গৌতম ব্রহ্ম: এবার মুম্বই থেকে উড়ে এল হার্ট। শহরে ফের সফল হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন। মঙ্গলবার রাতে ইএম বাইপাস লাগোয়া বেসরকারি হাসপাতালে এক রোগীর শরীরে হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করলেন চিকিৎসকরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই মহিলার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। এনিয়ে অষ্টমবার সফল হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের সাক্ষী থাকল তিলোত্তমা।
দমদমের বাসিন্দা অনুষা অধিকারী। বয়স, ৪৩ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে ইএম বাইপাস লাগোয়া শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি তিনি। পরিবারের লোকের জানিয়েছেন, হৃদযন্ত্রের গুরুতর অসুখে ভুগছিলেন অনুষা। হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। হৃদযন্ত্রের খোঁজ চলছিল অনেকদিন ধরেই। শেষপর্যন্ত মঙ্গলবার রাতে মুম্বই থেকে কলকাতা বিমানবন্দর নামে ক্যাসকেড বক্সবন্দি হার্ট। বিমানবন্দর থেকে গ্রিন করিডর তৈরি করে ১৮ কিমি দূরে বাইপাসে বেসরকারি হাসপাতালে হৃদযন্ত্রটি আনতে সময় লাগে ১৬ মিনিট ২০ সেকেন্ড। রাতেই কার্ডিওথোরাসিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন তাপস রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে অনুষা অধিকারী শরীরের হৃদযন্ত্রটি প্রতিস্থাপন করেন চিকিৎসকরা। এখন ভাল আছেন বছর তেতাল্লিশের ওই মহিলা। তাঁকে ভেন্টিলেশন রাখা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
মুম্বই থেকে যে হৃদযন্ত্রটি এসেছে, তার মালিক এক ১৬ বছরের কিশোর। দুর্ঘটনায় তার ব্রেন ডেথ হয়। মুম্বইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে হৃদযন্ত্রটি সংরক্ষণ করেন চিকিৎসকরা। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও জাতীয় অঙ্গ প্রতিস্থাপন সংগঠন নোটোর সবুজ সংকেত মিলতেই হার্ট কলকাতায় আনার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। বস্তুত, খাস কলকাতায় হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্টের লাইসেন্স আছে, এমন হাসপাতালের সংখ্যা কম নয়। কিন্তু প্রতিস্থাপনে গতি না আসার জন্য অঙ্গের আকালকেই দায়ি করছেন চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, অঙ্গ পেতে গেলে তো রোগীর ব্রেন ডেথ ঘোষণা হওয়া জরুরি। কিন্তু এ তল্লাটে রোগীকে ব্রেন ডেথ ঘোষণার করারই রেওয়াজ নেই। গত বছর কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রথমবার সফলভাবে হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করেছিলেন চিকিৎসকরা। নেতৃত্ব ছিলেন কার্ডিওথোরাসিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জেন তাপস রায়চৌধুরী। সেবার বেঙ্গালুরু থেকে উড়ে আসা হার্ট বসেছিল ঝাড়খণ্ড দিলচাঁদ সিংয়ের শরীরে। মঙ্গলবারও দমদমের অনুষা অধিকারীর শরীরে ফের হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করলেন তিনি। এই নিয়ে অষ্টমবার শহরে সফল হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের ঘটনার সাক্ষী রইল এই শহর৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.