রমেন দাস: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো নিয়ে জট অব্যাহত। এবার পুজো বিতর্ক গড়াল কলকাতা হাই কোর্টে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জ্যোতির্ময় সেনের করা মামলায় উঠে এল পুজোর নামে বহিরাগত তত্ত্বও।
ঠিক কী ঘটেছে? সম্প্রতি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University) ক্যাম্পাসের অন্দরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (TMCP) এবং অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (ABVP) তরফে সরস্বতী পুজো আয়োজনের (Saraswati Puja) কথা ঘোষণা করা হয়। এরপরই শুরু হয় বিতর্ক। পুজো নিয়ে আপত্তি না থাকলেও পুজোর আয়োজক এবং আমন্ত্রিতদের বিরুদ্ধে সরব হন বিদ্যালয়ের ছাত্রদের একাংশ। পুজোর নামে অশান্তি সৃষ্টির অভিযোগও করা হয়। এই মর্মে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগও দায়ের করেন জ্যোতির্ময় সেন। এরপর মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) মামলা দায়ের করেন তিনি। এদিন দুপুরে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে ওঠে মামলা। মামলাকারীর পক্ষে আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় এবং একাধিক আইনজীবী সওয়াল করেন। পালটা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয় বিস্তারিত। সরকার পক্ষের আইনজীবীদেরও কথা শোনেন বিচারপতি। এরপর বিচারক তার পর্যবেক্ষণে জানান, সরস্বতী পুজোর ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অনুমতি নিতে হবে। এর সঙ্গেই আদালত জানায়, বহিরাগত অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষাকর্মী ছাড়া আর কেউ ক্যাম্পাসের মধ্যে পুজো বা যে কোনও অনুষ্ঠান পালন করার ক্ষেত্রে অনুমতি পাবে না। এই বিষয়েও নির্দিষ্ট পদক্ষেপ করবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এই প্রসঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবীদের তরফে সন্দীপন দাস ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল‘-কে জানান, “আমরা আদালতে আবেদন করেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পুজো হলেও সেখানে কোনও বহিরাগত এসে যেন অশান্তি সৃষ্টি না করতে পারে। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন। সেই অনুযায়ী নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আদালতে জানিয়েছে, কোনও পুজোর অনুমতি এখনও পর্যন্ত নেওয়া হয়নি।” মামলাকারী জ্যোতির্ময় সেনের অভিযোগ, ”বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর আমি আদালতের শরণাপন্ন হই। আমাদের দাবি ছিল, রাজন্যা হালদার, তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যরা বহিরাগত। এঁরা কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ছাত্র নন। এমনকী, অবৈধভাবে পুজোর নামে টাকাও তোলা হচ্ছে। এখানেই আপত্তি ছিল আমাদের। পুজো হোক, তবে ধর্মের নামে বিভেদ যাঁরা করেন, সেই গোষ্ঠীর হাতে বিশ্ববিদ্যালয় অশান্ত হবে! চক্রান্ত হবে এটা চাইছি না।”
যদিও এই প্রসঙ্গে মামলায় নাম জড়ানো তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল‘-কে জানান, ”রাজন্যা (Rajanya Halder) ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। বর্তমান না প্রাক্তন সেটা অন্য কথা। আসলে পুজোর নামে রাজনীতি যাঁরা করছেন ওঁরা প্রচার পাওয়ার জন্য এসব করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাব কমছে মাকুদের! সেই কারণেই এসব। তবে আদালতের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা, সম্মান রয়েছে। আমি পুজো নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। আমাকে বহু প্রতিষ্ঠান থেকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুজো যাঁরা করছেন, ওঁরা প্রত্যেকেই ছাত্র। তাঁরাই আমাকে বলেছেন। আর পুজো অনুমতি না নিয়ে হচ্ছে, এটাও আমার জানা নেই!”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.