেদ্ধ খেয়েই দিব্যি সুস্থ রয়েছেন স্বামীজি।
চিকিৎসকের কথায়, “গত ত্রিশ বছর ধরে ওঁকে দেখছি। একই রকম রয়ে গিয়েছেন।” স্বামীজি অত্যন্ত প্রচারবিমুখ। নিজের আশ্রম খুলতে চান না। অসমের এক ব্যক্তি তাঁকে ১ লক্ষ টাকা নগদ এবং জমিজমা দিয়ে আশ্রম খুলতে অনুরোধ করেছিলেন। সুব্রত বাবুর বলেন, “খবর পেয়েই অবিলম্বে টাকা ফেরত দিতে বলেছেন স্বামীজি। পদ্মশ্রী পুরস্কার সমন্ধেও জানতেন না। আবেদনও করেননি পাওয়ার জন্য। গত ২৫ জানুয়ারি তাঁর বেনারস আশ্রমে প্রধানমন্ত্রী অফিস থেকে প্রথম ফোন আসে- আমরা ওঁনাকে পুরস্কার দিতে চাই। উনি কি গ্রহণ করবেন?” কি জানিয়েছিলেন স্বামীজি? শান্তুনু সর্বজ্ঞর কথায়, “স্বামীজির প্রথম উক্তি ছিল, মধু যেখানে আছে মৌমাছি একদিন না একদিন সেখানে আসবেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমায় খুঁজে পেয়েছেন।”
পদ্ম পুরস্কার পাওয়ার পরেই বারাণসীর কবীর নগরের ১২৬ বছরের বাঙালি ‘মহাপুরুষ’কে নিয়ে দেশজুড়ে চর্চা চলছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে মন কি বাত-এ স্বীকার করেছেন, দেশ তথা বিশ্বের সবার কৌতূহল প্রবীণতম এই মানুষটিকে নিয়ে। সবাই স্বামীজির দীর্ঘায়ু লাভের রহস্য জানতে চান। উল্লেখ্য ক’দিন আগে নেতাজিকে নিয়ে মন্তব্য করে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন স্বামীজি। বলেছিলেন, ‘আমি বেঁচে থাকলে নেতাজি কেন নয়?’ যা শুনে ভারতবাসীর মনে জ্বলে উঠেছিল আশার ঝাড়বাতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.