সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একাধিক রাজ্যে নির্বাচনে হতাশাজনক ফলাফল-সহ বেশ কয়েকটি কারণে সদ্য জাতীয় দলের তকমা হারিয়েছে তৃণমূল (TMC)। সোমবার জাতীয় নির্বাচন কমিশন একথা জানিয়েছে। একইভাবে শরদ পওয়ারের এনসিপিও খুইয়েছে জাতীয় দলের তকমা। তবে পঞ্চায়েত ভোটের আগে এ রাজ্যের শাসকদলের এই স্বীকৃতি হারানোকে বড়সড় ধাক্কা বলে মনে করছে গেরুয়া শিবির। অন্তত নেতাদের কথায় তা স্পষ্ট। মঙ্গলবার বিজেপির (BJP)সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ এনিয়ে শাসকদলকে কটাক্ষ করেছেন। ঘাসফুল প্রতীকটাই তুলে দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) মন্তব্য, ”দুর্নীতির জন্য কেউ আর তৃণমূলকে ভোট দেয় না। সারা দেশে এদের কোনও প্রভাব নেই। এখন জাতীয় দলের তকমা হারিয়ে পশ্চিমবঙ্গেই অস্তিত্বের লড়াই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন শেষ। ওই দলের প্রতীকটাও উঠে যাবে।” মঙ্গলবার সকালে তাঁর এহেন মন্তব্যে স্বভাবতই ফুঁসে উঠেছে তৃণমূল। দলের তরফে জয়প্রকাশ মজুমদারের পালটা খোঁচা, ”জাতীয় দলের তকমা হারানোর বিষয়টা নিয়ে তৃণমূল মোটেই এত সহজে পিছু হঠবে না। আইনি পথে হেঁটে এর নিষ্পত্তি করা হবে। সুতরাং, এখনই তৃণমূলের ধাক্কা বলে আনন্দ পাওয়ার কিছু নেই।”
এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের কথা আগেই জানিয়েছিলেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় (Sougata Roy)। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে তবেই সেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে খবর। পরে সাংবাদিক সম্মেলন করে কুণাল ঘোষ বলেন, ”তৃণমূল কংগ্রেস কেন জাতীয় দলের স্বীকৃতি হারাল, কমিশন কী বলছে, সেসব নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব দেখছে, প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু বিরোধীরা যা বলছে, আমার প্রশ্ন হল, তাতে বিরোধীদের কী? এত উল্লাস কীসের? তৃণমূল সরকারের তৈরি করা সামাজিক স্কিম যখন জাতীয়, আন্তর্জাতিক স্তরে প্রশংসিত হয়, তখনই তা জাতীয় সম্মান পায়। মানুষ সেই সামাজিক প্রকল্পের উপকারিতা অনুভব করেন।”
জাতীয় নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) নিয়ম অনুযায়ী, জাতীয় দল হতে গেলে দেশের মোট লোকসভা আসনের ২ শতাংশ পেতে হয় ৩ রাজ্য থেকে। কিন্তু তৃণমূলের বাংলার বাইরে কোনও লোকসভা সাংসদ নেই। জাতীয় দল হতে গেলে অন্তত চারটি আলাদা আলাদা রাজ্য থেকে বিধানসভা বা লোকসভা নির্বাচনে অন্তত ৬ শতাংশ বা তার বেশি ভোট পেতে হয়। যেটা তৃণমূল পায়নি। জাতীয় দল হওয়ার আরেকটা উপায় আছে। সেটা হল চারটি রাজ্যে আঞ্চলিক দলের স্বীকৃতি পাওয়া। সেটার জন্যও অন্তত চার রাজ্যে ন্যূনতম ২ জন করে বিধায়ক বা ৬ শতাংশ ভোট পেতে হয়। সেটাও নেই তৃণমূলের। আর তাই জাতীয় দলের তকমা হারাতে হয়েছে বাংলার শাসকদলকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.