ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণের জেরে রাজ্যের রেশনে নিখরচায় চাল-ডাল দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে কাজিয়া শুরু হয়ে গেল। এক মাস পার হওয়ার পরও এ রাজ্যে কেন কেন্দ্রীয় কর্মসূচি চালু হল না, তা জানতে চাইল কেন্দ্র। পালটা রাজ্যের খাদ্য দপ্তর জানিয়ে দিল, ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া থেকে খাদ্যসামগ্রী পেলেই কর্মসূচি শুরু হবে। রাজ্যের পাশাপাশি দেশের গরিব মানুষের হাতে বিনামূল্যে রেশনের ডালি তুলে দিচ্ছে এবার কেন্দ্রীয় সরকারও। কেন্দ্রের দাবি, এই কর্মসূচিতে দেশের অন্তত ৮০ কোটি গরিব মানুষের কাছে নিখরচায় চাল-ডাল দেওয়া যাবে। লকডাউনের সময় যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী রামবিলাস পাসওয়ান ভিডিও কনফারেন্সে রাজ্যের খাদ্যসচিব মনোজ আগরওয়ালকে চেপে ধরার পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। পাসওয়ান জানতে চান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করতে দেরি করছে কেন পশ্চিমবঙ্গ? লকডাউনের আবহে নিখরচায় ছ’মাসের রেশন দিচ্ছে রাজ্য। একইভাবে প্রধানমন্ত্রী ‘গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা’কর্মসূচিতে প্রতি মাসে মাথাপিছু পাঁচ কেজি চাল এবং পরিবার পিছু মাসে এক কেজি করে ডাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সম্প্রতি এই নিয়ে রাজ্যগুলির কাছে চিঠিও পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রকের আন্ডার সেক্রেটারি অভয়কুমার। চিঠিতে বলা হয়েছে, জাতীয় খাদ্যসুরক্ষা মিশন প্রকল্পের আওতায় দেশের ‘অন্নপূর্ণা অন্ত্যোদয় যোজনা’ এবং পিএইচএইচ প্রকল্পে থাকা উপভোক্তারা এই সুবিধা পাবেন।
শুধুমাত্র চিঠি দিয়েই থেমে থাকেনি কেন্দ্র। এই প্রকল্প কতটা এগিয়েছে তা হাতেকলমে জেনে নিতে রাজ্যগুলির খাদ্য দপ্তরের প্রধান সচিবদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান। মঙ্গলবার ভিডিও কনফারেন্সে খাদ্য দপ্তরের প্রধানসচিব মনোজ আগরওয়ালের কাছেও বিস্তারিত তথ্য নেন।দ্রুত কর্মসূচি শুরু করতে নির্দেশ দেন। পরে প্রধান সচিব বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দ্রুত এই প্রকল্প অনুযায়ী চাল-ডাল নিখরচায় যাতে দেওয়া হয় তার জন্য পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।” প্রধান সচিবের কথায়, এই প্রকল্প সফল করার জন্য তিনি ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দিয়েছেন। দপ্তরের আরেক শীর্ষকর্তার কথায়, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের জন্য প্রতি মাসে অন্তত তিন লক্ষ মেট্রিক টন চাল এবং ১৪.৮ হাজার মেট্রিক টন ডালের প্রয়োজন হবে। ফুড কর্পোরেশনের কাছে এখন মজুত রয়েছে ১৩ হাজার মেট্রিক টন চাল। কেন্দ্রের গোডাউনে কত ডাল মজুত রয়েছে, তা জেনেই দ্রুত কাজ শুরু হবে।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় গণবণ্টন মন্ত্রক থেকে এই প্রকল্প চালু করার জন্য সব রাজ্যের কাছে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়। রাজ্যের খাদ্য দপ্তরের তরফে মুগ, মসুর ডাল নিখরচায় দেওয়ার আবেদন করা হয়। পাশাপাশি অন্নপূর্ণা অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনা এবং পিএইচএইচ তালিকভুক্ত উপভোক্তার সংখ্যাও জানতে চাওয়া হয়। তবে ঘটনা হল, রাজ্যে খাদ্য দপ্তর ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া থেকে চাল সংগ্রহ না করে সরাসরি রাজ্যের চাষিদের থেকেই চাল কিনছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.