দীপঙ্কর মণ্ডল: হাজিরা সংক্রান্ত পড়ুয়াদের হাঙ্গামার বিরাম নেই। শনিবার সাউথ সিটি গ্রুপের শিবনাথ শাস্ত্রী কলেজে হাজিরা সংক্রান্ত বিক্ষোভ দেখা গেল। আবশ্যিক ন্যূনতম হাজিরার বালাই নেই। তা সত্ত্বেও পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে। এই অযৌক্তিক দাবি নিয়ে ইতিমধ্যে হেরম্বচন্দ্র, গুরুদাস-সহ বিভিন্ন কলেজে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে। এদিন সকালে শিবনাথ শাস্ত্রীর ছাত্রীরা অধ্যক্ষকে ঘিরে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। অধ্যক্ষ চলে যাওয়ার পরে কলেজের গেটের সামনে তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়। সাউথ সিটির এই ক্যাম্পাসে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন আছে। চলতি পরীক্ষার মরশুমে কলেজে কলেজে নজিরবিহীন নৈরাজ্য চলছে। যা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় চিন্তিত। তিনি ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, উপস্থিতি নিয়ে কোনও বেনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শহরের কয়েকজন কলেজ অধ্যক্ষর সঙ্গে শনিবার বৈঠক করবেন পার্থবাবু।
[উপস্থিতি কম থাকায় পরীক্ষায় বসতে বাধা, ধুন্ধুমার কাণ্ড সাউথ সিটি কলেজে]
শুক্রবার হাজিরা আন্দোলনের জের নেমে এসেছিল রাজপথে। পথ অবরোধেও কসুর করেননি ‘আন্দোলনকারী’রা। যা দেখে বিস্ময় ছড়িয়েছে শিক্ষামহল থেকে প্রশাসনের সর্বত্র। কলেজ স্ট্রিটে খাস কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেও অন্যায্য আবদারের জুলুম চোখ রাঙিয়েছে। যাঁদের ৬০ শতাংশ হাজিরা নেই তাঁরা পরীক্ষায় বসার ছাড়পত্র পাননি। নিষেধাজ্ঞা বাতিলের জন্য গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন কলেজের ভিতরে বিক্ষোভ চলছে। ঘটনা হল, চলতি বছরে স্নাতকে সিবিসিএস (চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম) চালু হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় বছরে দু’বার সেমেস্টার পরীক্ষা হয়। পরীক্ষায় বসতে হলে নূ্যনতম ৬০ শতাংশ উপস্থিতি থাকতে হয়। যাঁরা আন্দোলন করেছেন, তাঁদের এই ন্যূনতম উপস্থিতি নেই। বস্তুত চলতি পরীক্ষার মরশুমের গোড়া থেকেই হাজিরা-বিক্ষোভে বিভিন্ন কলেজে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। কোথাও ছাত্র সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে উপস্থিতির হার বাড়িয়ে দেওয়া, কোথাও আবার কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে হাজিরার খাতায় গরমিলের অভিযোগ। প্রসঙ্গত, চলতি শিক্ষাবর্ষের শুরুতে স্নাতকে ভর্তি প্রক্রিয়ায় ‘টাকার খেলা’ নিয়ে প্রচুর জল ঘোলা হয়েছে। রাজ্য সরকার কড়া অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি সামলেছে। বর্তমান পরিস্থিতির উপরও সরকার কড়া নজর রাখছে। ক্লাসে পড়ুয়াদের উপস্থিতি নিয়ে কয়েকদিন ধরে উত্তপ্ত দক্ষিণ কলকাতার বেহালা কলেজ। সেই কলেজের পড়ুয়াদের একটি অংশের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে ক্লাসে উপস্থিতির হার বাড়িয়ে দিচ্ছে টিএমসিপি ছাত্র সংসদ। শিক্ষামন্ত্রীর দ্রুত হস্তক্ষেপে বেহালা কলেজের পরিচালন সমিতি ও টিএমসিপি ইউনিট ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
[সাউথ সিটি মলে স্তন্যপান বিতর্ক, বরখাস্ত অভিযুক্ত কর্মী]
ছবি : অরিজিৎ সাহা
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.