স্টাফ রিপোর্টার: আগেরবার যে পরিমাণ জমিতে চাষ হয়েছিল, এবার তার থেকে কম জমিতে চাষ করছেন চাষিরা। সিঙ্গুর নিয়ে এমনই তথ্য দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, কৃষকদের পাশে রাজ্য সরকার সবসময় আছে। কিন্তু জোর করে কাউকে দিয়ে চাষ করাতে পারব না। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৩৩৬৮৭ শূন্যপদ পূরণে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। ১৮৬২৭টি পদ অসংরক্ষিত।
বুধবার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে উঠে আসে সিঙ্গুরের ইচ্ছুক ও অনিচ্ছুক কৃষকদের প্রসঙ্গ। কত ইচ্ছুক ও অনিচ্ছুক রয়েছেন, সেই প্রশ্ন তোলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান। প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “৯৯৭ একরের মধ্যে ৯৫৫ একরের একটু বেশি জমি ফেরত দেওয়া হয়েছে চাষিদের। ৪১.২১ একর জমির মালিককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ১৩৩৩০ জন মোট চাষি। এর মধ্যে ইচ্ছুক চাষি ৯৩৭৩ জন। তাঁদের জমির পরিমাণ ৭০২.৫১ একর। অনিচ্ছুক চাষি ৩৭১৬ জন। তাদের জমির পরিমাণ ২৯৩.৬ একর।” রাজ্য সরকার চাষিদের পাশে সবসময় আছে, বিভিন্নভাবে তাঁদের সাহায্য করা হচ্ছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সিঙ্গুরে চাষ করার ক্ষেত্রে চাষিদের একটা অনীহা লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে তথ্য উঠে এসেছে।
যে প্রসঙ্গ উল্লেখ করেই মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে দাঁড়িয়ে বলেন, “৯৫৫ একরের মধ্যে ৬৪১ একর জমিতে চাষ করা হয়েছিল। পরের বছর ২৪১ একর জমিতে চাষিরা চাষ করেন। আগের বছর যাঁরা চাষ করেছিলেন, পরের বছর তাঁদের মধ্যে অনেকেই চাষ করেননি।” এখানেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “চাষিদের পাশে সরকার আছে। আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছি। কিন্তু জোর করে কাউকে দিয়ে চাষ করাতে পারব না।”
চাষিদের মধ্যে কেউ কেউ জমি বিক্রি করেও দিচ্ছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। মমতার বক্তব্য, “যাঁরা জমি বিক্রি করে দিচ্ছেন, সম্পূর্ণভাবে তাঁদের নিজস্ব ব্যাপার।” সিঙ্গুরে জমির আসল মালিক কেউ থেকে থাকলে, তিনি যদি টাকা না পেয়ে থাকেন, তাহলে তাঁকে কাগজপত্র নিয়ে বিএলআরও অফিসে আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে তিনি এও বলেন, “৪১ একর জমির মালিক নেই। কেউ দাবি করেনি। বিএলআরওকে বলা হয়েছে খুঁজে দেখতে। না হলে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ ওইরকমভাবে দীর্ঘদিন জমি পড়ে থাকতে পারে না।” পাশাপাশি কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভাকে জানান, সিঙ্গুরে ধান, গম, আলু, কলা, ভুট্টা উৎপাদিত হয়েছে।
সিঙ্গুর ছাড়াও এদিন বিধানসভায় একাধিক দপ্তরের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে বছরে পাঁচ হাজার টাকা করে সাহায্য করা হবে। রাজ্যে ৯.৬৯ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। তার মধ্যে মহিলা পরিচালিত ৯৮ শতাংশই। যারা এক বছরের বেশি তালিকায় রয়েছে, সেই সমস্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে পাঁচ হাজার টাকা করে সাহায্য করা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.