প্রতীকী ছবি।
গৌতম ব্রহ্ম: ডেঙ্গু আতঙ্ক যখন রাজ্যজুড়ে ডালপালা মেলেছে তখন অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রুখতে কঠোর পদক্ষেপ নিল রাজ্য। একদিকে, প্রেসক্রিপশন অডিট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, হাসপাতালের সিসিইইউ-তে নিয়মিত সোয়াব সংগ্রহ করে সংক্রমণের গভীরতা মাপার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারি এবং বেসরকারি দু’তরফেই চলবে এই নজরদারি। এমনই নির্দেশ দিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম।
নারায়ণস্বরূপ নিগম সাফ জানিয়ে দিলেন, সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, ডাক্তারবাবুদের একাংশ অকারণে অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করছেন। সাধারণ মানুষও ভুল করছেন। রোগ হলে নিজেরাই ডাক্তারি করছেন। ওষুধের দোকান থেকে মুঠোমুঠো অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খাচ্ছেন। কিছু হলে অ্যাজিথ্রোমাইসিন খেয়ে নিচ্ছে। ডোজও নিজেরা ঠিক করছেন। যার ফলে ভয়ংকর সমস্যা তৈরি হচ্ছে। ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছে না। মানে রেজিস্ট্যান্ট হয়ে যাচ্ছে। ‘আপার রেসপিরেটরি ট্রাক্ট’ সংক্রমণ নিয়ময়ে আগে পেনিসিলিন গ্রুপের ড্রাগ ব্যবহার করা হত। কিন্তু এখন বহুক্ষেত্রেই সেফালোস্ফোরিন ছাড়া কাজ হচ্ছে না। এমন উদাহরণ অনেক আছে। আসলে, ডব্লুবিসি কাউন্ট, কালচার সিনসেটিবিটি না দেখেই বহু ডাক্তার অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে দিচ্ছেন রোগীকে। যার ফলেই এই সমস্যা হচ্ছে।
সম্প্রতি রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে ৩২ হাজার কেস স্ট্যাডি করে একটি রিপোর্ট প্রস্তুত করা হয়। তাতে সাঙ্ঘাতিক তথ্য উঠে আসে। দেখা যায়, গোটা দেশের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারে বাংলা শীর্ষে। এরপরই টনক নড়ে স্বাস্থ্যদপ্তরের। আসরে নামেন স্বাস্থ্যসচিব নিজে। সম্প্রতি স্বাস্থ্যভবনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে স্বাস্থ্যকর্তা, ডাক্তারদের এই ব্যাপারে তিনি সতর্ক করেন। বলেন, ‘‘হাসপাতাল ফাঁকা পাওয়া যাচ্ছে না। এই অজুহাতে অনেক সময় হাসপাতালের সিসিইউ বা আইসিইউ-কে প্রোটোকল মেনে জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে না। যার জেরে অনেক রোগীই হাসপাতাল গিয়ে নতুন করে সংক্রমিত হচ্ছেন। কেউ ছুটির সময় সংক্রমণ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। পরে ধরা পড়ছে। ফলে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বাড়ছে। বাড়ছে সেপসিসে মৃত্যু। স্বাস্থ্যসচিব এদিন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে এই বিষয়টি সরেজমিনে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। বলেন, ‘‘আপনারা নিজেরা দেখুন প্রোটোকল মেনে সিসিইউ-আইসিইউ জীবাণুমুক্ত হচ্ছে কীনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.