নব্যেন্দু হাজরা: লকডাউনের (Lockdwn) মধ্যেই রাস্তায় দেখা মিলবে ট্যাক্সির (Taxi)। তবে তা যাত্রীদের ঘুরে বেড়ানোর জন্য নয়। জরুরি পরিষেবার জন্য। লকডাউনের মধ্যে দোকান-বাজারে পণ্য পৌঁছে দেবে ট্যাক্সি। বৃহস্পতিবার জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে ট্যাক্সিকে ছাড় দেওয়ার ঘোষণাতেই অনেক হতাশার মাঝেও একটু আশার আলো দেখছেন ট্যাক্সিচালকরা। আপাতত ঠিক হয়েছে, একটি নম্বর দেওয়া হবে সরকারের তরফে। সেই নম্বরে যোগাযোগ করলে ট্যাক্সি মিলবে। চালক ছাড়াও তাতে বসতে পারবেন তিনজন। দোকানে পণ্য নিয়ে যেতে, বাড়িতে পণ্য ডেলিভারি দিতেও এই ট্যাক্সি পাওয়া যাবে। আর তার জন্য তৈরি হবে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডও। চালকদের রুজি-রুটির কথা ভেবেই এমন সিদ্ধান্ত মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি যেমন খুশি গাড়ি নিয়ে বাইরে বেরনো বন্ধ করতেই এই পরিকল্পনা বলে জানাচ্ছে প্রশাসনের একাংশ।
এমনিতেই লকডাউন ঘোষণা হওয়ার প্রায় ৮০ শতাংশ চালকই ফিরে গিয়েছেন নিজেদের গ্রামে। যে ২০ শতাংশ ট্যাক্সি চালকেরা শহরে আছেন, বৃহস্পতিবারের পর তাঁদের মুখে চওড়া হাসি। প্রায় দিন কুড়ি ধরে রোজগার বন্ধ। অনেকেই ভেবেছিলেন লকডাউন ওঠার আগে আর গাড়ির চাকা ঘুরবে না। কিন্তু তার আগেই গাড়ি নামাতে পারবেন কেউ কেউ। তাই এমন ঘোষণায় কিছুটা হলেও স্বস্তি ট্যাক্সি চালকদের সংসারে। ট্যাক্সি মালিকরা অবশ্য বিষয়টি নিয়ে এখনই কিছু বলতে নারাজ। তাঁদের দাবি, আগে সরকারি অর্ডার বের হোক। তারপর বোঝা যাবে ঠিক কী হতে চলেছে! রাজ্যের পরিবহণ দফতরের মুখ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, “আমরা আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করছি। কীভাবে সব কিছু করা যায় তার প্রস্তুতি চলছে।”
তবে চালকরা এর ফলে যে কিছুটা উপকৃতই হবেন তা মানছেন মালিকরাও। চালকদের দাবি, দিনে ৫০০—৮০০ টাকা পর্যন্ত গড়ে তাঁদের রোজগার হত, কিন্তু লকডাউনে সব গিয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে তাই বেশিরভাগ চালকই ফিরে গিয়েছেন দেশে। মালিকরাও পড়েছেন সমস্যায়। গাড়ি বের না হওয়ায় কোনও রোজগার নেই। কিন্তু বেশি সমস্যায় চালকরা। কারণ দিনে যত টাকা তাঁরা পান মালিককে একটা অংশ দেওয়ার পর বাকিটা তাঁদের থাকে। কিন্তু এখন পুরো ভাঁড়ারই শূন্য। ট্যাক্সিমালিকদের কথায়, “সরকার এখনও কিছু না জানালেও আমরাও প্রস্তুত হচ্ছি। কোন কোন চালক আছেন এখানে, তার তালিকা তৈরি হচ্ছে। পরিবহণ দফতরের তরফে জানালে তো দ্রুত গাড়ি নামাতে হবে।” এদিকে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর জরুরি পরিষেবায় ট্যাক্সি নামানোর কথা ঘোষণা করতেই বৈঠক করেন পরিবহণ দফতরের কর্তারা। এআইটিইউসি অনুমোদিত কলকাতা ট্যাক্সি অপারেটর্স কো—অর্ডিনেশন কমিটির আহ্বায়ক নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, “চালকদের পরিস্থিতি খুব খারাপ। আমরা সরকারকে তাঁদের জন্য প্যাকেজ করার আবেদন জানিয়েছি। তবে সরকার যদি ট্যাক্সি চালু করে জরুরি পরিষেবার জন্য তবে চালকদের উপকারই হবে। আমরা এবিষয়ে ধন্যবাদ জানাচ্ছি মুখ্যমন্ত্রীকে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.