Advertisement
Advertisement

Breaking News

Calcutta HC

সুপার নিউমেরারি পোস্টে নিয়োগে আগ্রহী রাজ্য, ‘আবেদন করুন’, মন্তব্য বিচারপতির

কিছুদিন আগে সুপার নিউমেরারি পোস্ট নিয়ে শীর্ষ আদালত রাজ্য মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত খারিজ করে দিয়েছে।

State show interest in Calcutta HC recruitment on supernumerary posts

ফাইল ছবি

Published by: Subhankar Patra
  • Posted:April 25, 2025 5:56 pm
  • Updated:April 25, 2025 11:15 pm  

গোবিন্দ রায়: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেও কাটেনি নিয়োগ জট। আড়াই বছর ধরে ৬১ টি শুনানির পর এখনও ২০১৬ র উচ্চ-মাধ্যমিকে কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষায় শিক্ষক নিয়োগ মামলা বিচারাধীন কলকাতা হাই কোর্টে। শুক্রবার তারই প্রতিবাদে আদালত চত্বরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন চাকরিপ্রার্থীরা। নিয়োগে ‘বাগড়া’ দেওয়ার অভিযোগে কার্যত চাকরিপ্রার্থীদের নিশানায় বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও তাঁর সাগরেদরা। ক্ষোভের নিশানা থেকে বাদ যাননি বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুও। তাঁদেরকে ‘চাকরিখেকো’ বলে দীর্ঘক্ষণ কিরণ শঙ্কর রায় রোডে ফিরদৌস শামিম, সুদীপ্ত দাশগুপ্তদের চেম্বারের বাইরে জুতো তুলে অবস্থান বিক্ষোভ দেখালেন চাকরিপ্রার্থীরা।

জানা গিয়েছে, ২০১৬ র উচ্চ-মাধ্যমিকে কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ‘সুপার নিউমেরারি পোস্ট’ বা অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে রাজ্য। রাজ্যের এই অতিরিক্ত শূন্যপদের সিদ্ধান্ত নিয়েই মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাই কোর্টে। ২০২৩-এর এপ্রিলে এই শূন্যপদে নিয়োগের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় হাই কোর্ট। পাশাপাশি, মন্ত্রিসভার ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। পরে মামলা যায় সুপ্রিম কোর্টে। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট মন্ত্রিসভার ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে, মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত মতো অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে নিয়োগে হস্তক্ষেপ করেনি শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, এতে হস্তক্ষেপ করলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংস হয়ে যাবে।

Advertisement

এদিন হাই কোর্টের বিচারাধীন সেই মামলারই শুনানি ছিল হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে। সেখানে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ তুলে ধরে রাজ্যের দাবি, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার নিষ্পত্তি করে দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে ‘সুপার নিউমেরারি পোস্ট’ পোস্ট বৈধ। ফলে কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষায় নিয়োগে কোনও বাধা নেই। তাতেই রাজ্যকে এবিষয়ে লিখিত আবেদন করার নির্দেশ দেয় আদালত। বিচারপতি বসুর বক্তব্য, মৌখিক নয়, সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট বক্তব্য কী, তা স্পষ্ট করে রাজ্যকে এনিয়ে লিখিত আবেদন দিতে হবে।

আদালতে মূল মামলাকারীদের তরফে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যর বলেন, “এখনও একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সিবিআই চার্জশিটে ৭৬ কোটি টাকা দুর্নীতির কথা জানিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় ওএমআর প্রকাশ করতে বলে। কিন্তু তা করা হয়নি। ফলে এই নিয়োগ প্রক্রিয়াও দুর্নীতি যুক্ত।” তাঁর দাবি, “ওএমআর প্রকাশ করা জরুরি। যাদের ওই পদে নিয়োগ হয়েছিল তাঁদের সুরক্ষাও জরুরি। রাজ্য নিয়মের বাইরে গিয়ে কাজ করতে পারে না।” তার প্রেক্ষিতেও রাজ্যের বক্তব্য জানতে চায় আদালত।

আগামী ৬ মে এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন বিচারপতি বসু। যার জেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন চাকরিপ্রার্থীরা। প্রথমে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য চেম্বারে যান তাঁরা। কিন্তু সম্প্রতি ওই বিল্ডিংয়ে অগ্নিকাণ্ডের জেরে চেম্বার শূন্য দেখে প্রতিবাদী মিছিল করে রাস্তায় নামেন চাকরিপ্রার্থীরা। বিকাশকে না পেয়ে তাঁরই জুনিয়র তথা এই মামলার মূল মামলাকারীদের চেম্বারের বাইরে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। প্রথমে জুতো তুলে দেওয়া হয় ‘চাকরিখেকো’ স্লোগান। পরে ‘চোর চোর’ বলেও কটাক্ষ করা হয়।

আদালত সূত্রের খবর, এদিন আন্দোলন গড়ায় রাত পর্যন্ত। রাস্তায় চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান বিক্ষোভের জেরে চেম্বারে ঢুকতে পারছিলেন না বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জুনিয়র ফিরদৌস শামিম, সুদীপ্ত দাশগুপ্তরা। সাড়ে ৮ টা নাগাদ তারা চেম্বারে ঢুকতে গেলে তাঁদের লক্ষ্য করে বোতল, জুতো ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ। পালটা আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হন তাঁরাও। বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যর চেম্বার জুনিয়ররা পালটা মারধর করে অবস্থান বিক্ষোভকারীদের তুলে দেন বলে জানা গিয়েছে। এনিয়ে ফিরদৌস শামিম বলেন, “আদালত চত্বরে ১৪৪ ধারা থাকে, তাছাড়াও সেখানে একাধিক বিচারপতি চেম্বার রয়েছে। সেই বিল্ডিং এর নিচের দীর্ঘক্ষণ ধরে এই অবস্থান চলছিল। আর পুলিশ দাঁড়িয়ে ড্রামা দেখছিল। তাই আমরাই আন্দোলন তুলতে বাধ্য হই। “

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement