অর্ণব আইচ: বহুতল থেকে নিচে রং ছোড়ার প্রবণতা বাড়ছে। তাই এবার দোল ও হোলিতেও শহরের বহুতলগুলির উপর নজর থাকবে পুলিশের। বিশেষ করে রাস্তার একেবারে ধারে যে আবাসনগুলি রয়েছে, তার ছাদ বা বারান্দা থেকে যাতে কেউ নিচে পথচারীদের দিকে রং ভরতি বেলুন ছুঁড়তে না পারে, তার উপর এবার নজর রাখবে পুলিশ। রং খেলা নিয়ে যাতে শহরের কোথাও কোনও গোলমাল না হয়, তার জন্য বড় কোনও ঘটনা ঘটার আগে অঙ্কুরেই বিনাশ করার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছেন পুলিশ আধিকারিকরা। কোথাও কোনও গোলমাল হলে যাতে কয়েক মিনিটের মধ্যেই পুলিশ সেখানে পৌঁছে যেতে পারে, তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শহরের অলিগলিতে বাড়ানো হচ্ছে বাইকের টহলদারি। শুক্রবার দোল নিয়ে কলকাতা পুলিশের প্রত্যেক থানার ওসির সঙ্গে বৈঠকে বসছেন লালবাজারের কর্তারা। দোল ও হোলির দিন শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে লালবাজারের কর্তারা শহরের থানাগুলিকে সতর্ক থাকতে বলতে পারেন।
পুলিশ জানিয়েছে, আগামী সোমবার দোলের দিন শহরে নামতে পারে অতিরিক্ত প্রায় পাঁচ হাজার পুলিশ। প্রায় সম সংখ্যক বাহিনী থাকবে মঙ্গলবার হোলির দিনেও। নিরাপত্তার খাতিরে প্রায় ৭২০টি পুলিশ পিকেট থাকতে পারে শহরে। থাকছে কুইক রেসপন্স টিম, রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড, হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াডও। অটো, টোটো, বাইকে চেপে শহরের অলি-গলিতে টহল দেবে পুলিশ। পাশাপাশি নারী সুরক্ষায় টহল দেবে কলকাতা পুলিশের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাহিনী ‘দ্য উইনার্স’। লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, বহুতলগুলির ছাদ থেকে রং ছোড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে। সেই নিষেধাজ্ঞা না মানলে কড়া ব্যবস্থা নেবে থানা। বাইক আরোহীদের মাথায় হেলমেট না থাকলে ও ‘ট্রিপল রাইডিং’ করলে সেই বাইক চালক ও আরোহীদের সঙ্গে সঙ্গেই ধরবে পুলিশ। প্রয়োজনে আটক করা হতে পারে বাইকও। মদ্যপান করে বাইক বা গাড়িতে চড়ে দোল খেললে আটক করা হবে সেই গাড়ি। মদ্যপান করে গাড়ি চালানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হতে পারে চালককেও। তার জন্য জায়গায় জায়গায় গার্ডরেল দিয়ে রাস্তা আটকানো থাকতে পারে। অনেক সময়ই চলন্ত মালবাহী গাড়ি থেকে রং ছুঁড়তে ছুঁড়তে গতিতে বেরিয়ে যায় অনেকে। এই বিষয়ে পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে। গঙ্গার ঘাটের কাছে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ থাকবে। এ ছাড়াও দুর্ঘটনা এড়াতে শহরের প্রত্যেকটি পুকুরের উপরও পুলিশকে নজর রাখতে বলা হয়েছে। দোল ও হোলির দিন শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে শহরের আবাসন ও বাড়ি বাড়ি পুলিশ লিফলেট বিলি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
দোল ও হোলিতে মদের দোকান বন্ধ থাকার ফলে বেআইনি মদ বা চোলাই কারবারিরা যাতে মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে, তার জন্য সতর্ক হয়েছেন আবগারি দপ্তর ও কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারাও। দোলের আগে থেকেই শহরের বিশেষ কিছু জায়গার উপর চলবে নজরদারি। কারণ, গার্ডেনরিচ, পশ্চিম বন্দর, খিদিরপুর, তপসিয়া, পার্ক সার্কাস রেল স্টেশন, বালিগঞ্জ স্টেশন, মানিকতলা, উল্টোডাঙা, টালিগঞ্জ, বড়তলা-সহ শহরের অন্তত দশটি জায়গার উপর বিশেষ নজরদারি থাকছে গোয়েন্দাদের। এই জায়গাগুলিতে থাকা কয়েকটি ঝুপড়িতে লুকিয়ে যাতে এই ধরনের মদ বা গাঁজা চরসের মতো মাদক বিক্রি না হয়, তার উপরও নজরদারি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.