Advertisement
Advertisement

রাজনাথের বৈঠকের আগেই কলকাতা থেকে সরল CRPF-এর সদর দপ্তর

জঙ্গলমহলের নিরাপত্তায় আঘাত, বলছে ক্ষুব্ধ রাজ্য৷

Strategic CRPF Command Shifted To Chhattisgarh
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:May 8, 2017 3:57 am
  • Updated:May 8, 2017 4:05 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের মাওবাদী অধ্যুষিত ১০ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে সোমবার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসতে চলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং৷ ছত্তিশগড়ের সুকমায় গেরিলা বাহিনীর হামলায় ২৫ জন সিআরপিএফ জওয়ানের মৃত্যুর পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মাও-সমস্যা মোকাবিলা নিয়ে ওই বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা৷ কিন্তু তার আগেই তাৎপর্যপূর্ণভাবে সিআরপিএফ কমান্ড সদর দফতর কলকাতা থেকে ছত্তিশগড়ে সরিয়ে নিল কেন্দ্র৷

সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ) ৪ মে একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সেন্ট্রাল জোন কমান্ডের সদর দফতর দ্রুত কলকাতা থেকে সরিয়ে বিজেপি শাসিত ছত্তিশগড়ের রাজধানী রায়পুরে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে৷ বছর সাতেক আগে ‘লজিস্টিক’ ও যোগাযোগের সুবিধার জন্য সেন্ট্রাল জোন কমান্ডের সদর দফতর রায়পুর থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছিল৷ কিন্তু এই মুহূর্তে কেন্দ্র এই ব্যাপারে কলকাতার চেয়ে রায়পুরকেই বেশি গুরুত্ব দিতে চাইছে৷

Advertisement

সোমবারের বৈঠকের আগেই সেন্ট্রাল কমান্ডের সদর দফতর কলকাতা থেকে রায়পুরে সরানোর নির্দেশ দেন সিআরপিএফের নবনিযুক্ত ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব রাই৷ সেন্ট্রাল জোনের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল কুলদীপ সিং হাতে চিঠি পাওয়ামাত্র মে মাসের ৪ তারিখেই রায়পুর উড়ে যান৷ শুক্রবারই তিনি রায়পুর কমান্ডের দায়িত্ব নেন৷ ২০০৯ সালের ৭ আগস্ট সিআরপিএফের সেন্ট্রাল কমান্ড কাজ শুরু করে৷ এর আওতায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার, ছত্তিশগড়, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তরপ্রদেশ৷ ২০১০ সালের জুলাইয়ে এর সদর দফতর কলকাতায় আনা হয়েছিল৷

কেন্দ্রের যুক্তি, পশ্চিমবঙ্গে এখন আর মাওবাদী নেই৷ কিন্তু ছত্তিশগড় মাও-সমস্যায় সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য৷ তাই কেন্দ্রীয় বাহিনীর এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রায়পুরেই হওয়া বাঞ্ছনীয়৷ স্বাভাবিকভাবে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে ব্যাপক ক্ষুব্ধ পশ্চিমবঙ্গ৷ জানা গিয়েছে, এ নিয়ে যা বলার আজ বৈঠকেই বলবেন রাজ্যের প্রতিনিধি স্বরাষ্ট্রসচিব মলয় দে ও ডিজি সুরজিত্‍ করপুরকায়স্থ৷ সূত্রের খবর, রাজ্য মনে করছে বাংলায় মাওবাদী সমস্যা নিয়ন্ত্রণে৷ তার মানে এই নয়, এখানে মাওবাদী নেই৷ হঠাত্‍ যদি কোনও হামলার ঘটনা ঘটে যায়, তবে তার দায় কে নেবে? উল্লেখ্য, ভৌগোলিক কারণে মাওবাদীরা বাংলাকে ‘স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্ট’ হিসাবে ব্যবহার করে৷ সিআরপিএফ-এর এই সদর দফতর কলকাতায় থাকার কারণে নিশ্চিন্ত ছিল বিহার, ঝাড়খণ্ড কিংবা বাংলাদেশও৷ কেন্দ্রের নয়া সিদ্ধান্তে সে ক্ষেত্রে ঝুঁকি বাড়ল পশ্চিমবঙ্গের৷

দিল্লির বৈঠকে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ পদ্ধতি, সাম্প্রতিক মাও-দমন অভিযানগুলির বিশ্লেষণ, বিভিন্ন সমস্যার দিকগুলি চিহিত করা, নিরাপত্তা বাহিনী-সহ সাধারণের হতাহতের সংখ্যা যতটা সম্ভব কমিয়ে আনার জন্য পথ অনুসন্ধানের ব্যাপারে কথা হবে৷ তবে সবচেয়ে গুরুত্ব পাবে মাও-দমনে কৌশলের নীতি পুনর্গঠন৷ যা হবে আরও কার্যকরী এবং যাতে হতাহতের সংখ্যা কমানো যাবে৷ বৈঠকে ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ এবং অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে৷ সেখানে সভাপতিত্ব করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং৷ থাকবেন মাও-অধ্যুষিত ৩৫ জেলার জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, আধা-সামরিকবাহিনী ও গোয়েন্দাবাহিনীর প্রধানরা৷

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ৯০ শতাংশ মাও কার্যকলাপ ১০টি রাজ্যের মাত্র ৩৫টি জেলার মধ্যেই এখন সীমাবদ্ধ৷ যদিও অতি-বাম গেরিলাদের প্রভাব রয়েছে অন্তত ৬৮টি জেলায়৷ পশ্চিমবঙ্গে ২০১১ সালের পর মাও কার্যকলাপ হীনবল হয়েছে৷ একদিকে সরকারি সহায়তায় সেখানকার দরিদ্র জনগণের খাদ্য ও চিকিৎসার মতো বিষয়গুলি সুনিশ্চিত করা হয়েছে৷ এলাকায় সার্বিক উন্নয়ন হয়েছে৷ এর ফলে মাওবাদীরা জনগণের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে৷ অন্যদিকে, মাওবাদীরা অস্ত্রত্যাগ করে সমাজের মূল স্রোতে ফিরেছে৷ সে কারণে একালের মাও-সন্ত্রাস কবলিত জঙ্গলমহল এখন শান্ত৷ সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে৷ দিল্লির বৈঠকে রাজ্যের প্রতিনিধিরা সেই সাফল্যের কথাই তুলে ধরবেন৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement