অর্ণব আইচ: পাকিস্তানে আইএসএআইয়ের (ISI) এক কর্তাকে সিমকার্ডের ওটিপি ‘বিক্রি’ করেছিল পাক চরদের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ধৃত এজেন্ট। ভক্ত বংশী ঝা নামে ওই অভিযুক্ত পাক চরদের এজেন্টের ওটিপি (OTP) বিক্রির চক্রের সঙ্গে আরও অন্তত পাঁচজন যুক্ত রয়েছে বলেই খবর পেয়েছেন গোয়েন্দারা। গত তিন মাস ধরে হাওড়া ও কলকাতায় তার নেটওয়ার্কেরও সন্ধান চলছে।
পাক (Pakistan) চর সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের (STF) হাতে গ্রেফতার হয়েছে ভক্ত বংশী ঝা। পুলিশ জানিয়েছে, ভক্ত নামে ওই যুবকের মোবাইল থেকে প্রচুর ছবি ও ভিডিও উদ্ধার হয়েছে। মূলত সেনা ও আধাসেনাদের শিবিরের ওই ভিডিও ও ছবিগুলি পাকিস্তানে পাচার করা হয় বলে অভিযোগ। তাকে জেরা করে আরও বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে এসটিএফের গোয়েন্দাদের হাতে।
জানা গিয়েছে, চরবৃত্তির সঙ্গে সঙ্গে ওটিপি বিক্রির চক্রও চালাত সে। তার সঙ্গে আরুশি শর্মা নামে এক মহিলার যোগাযোগ হয় সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media)। ওই মহিলাই তাকে ‘হানিট্র্যাপে’ (Honey Trap) ফেলে। নিজেকে পাঞ্জাবের বাসিন্দা বলে পরিচয় দিলেও আরুশি যে তার আসল নাম নয় ও সে যে আসলে পাকিস্তানি, সেই ব্যাপারে গোয়েন্দারা অনেকটাই নিশ্চিত।
গোয়েন্দারা জেনেছেন, ওই মহিলাই সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ঘনিষ্ঠতা’র সময় ভক্তর কাছ থেকে সিমকার্ডের ‘ওটিপি’ চায়। ওই ‘ওটিপি’র মাধ্যমেই নতুন নতুন নম্বরে হোয়াটস অ্যাপ খোলার ছক কষে আইএসআই। সেইমতো ভক্ত চারটি প্রি অ্যাকটিভেটেড তথা ভুয়া সিমকার্ডের ওটিপি পাঠিয়ে দেয় ওই মহিলাকে। যদিও ভক্ত গোয়েন্দাদের কাছে চারটি ওটিপি পাঠানো বা বিক্রির কথা স্বীকার করলেও গোয়েন্দাদের ধারণা, আরও অনেকগুলি ওটিপি পাকিস্তানে পাঠিয়েছে ভক্ত। কারণ, প্রি অ্যাকটিভেটেড সিমকার্ডের জন্য দিল্লি ও কলকাতার আরও কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সে। তাদের কাছ থেকে পাকিস্তানে ওটিপি পাচারের জন্য যে সিমকার্ডগুলি ভক্ত জোগাড় করে, সেগুলি ভুয়ো নামের বলেই গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন।
এই ভুয়ো সিমকার্ড চক্রে ভক্তর যারা সহযোগী, গোয়েন্দারা তাদেরও সন্ধান চালাচ্ছেন। এদিকে, আরুশি নামে যে মহিলাটি ভক্তকে সোশ্যাল মিডিয়ায় হানিট্র্যাপে ফেলে, সে পাক নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও ভারতীয় সিমকার্ড ব্যবহার করেই নিজেকে ভারতীয় (Indian)বলে পরিচয় দেয়। গোয়েন্দাদের মতে, ওই সিমকার্ডগুলি ব্যবহার করে আরও কয়েকজনকে হানিট্র্যাপ করা হয়েছে। তার জন্য আইএসআই কয়েকজন পাক মহিলাকে কাজেও লাগাচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.