বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত ও রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়, কলকাতা ও নয়াদিল্লি: বিধানসভা নির্বাচনে পর্যুদ্স্ত হওয়ার পর থেকেই বঙ্গ বিজেপির জনবিচ্ছিন্নতা কাটছে না। তাই জনসংযোগ বাড়াতে শারদোৎসবকে সামনে রেখে হেভিওয়েট নেতাদের বাংলায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা গেরুয়া শিবিরের। তবে ভরসা সেই অমিত শাহ (Amit Shah) ও জে পি নাড্ডারা (JP Nadda)। সল্টলেকের ইজেডসিসিতে দলের পক্ষে আয়োজিত পুজোতে যেতে পারেন অমিত শাহ। বিশেষ ‘চমক’ থাকছে এই পুজোয়। এবার পুজো করবেন সুলতা মণ্ডল নামে এক মহিলা। তঁাকেই পুজোর প্রধান পুরোহিতের ভূমিকায় দেখা যাবে।
এপ্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মত, দেশের সংবিধান রক্ষায় যখন একজন আদিবাসী মহিলার উপর মানুষ ভরসা রাখতে পারেন, তখন সুলতা পুরোহিতের দায়িত্ব সামলাবেন এতে অবাক হওয়ার মতো কিছু নেই। এছাড়াও পঞ্চমীতে মহানগরের একটি বড় পুজোর উদ্বোধনে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। আবার সপ্তমীতে সল্টলেকের বিজে ব্লকের পুজোয় হাজির হতে পারেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি নাড্ডা।
আসলে বিধানসভা নির্বাচনে পর্যুদ্স্ত হওয়ার পর থেকেই বঙ্গ বিজেপির জনবিচ্ছিন্নতা কাটছে না। তাই জনসংযোগ বাড়াতে শারদোৎসবকে সামনে রেখে হেভিওয়েট নেতাদের বাংলায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা গেরুয়া শিবিরের। তবে ভরসা সেই অমিত শাহ ও জে পি নাড্ডারা। দলের দুই হেভিওয়েট নেতা পুজোয় কলকাতায় যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করায় প্রবল উৎসাহে ময়দানে নেমে পড়েছেন বঙ্গ বিজেপির (BJP) নেতারা। মহালয়ার দিন শহরে যাওয়ার কথা পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল ও মঙ্গল পাণ্ডের। তঁারা পরিস্থিতি দেখে দিল্লিতে রিপোর্ট দেওয়ার পরেই শাহ ও নাড্ডার পুজো সফর চূড়ান্ত হবে বলে সূত্রের খবর।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, বিজেপির দুর্গাপুজোয় অমিত শাহ আসবেন বলে যা শোনা যাচ্ছে, প্রমাণিত হচ্ছে যে বিজেপি নেতাদের পাড়ায় পাড়ায় গ্রহণযোগ্যতা নেই। হল ভাড়া করে পুজো করতে হচ্ছে। বিজেপি পাড়ায় মেশে না। কোনও কাউন্সিলরের পুজোয় এলে তো অবাধ গণতন্ত্র। দলবদলে যাওয়া, তৎকাল বিজেপির পুজোয় যাচ্ছেন। হল ভাড়া করে পুজোয় যঁার নামে সংকল্প ছিল, তিনি এখন তৃণমূলে।
বাংলায় শারদোৎসব জনসংযোগের অন্যতম মাধ্যম। সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছে না বিজেপি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পুজোর সময় মণ্ডপে হাজির হলে রাজ্যবাসীর নজর কেড়ে নেওয়া যাবে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা। এদিকে, পুজো নিয়ে বিজেপিতে মন কষাকষি তুঙ্গে। গত দু’বছর বিজেপির দুর্গা পুজোর যাবতীয় দায়িত্ব সামলেছে দলের সাংস্কৃতিক সেল। প্রথম বছর ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়কে দিয়ে নাচের অনুষ্ঠান করিয়েছিল তারা। এ বার তাদের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা না করেই পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে। তাতেই বেজায় চটেছে রুদ্রনীল ঘোষের সাংস্কৃতিক সেলের সদস্যরা। তারা বুধবার এই বিষয়ে চিঠি লিখেছে সুকান্ত মজুমদারকে। এ ছাড়াও এ বারের পুজো থেকে বাদ পড়েছেন পুরনোদের অনেকেই। তা নিয়েও দলের অন্দরে যথেষ্ট ক্ষোভ আছে।
পুজোয় সবাইকে শামিল করা হচ্ছে না কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পুজোর দায়িত্ব এবার তুলে দেওয়া হয়েছে উত্তর কলকাতা যুব মোর্চা এবং মহিলা মোর্চার উপর। শেষ দু’বছর বিজেপির পুজোর সংকল্প করেছিলেন রাজ্যনেতা প্রতাপ বন্দে্যাপাধ্যায়। তাঁকেও এবার বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে বিজেপির ইজেডসিসি-র পুজো নিয়ে দলের মধ্যে মন কষাকষি ও কোন্দল চরমে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.