অর্ণব আইচ: বাঙালি প্রেমিক মাদক মামলায় জেলে। আদালতে এসে তাঁকে ছাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছেন ফরাসি প্রেমিকা। একই সঙ্গে ছেলের জন্য আদালতে এসে চোখের জল ফেলছেন মা-ও। প্রেমিক কৌস্তভ বিশ্বাসকে লকআপ থেকে বের হতে দেখেই তাঁকে উড়ন্ত চুম্বন ছুড়ে দিলেন বিদেশিনী প্রেমিকা কাইলা। চিৎকার করে বললেন, “তাড়াতাড়ি ছাড়া পেয়ে বাইরে এসো।”
গত ২৫ আগস্ট পূর্ব কলকাতার তিলজলার পিকনিক গার্ডেনের বাসিন্দা কৌস্তভকে বিদেশি মাদক এলএসডি ও এমডিএমএ-সহ গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স। তার মা জানান, বাড়ির নিচে মাদক বিক্রির সময়ই তাঁদের ছেলেকে হাতেনাতে ধরা হয়। অথচ ছেলে এই ধরনের মাদক বিক্রি করে, তা জানতেন না তিনি বা তাঁর স্বামী। তাঁর স্বামী মেরিন ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। কিন্তু দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে বিগড়ে যায় ছেলে। ডিস্কো জকির কাজ শুরু করে। সেই সূত্র ধরেই বছর চারেক আগে গোয়া যায়।
ফ্রান্সের মাকসেই শহরের বাসিন্দা কাইলা জানান, গোয়ায় তিনি তাঁর জন্মদিনের পার্টি দিয়েছিলেন। সেখানেই ডিজে হিসাবে তাঁর পরিচয় হয় কৌস্তভের সঙ্গে। ক্রমে তাঁরা ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন। যদিও বুঝতে পারেননি যে, গোয়ায় ছেলেটি গিয়েছিল মাদক কেনাবেচা করতে। ক্রমে কাইলা প্রেমিক কৌস্তভের সঙ্গে চলে আসেন কলকাতায়। বাড়িতে ছেলের সঙ্গে ফরাসী কাইলার লিভ টুগেদারে আপত্তি জানাননি অভিভাবকরাও। কাইলা জানান, ক্রমে তিনি বুঝতে পারেন যে, প্রেমিক কৌস্তভ ডার্ক ওয়েবে অর্ডার দিয়ে নিয়ে আসছে এলএসডি, এমডিএমএ-র মতো বিদেশি মাদক। বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে খদ্দেরদের কাছে সেই মাদক বিক্রি করে টাকা রোজগার করছে। কাইলার দাবি, তিনি কৌস্তভকে বারণ করতেন। কিন্তু কানে তুলতেন না কৌস্তভ।
প্রেমিক গ্রেপ্তার হওয়ার পরও তিনি ফিরে যাননি দেশে। বরং প্রেমিকের মা-বাবার পাশে দাঁড়িয়েছেন। শিখে নিয়েছেন অল্প বাংলাও। নিজেই আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলছেন এনজিওর কর্মী কাইলা। প্রায়ই আসছেন ব্যাঙ্কশাল আদালতে। কীভাবে প্রেমিককে জামিন করিয়ে বাইরে নিয়ে আসা যায়, সেই পরিকল্পনাই করছেন দিনরাত। আর প্রেমিককে গাড়িতে তোলার সময় বলছেন, “তাড়াতাড়ি ফিরে এসো”। কাইলা জানালেন, এবার তাঁর ভিসা শেষ হয়ে আসছে। মা তাঁর বিমানের টিকিটও পাঠিয়ে দিয়েছেন। ফ্রান্সে ফিরে যেতে হবে তাঁকে। কিন্তু দেশে ফিরেও সারাক্ষণ খবর নেবেন, কখন ছাড়া পাচ্ছেন প্রেমিক কৌস্তভ। সে ছাড়া পেলেই কাইলা ফের উড়ে আসবেন তাঁর প্রিয় কলকাতায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.