সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রামপুরহাট কাণ্ডে (Rampurhat Clash) চড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। বিস্ফোরণে তৃণমূল উপপ্রধানের মৃত্যু এবং তারপর বগটুই গ্রামে একের পর এক বাড়িতে অগ্নিসংযোগে ১০ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু। কীভাবে ঘটল এই ঘটনা? নেপথ্যে কারা? পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার আগেই এই ঘটনার রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে আসরে নেমে পড়ল বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, ‘তৃণমূল (TMC) নিজেদের ঝামেলায় এতগুলো মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে।’ একই অভিযোগ সিপিএমেরও (CPIM)। পালটা অবশ্য এসেছে শাসক শিবির থেকেও। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, এই ঘটনায় রাজনীতির কোনও যোগ নেই। তবে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
রামপুরহাটের ঘটনা নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) রীতিমতো আক্রমণাত্মক। এই ঘটনাকে ‘গণহত্যা এবং গণদাহ’ হিসাবে বর্ণনা করে সিবিআই এবং এনআইএ তদন্ত দাবি করেছেন তিনি। রামপুরহাট কাণ্ডের প্রতিবাদে এদিন বিধানসভায় ওয়াক আউট করে বিজেপি। দলের বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে সুর চড়িয়ে শুভেন্দু বলেন,”তৃণমূল নিজেদের ঝামেলায় ১০-১২টা লোককে পুড়িয়ে মারল। এটা একটা গণহত্যা-গণদাহ। উপপ্রধানের মৃত্যু হয়েছে বিস্ফোরণে। তারপর আগুন লাগানো হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় এনআইএ (NIA) এবং আগুন লাগানোর ঘটনায় আমরা সিবিআই তদন্ত দাবি করছি।” এই ঘটনায় কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা। সেই সঙ্গে পুলিশমন্ত্রী অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) পদত্যাগও চেয়েছেন শুভেন্দু। তাঁর সাফ কথা, যতদিন না এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, ততদিন বিধানসভায় বিক্ষোভ দেখাবে বিজেপি বিধায়করা। বুধবার ৫০ জন বিধায়ককে নিয়ে রামপুরহাটের (Rampurhat) ঘটনাস্থলে যাবেন শুভেন্দু নিজে।
[আরও পড়ুন: ‘প্রশান্ত কিশোর টাকার জন্য কাজ করেন না’, চুক্তি পাকা করেই দাবি তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীর]
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আবার আরও একধাপ এগিয়ে গিয়ে বলেছেন, “রাজ্য ৩৫৬ ধারার দিকে এগোচ্ছে।” সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও এদিন অনেকটা একই সুরে কথা বলেছেন। তাঁর বক্তব্য, “বিরোধী শূন্য করতে গিয়ে এবার নিজেদেরই মারছে তৃণমূল।” যদিও এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে তৃণমূল। শাসকদলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেছেন,”আমরা শুরু থেকেই বলছি, এই ঘটনায় রাজনীতির কোনও যোগ নেই। কিন্তু বৃহত্তর কোনও ষড়যন্ত্র এর নেপথ্যে রয়েছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখা উচিত তদন্তকারীদের। যারা রাজ্যে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চাইছে, যারা রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানাচ্ছে, তারা এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করছে কিনা সেটাও তদন্ত করা উচিত।”
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী আশিস চট্টোপাধ্যায় এবং ফিরহাদ হাকিম। তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলও ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। বিশেষ তদন্তকারী দল অর্থাৎ সিট ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্যও ঘটনাস্থলে যাবেন বলেই পুলিশ সূত্রের খবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.