ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ: গ্রেপ্তারি এড়ানো যায়নি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সংগঠনের অন্যতম শীর্ষ নেতাকে মুক্ত করতে চেষ্টার কসুর করেনি জামাত জঙ্গিরা। আদালতে যাওয়ার পথে জঙ্গি নেতা বোমারু মিজান ওরফে কওসরকে ছাড়িয়ে নেওয়ার ছক এবার ফাঁস করল কলকাতা পুলিশ। এই পরিকল্পনার মাস্টারমাইন্ড আরিফুল ইসলাম ওরফে আতাউর ওরফে মোটা আনাস ওরফে শাহিদকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ ওই জঙ্গি আরিফুল ইসলাম বুদ্ধগয়ায় বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গেও জড়িত।
কলকাতায় ছড়িয়ে জইশের জাল! কোথায় গেল শিয়ালদহের ‘চাচা’?
পুলিশ জানিয়েছে, বাংলাদেশে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশকর্মীদের খুন করে গাড়ি থেকে পালিয়েছিল জেএমবি নেতা বোমারু মিজান। তারপরই সীমান্ত পেরিয়ে এই রাজ্যে এসে ‘কওসর’ নাম নিয়ে থাকতে শুরু করে। একের পর এক জেলায় তৈরি করে জেএমবি-র নেটওয়ার্ক। ওই ঘটনার পাঁচ বছর পর এবার কলকাতা থেকে ফের বোমারু মিজান পালানোর ছক কষে। এবার এই ছকের মাথা ছিল ধৃত আরিফুল। গোয়েন্দাদের ধারণা, জেএমবির পলাতক নেতা সালাউদ্দিনই বাংলাদেশের মতো কলকাতায় পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের মাথা মিজান ওরফে কওসরকে ছিনিয়ে নেওয়ার ছক কষে। সেই কারণেই কলকাতায় এসে আশ্রয় নেয় আরিফুল। গত কয়েকদিন ধরে শহরের একটি গোপন ডেরায় বসে ছক করতে থাকে, কীভাবে জেল থেকে আদালতে যাওয়ার পথে মিজানকে ছিনিয়ে নেওয়া যায়। সম্প্রতি কওসরকে জেল থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় পুরো বিষয়টির রেইকি করে সে। কী ধরনের গাড়ি করে মিজানকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়, যে গাড়ি করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়, তাতে কতজন নিরাপত্তারক্ষী থাকেন, এই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখে আরিফুল।
রাজ্যে বিজেপির প্রার্থী তালিকায় চমক থাকছে, ইঙ্গিত দিলীপের
এরপর শুরু হয় ব্লু প্রিন্ট। চলন্ত গাড়ি থামিয়ে মিজানকে ছিনিয়ে নেওয়ার ছক কষতেও শুরু করে। শনিবার ভোরে সে বাবুঘাট থেকে বাসে করে বাইরে যাওয়ার ছক কষছিল। তার আগেই তাকে গ্রেফতার করেন এসটিএফের আধিকারিকরা। এক সপ্তাহ আগে ধৃত এক জঙ্গিকে জেরা করে তার সন্ধান মেলে। তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নথি উদ্ধার হয়। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, আরিফুলের আসল বাড়ি অসমের বরপেটায়। পড়াশোনা করেছে সেখানেই। ট্রাক চালকের হেল্পারি করত সে। কয়েক বছর আগে জেএমবির দুই মাথা বোমারু মিজান ও আবদুল মজিদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। মগজধোলাই করে তাকে জেএমবিতে নিয়োগ করা হয়। অন্য জঙ্গিদের সঙ্গেও তার পরিচয় করানো হয়। তাকে দক্ষিণ ভারতে নিয়ে গিয়ে মিজান বিস্ফোরণ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করে। গত বছরের জানুয়ারিতে জঙ্গি মজিন, আদিল, হাসান, ছোট করিমদের সঙ্গে গিয়ে আরিফুলও বুদ্ধগয়ায় গিয়ে রেইকি করে। সেখানে বিস্ফোরণও ঘটায়। এরপর বেঙ্গালুরুতে গিয়ে জেএমবির তহবিল তৈরি করতে সঙ্গীদের নিয়ে ডাকাতিও করে আরিফুল। শেষে কলকাতায় ফিরে এসে ধরা পড়ে। সংগঠনের আরও বিস্তারিত জানতে তাকে জেরা করে হচ্ছে বলে জানিয়েছে এসটিএফ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.