ফাইল ছবি।
অর্ণব আইচ: খাস কলকাতায় জালনোট এবং অস্ত্র পাচার চক্রের হদিশ। এসটিএফের জালে বমাল গ্রেপ্তার ৩ দুষ্কৃতী। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে এল আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। কলকাতার অদূরেই রমরমিয়ে চলছিল অস্ত্র কারখানা, আড়াল থেকে চলছিল আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারও। চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশ্যে এল জগদ্দল এলাকা থেকে। দেড়বছর ধরে পরিত্যক্ত লাড্ডু কারখানার আড়ালে অস্ত্র কারখানা চালাচ্ছিল একদল দুষ্কৃতী। অস্ত্র কারবারিদের যোগাযোগ ছিল বিহারের মুঙ্গেরের একটি বড়সড় অস্ত্র কারবারি চক্রের সঙ্গে।
ঘটনার সূত্রপাত কলকাতায়। ময়দান থানা এলাকা থেকে জাল নোট এবং অসম্পূর্ণ আগ্নেয়াস্ত্রের লেনদেন করার সময় কলকাতা পুলিশের অ্যান্টি এফআইসিএন, এবং এসটিএফের যৌথ বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে তিন দুষ্কৃতী। গ্রেপ্তার দুষ্কৃতীদের মধ্যে শেকু সেখ নামের একজন মালদহের কালিয়াচকের বাসিন্দা। অপর দুই দুষ্কৃতী মহম্মদ আমজাদ বিহারের মুঙ্গেরের বাসিন্দা, এবং মহম্মদ আবদুল্লা বিহারের হজরতগঞ্জের বাসিন্দা। ধরা পড়া তিন দুষ্কৃতীর কাছ থেকে প্রায় ১ লক্ষ টাকার জাল ৫০০ টাকার নোট এবং বেশ কয়েকটি অসম্পূর্ণ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়। এদের জেরা করেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ধৃতদের অন্যতম পাণ্ডা মহম্মদ আবদুল্লা জানায়, এই অস্ত্রগুলি তৈরি হত কলকাতার অদূরেই। কলকাতা থেকে অস্ত্রের বিভিন্ন অংশ খণ্ডে খণ্ডে মুঙ্গেরে পাচার করা হত। মুঙ্গেরেই সেগুলি জোড়া লাগিয়ে অস্ত্র তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করা হত।
মহম্মদ আবদুল্লার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গোপনে জগদ্দলের ছোটো শ্রীরামপুর এলাকায় তল্লাশি চালায় এসটিএফের একটি বিশেষ দল। তল্লাশিতে রীতিমতো একটি অস্ত্র কারখানার হদিশ পেয়ে যান এসটিএফের আধিকারিকরা। এসটিএফ সূত্রে খবর, একসময় ওই এলাকায় দুটি লাড্ডু কারখানা চালাতেন জহরপ্রসাদ সাউ নামে এক ব্যক্তি। বছর দেড়েক আগে কারখানাটিতে আগুন লেগে পুড়ে যায়। পরিত্যক্ত কারখানাটি দুষ্কৃতীদের ভাড়া দেন জহরপ্রসাদ সাউয়ের ছেলে কালীপ্রসাদ সাউ। সেই পরিত্যক্ত লাড্ডু কারখানাটিকেই রীতিমতো আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানায় পরিণত করে একদল দুষ্কৃতী। তৈরি করা হত অত্যাধুনিক 6MM এবং 7MM পিস্তল। সেখান থেকেই তা মিডলম্যানের হাতে পাচার করা হত মুঙ্গেরে। অভিযান চালিয়ে এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ৬ জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে এসটিএফ। এদের মধ্যে পাঁচজন বিহার এবং একজন মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। শহর কলকাতার অদূরে এত বড় চক্রের হদিশ মেলায় প্রশ্নের মুখে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.