কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: করোনা সংক্রমণ রুখতে দেশের চতুর্থ দফা লকডাউন সবে খানিকটা শিথিল হয়েছে। সেটুকু উপভোগ করার আগেই জাঁকিয়ে বসল অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফানের আতঙ্ক। আর তা থেকে বাঁচতে রাজ্য প্রশাসনের ঘোষণা, বুধবার দিনভর বাড়ির বাইরে বেরবেন না। ব্যস, তাতেই কার্যত সুপার লকডাউনের চেহারা নিল উপনগরী সল্টলেক ও সংলগ্ন এলাকা। অত্যন্ত প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাড়ির বাইরে দেখলেই কার্যত বাড়িতে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। দুপুর ১২টার পর থেকে তাই সল্টলেকের পথঘাট একেবারে শুনশান।
আমফানের দাপট হবে আগের যে কোনও ঘূর্ণিঝড়ের চেয়ে বেশি। আবহাওয়াবিদদের হিসেব অনুযায়ী, কলকাতায় তা প্রবেশের সময় গতিবেশ থাকবে ১৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। তাই বিধ্বংসী ঝড়ের হাত থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে ঘরে থাকাই নিরাপদ। তাই রাজ্যবাসীকে তেমনই পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো নজরদারি কাজও শুরু করেছে পুলিশ। আজ বেলার দিকে সল্টলেকে দেখা গেল, কাউকে রাস্তায় দেখলেই পুলিশ রীতিমত জেরা করছে। প্রয়োজন সত্যিই কতটা, তা বুঝে নেওয়ার পরই তাঁকে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। আর পুলিশ যেখানেই বুঝছে, নেহাৎই অজুহাতে কেউ বেরিয়েছেন, তাকে সটান বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসনের নির্দেশে এতটাই সক্রিয় পুলিশ।
এছাড়া এদিন সল্টলেকের মূল প্রবেশপথের মোট সাতটি গেটের অধিকাংশটাই বন্ধ। জরুরি প্রয়োজনের কথা ভেবে খোলা রয়েছে কয়েকটি। বিধাননগর পুরনিগমের ৬ টি ওয়ার্ড এলাকায় ঝুঁকি থাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে কয়েকজন সরিয়ে নেওয়া হয়েছে আশ্রয় শিবিরে। বিমানবন্দর, নারায়ণপুর ছাড়াও বিধাননগরের চার থানা- উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব এবং লেদার কমপ্লেক্স এলাকায় বাড়তি নজরদারি রয়েছে পুলিশের। নজরদারির বাইরে নেই লেকটাউন, বাগুআটি, নিউটাউন, ইকো পার্ক, টেকনো অঞ্চলও।
অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় মঙ্গলবারই বিশেষ কন্ট্রোল রুম খুলেছে বিধাননগর পুরনিগম। আগামী ২২ মে সকাল আটটা পর্যন্ত সেখান থেকেই নজরদারির কাজ চলবে বলে পুরনিগমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। দুর্যোগ পরিস্থিতিতে কোনও সমস্যা হলে ২৩৫৮-১১৫৩ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবেন বাসিন্দারা। বিধাননগর পুরভবন ছাড়াও সল্টলেক এবং রাজারহাট স্ট্যাক ইয়ার্ড, ১১ নং ট্যাঙ্ক-সহ প্রত্যেকটি বরো অফিসে স্থানীয়ভাবে কন্ট্রোল রুম খোলা থাকছে। পুরসভার আধিকারিক থেকে কর্মী সকলেই এখানে থাকবেন। ঝড় পরবর্তী পরিস্থিতিতে উদ্ধার কাজ, পড়ে যাওয়া গাছ- ল্যাম্প পোস্ট সরানোর কাজ যাতে দ্রুত করা যায়, তার জন্য সকলে প্রস্তুত। বরো চেয়ারম্যান-সহ কাউন্সিলরদের নিজ নিজ এলাকায় নজর রাখতে বলা হয়েছে। জরুরি বিভাগের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বিধানননগর পুরনিগমের সংযোজিত রাজারহাট-গোপালপুর অংশের দিকে বাড়তি নজর রাখা হবে বলে জানা গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.