সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেলেঘাটায় শিশুহত্যা কাণ্ডে যতই মুখ খুলছে অভিযুক্ত মা, ততই খুলছে রহস্যের জট। সন্তান জন্মের দু’বছর আগে সে গর্ভপাত করায় বলে জেরায় স্বীকার করে অভিযুক্ত। আর্থিক অনটন নাকি সন্তানধারণে অনীহা থেকেই গর্ভপাত করানোর সিদ্ধান্ত, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঘটনার চার্জশিট পেশের কথা ভাবছে পুলিশ।
গত ২৬ জানুয়ারি আচমকাই শহরে শোরগোল পড়ে যায়। শিরোনামে চলে আসে বেলেঘাটার মল্লার আবাসন থেকে মাত্র দু’মাসের শিশুকন্যাকে ‘অপহরণের’ ঘটনা। শিশুর মা সন্ধ্যা মালো জৈন দাবি করে, মারধর করে তার হাত থেকেই কেউ ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছে সন্তানকে। মাকে জেরা করে পুলিশ। যদিও টানা জেরায় ভেঙে পড়ে ওই মহিলা। সে স্বীকার করে নেয়, দু’সপ্তাহ ধরে পরিকল্পনা করে সন্তানকে খুনের পর সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দিয়েছে। মাত্র ১৫ মিনিটে সন্তানকে খুন করার পদ্ধতি শুনে চোখ কপালে ওঠে পুলিশের। তদন্তকারীদের কাছে সন্ধ্যা স্বীকার করে পরিজন এবং পরিচারিকার নজর এড়িয়ে নিজের মেয়ের কান্না থামাতে মুখে সেলোটেপ আটকে নৃশংসভাবে খুন করে একরত্তিকে। এরপরই নিজের দোষ ঢাকতে অপহরণের নাটক করে। যদিও তাতে শেষরক্ষা হয়নি। পুলিশি জেরায় অপরাধ কবুল করতে বাধ্য হয় সে।
কেন এমন কাজ করল সন্ধ্যা? নিজের দুধের সন্তানকে কেউ এভাবে খুন করতে পারে? একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমনই একাধিক প্রশ্নের ভিড়। মনোবিদদের মতে, সন্তান জন্ম দেওয়ার পর অনেক মা মানসিক অবসাদে ভোগেন। তার জেরেই হয়তো নিজের মেয়েকে নৃশংসভাবে খুন করতে পারে সন্ধ্যা। যদিও ধৃতকে জেরায় উঠে আসা তথ্য অবাক করে দিয়েছে আধিকারিককে। পুলিশ সূত্রে খবর, বিয়ের আগে থেকেই হরিয়ানার এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল সন্ধ্যার। বিয়ের পরেও সম্পর্কে ছেদ পড়েনি। তার সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখত ওই গৃহবধূ। সন্তানকে খুনের নেপথ্যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়াও সন্ধ্যার দাবি, কন্যাসন্তান জন্মের আগেও অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিল সন্ধ্যা। তবে পরিবারের আর্থিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি দেখে বছর দুয়েক আগে গর্ভপাতও করায় সে। সত্যি আর্থিক অনটন নাকি সন্তানধারণে অনীহার কারণে গর্ভপাত, তা বোঝার চেষ্টা করছে পুলিশ।
এই ঘটনায় বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত চার্জশিট পেশের চেষ্টা করছে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঘটনার পুনর্নির্মাণ করার উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.