ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: রবিবার ১৩ দিনে পড়ল অনশন। আন্দোলন করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বেশ কয়েকজন। অথচ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে অচলাবস্থা নিয়ে সরকারের কোন হেলদোল নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী। চিঠি তিনি লিখেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সভা প্যান্ডেল ভেঙে যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের দেখতে মেদিনীপুর হাসপাতালে আপনি যেতে পারলেন। অথচ কলকাতা শহরে মেডিক্যাল কলেজে টানা অনশনরত ছাত্রদের সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ দেখালেন না। এটা অবশ্যই হতবাক করেছে।’
[সৌমিত্রর পর তসলিমা, মেডিক্যাল কলেজের অনশনরত পড়ুয়াদের পাশে লেখিকা]
অনশন করেই প্রবেশিকার ফেরানোর দাবি আদায় করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। কিন্তু, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে অচলাবস্থা কী কাটবে? রবিবার ১৩ দিনে পড়ল ডাক্তারির ছাত্রদের অনশন। অসুস্থ বেশ কয়েকজন। আন্দোলনকারীদের কাছে পাশে দাঁড়িয়েছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও তসলিমা নাসরিনের মতো ব্যক্তিত্ব। পড়ুয়াদের দাবি শুনতে না চাওয়া প্রশাসন ও মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে ‘অমানবিক’ বলে মন্তব্য করেছেন ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা। মেডিক্যালের পড়ুয়াদের দাবি মেনে নেওয়ার আরজি জানিয়েছেন বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা। বস্তুত, তসলিমা নাসরিন নিজেও পেশায় চিকিৎসক। উদ্বিগ্ন রাজনৈতিক মহলও। অনশনকারীদের সঙ্গে দেখা করেছেন সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী। আর এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখলেন তিনি।
এ রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই অধীনে, চিঠিতে সেকথা উল্লেখ করেছেন সুজন চক্রবর্তী। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে যাদবপুরের বিধায়ক লিখেছেন, ‘কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অনশনরত ছাত্রদের সম্পর্কে আপনি নিশ্চয়ই ওয়াকিবহাল। সুপ্রাচীন এই মেডিক্যাল কলেজে জয়েন্ট এন্ট্রাসের মাধ্যমে ছাত্রদের ভরতি নেওয়া হয়। তাঁদের যথাযথ হস্টেলের দাবি অবশ্যই ন্যায়সঙ্গত। একতরফা কোনও মনোভাবের পরিবর্তে গণতান্ত্রিক মনোভাবে একটি সর্বসম্মত সুষ্ঠু নীতি ও পদ্ধতি অবলম্বন করেই এধরণের সমস্যার সমাধান অবশ্যই সম্ভব।’ মেডিক্যাল কলেজে অচলাবস্থা কাটাতে মুখ্যমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করার আবেদন জানিয়েছেন বাম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী।
নতুন হস্টেল চাই। এই দাবিতে অনশনে বসেছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা। অনশনকারীদের দাবি, এখন যে হস্টেলে তাঁরা থাকেন, সেই হস্টেলটির বেহাল দশা। কার্যত প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে থাকতে হয়। আগের অধ্যক্ষ নতুন ভবনে হস্টেলের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্ত, তা বাস্তবায়িত হয়নি। এদিকে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের পালটা দাবি, এমসিআইয়ের নিয়মে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের সঙ্গে সিনিয়রদের রাখা যাবে না। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করে অনশন প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছিলেন খোদ অধ্যক্ষ উচ্ছল ভদ্র। কিন্তু, তাতেও কোনও লাভ হয়নি। দাবি না মেটা পর্যন্ত অনশন চলবে বলে জানিয়েছেন পড়ুয়ারা।
[ অনশনরত মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ালেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.