ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ‘দু’ পয়সার প্রেস’ – দিন দুই ধরে এ নিয়ে শোরগোল সংবাদমাধ্যমে। রবিবার নদিয়ার গয়েশপুরে দলীয় কর্মিসভায় দলেরই একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়ে মেজাজ হারিয়ে সাংবাদিকদের এই ভাষায় গালিগালাজ করেছিলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র (Mohua Moitra)। কথা যে তিনি একেবারেই ভুল বলেননি, তাতে অনড় থেকেই দায়সারাভাবে ক্ষমাপ্রকাশ করেছিলেন টুইটে। তারপর থেকেই তাঁকে বয়কটের ডাক সংবাদমাধ্যমের একাংশের। এই অবস্থায় অবশ্য দলের তরুণ, তথাকথিত নির্ভরযোগ্য সাংসদের মন্তব্যের দায় নিচ্ছে না দল। পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় সাফ জানালেন, ”এটা ওর ব্যক্তিগত কথা। দলের কথা নয়।”
সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে তৃণমূলের কী সম্পর্ক, তার বিশদ ব্যাখ্যা দিয়েই সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee) পরোক্ষে মহুয়া মৈত্রের বিরোধিতা করেছেন। অভিজ্ঞ রাজনীতিকের কথায়, ”সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে সাংবাদিকদের সঙ্গে সুসম্পর্কে বিশ্বাসী। আমরাও তাই বিশ্বাস করি। তাই সাংবাদিকদের প্রতি এমন মন্তব্য শুনে খারাপ লাগছে। তবে একটা কথা বলতে পারি। এটা ওর ব্যক্তিগত কথা, দলের নয়। আমরা প্রেসের সঙ্গে হৃদ্যতা রেখে চলি। তারা আমাদের বিরুদ্ধে লিখলেও রাখি।” প্রায় একই বক্তব্য দলের আরেক নেতা তথা সাংবাদিক কুণাল ঘোষের। একজন সাংবাদিক হয়ে মহুয়া মৈত্রর মন্তব্যের যে ঘোরতর বিরোধিতা তিনি করবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ”কোনও পেশাকে তিনি ছোট করতে পারেন না। অন্তর থেকে ক্ষমা চাওয়া উচিত মহুয়ার।”
দলের দুই দুঁদে নেতার বক্তব্যেই দলের অবস্থান স্পষ্ট। মেজাজ হারিয়ে মহুয়া মৈত্রর সংবাদমাধ্যমের প্রতি এহেন ভাষা প্রয়োগ মোটেও ভালভাবে দেখছে না দল। এই মন্তব্যে দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। যদিও দলের এই অবস্থানকে মহুয়া মৈত্র কতখানি গুরুত্ব দেবেন এবং আদৌ তিনি সাংবাদিকদের প্রতি অন্তর থেকে ক্ষমা চাইবেন কি না, তা নিয়ে ঘোর সংশয়। কারণ, ঘটনার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরও যাঁর মনে হয়, তিনি ‘সঠিক’ কথাই বলেছেন, তাঁর বোধোদয় কি আদৌ সম্ভব? এই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি এখনও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.