ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: একুশের লড়াইকে সামনে রেখে খোলনলচে বদলে ফেলা হয়েছে রাজ্যের শাসকদলের। তৈরি হয়েছে বাছাই করা ২১ জনের সমন্বয় কমিটি (Co-ordination Committee)। শনিবার তৃণমূল ভবনে ছিল সেই নতুন কমিটির প্রথম বৈঠক, একেবারে মুখোমুখি বসে। কিন্তু সেখানে ছিলেন না দলের একনিষ্ঠ ও নির্ভরযোগ্যতার নিরিখে একেবারে প্রথম সারির সৈনিক শুভেন্দু অধিকারী। ছিলেন না আরও তিনজন। তবে শুভেন্দুর অনুপস্থিতি নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। যদিও সমস্ত জল্পনায় জল ঢেলে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাফ জানিয়েছেন, শুভেন্দু অধিকারী অন্য কাজে ব্যস্ত, তাই বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি। তবে কমিটির সঙ্গে সবরকম সমন্বয় রেখেই কাজ করছেন তিনি।
করোনা আবহে এই প্রথম তৃণমূল ভবনে বৈঠক হল মুখোমুখি, ভারচুয়াল নয়। একসঙ্গে ২১ জনের বসার কথা ছিল। কিন্তু শনিবারের বৈঠকে দেখা গেল চারজন গরহাজির – শুভেন্দু অধিকারী, দেবু টুডু, মৃগাঙ্ক মাহাতো, হিতেন বর্মন। এঁদের মধ্যে বর্ধমানের নেতা দেবু টুডু নিজে করোনা আক্রান্ত। তাই তাঁর বৈঠকে যোগ দেওয়ার প্রশ্নই নেই। বাকি তিনজন নিজেদের এলাকায় সংগঠনের কাজে ব্যস্ত, তাই আসতে পারেননি বলে জানালেন সমন্বয় কমিটির অন্যতম প্রধান তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে হিতেন বর্মন বা মৃগাঙ্ক মাহাতোর সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর অনুপস্থিতিকে এক করে দেখার ব্যাপারটা মানতে নারাজ রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তাহলে কি গোড়া থেকেই এই সমন্বয় কমিটির সঙ্গে সংঘাত তৈরি হল তাঁর? এই প্রশ্ন উঠছে আনাচেকানাচে। নইলে তো নতুন কমিটির প্রথম বৈঠকে এত গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের থাকারই কথা।
এদিনের বৈঠকে আরও একজনের নীরব উপস্থিতি নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor)। অন্দরের খবর, তিনি শনিবারের বৈঠকে অংশ নিলেও আগাগোড়া নিশ্চুপ ছিলেন, কোনও কথা বলেননি। কিন্তু কেন? যাঁর পরামর্শ মেনে প্রতিটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তৃণমূল সুপ্রিমো, নতুন সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠকে তিনি কেন নীরব? তিনিই তো কমিটিকে দিকনির্দেশ করবেন, এমনইটাই হওয়ার কথা। এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, আসলে পিকে নিজেও বুঝে নিতে চাইলেন নতুন কমিটি কীভাবে এগোতে চায়। সেই বুঝে তিনি তাঁর কৌশল ঠিক করবেন। তাই এদিন পিকে ছিলেন স্রেফ শ্রোতার ভূমিকায়।
এদিনের বৈঠকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং সুব্রত বক্সি অর্থাৎ দলের দুই বর্ষীয়ান, অভিজ্ঞ নেতা, যাঁদের সামনে রেখে এই ২১ জনের কমিটি গড়েছেন মমতা, তাঁরা সকলকে স্পষ্ট করে দিলেন একটাই কথা। নিজের নিজের দায়িত্ব সামলাতে হবে, অতি সক্রিয়তা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। নেওয়া যাবে না কোনও সিদ্ধান্তও। এখন থেকে দলের সমস্ত সিদ্ধান্ত নেবে এই ২১ জনের সমন্বয় কমিটি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.