সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেলেঘাটা কাণ্ডের তদন্তে নেমে অভিযুক্তকে জেরা শুরু করতেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এসছে তদন্তকারী আধিকারিকদের। আগেই জেরায় গর্ভপাতের কথা স্বীকার করেছিল সন্ধ্যা। তার পিছনে লুকিয়ে থাকা কারণ খুঁজতে গিয়ে প্রকাশ্যে নয়া তথ্য। আর সেই কারণেই সন্তানধারণে অনীহা জন্মেছিল অভিযুক্তের, মনে করছে তদন্তকারীরা।
তদন্তে জানা গিয়েছে, বছর দুয়েক আগে গর্ভধারণ করার পর খুশিতে ছিলেন সন্ধ্যা। সন্তানকে নিয়ে বিভিন্নরকম স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। কিন্তু সেই সময় আচমকাই তাঁদের আর্থিক সমস্যা দেখা দেয়। সেই কারণেই পরিবারের তরফে সন্ধ্যাকে জানানো হয় যে, এই সন্তান সে জন্ম দিতে পারবে না। বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি সে। কিন্তু পরিবারের চাপে পড়েই গর্ভপাত করতে বাধ্য হয়েছিল। অভিযুক্তের মায়ের কথায়, ওই ঘটনার পর ভেঙে পড়েছিল সন্ধ্যা। কাউকে কিছু না বলতে পারলেও গর্ভপাতের পর থেকেই অবসাদে ভুগতে শুরু করে। তবে কি জোর পূর্বক গর্ভপাতের কারণেই তৃতীয় সন্তানকে মেনে নিতে পারেনি ওই বধূ ? সেই কারণেই খুনের ছক? যদিও আদতেই অনটনে গর্ভপাত ও তাঁর জেরে সন্তান ধারণে অনীহা কি না, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি তদন্তকারীরা। তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বধূর পরিবারের সদস্যদের।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২৬ জানুয়ারি। এদিন আচমকাই শহরে শোরগোল পড়ে যায়। শিরোনামে চলে আসে বেলেঘাটার মল্লার আবাসন থেকে মাত্র দু’মাসের শিশুকন্যাকে ‘অপহরণের’ ঘটনা। শিশুর মা সন্ধ্যা মালো জৈন দাবি করে, মারধর করে তার হাত থেকেই কেউ ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছে সন্তানকে। মাকে জেরা করে পুলিশ। যদিও টানা জেরায় ভেঙে পড়ে ওই মহিলা। সে স্বীকার করে নেয়, দু’সপ্তাহ ধরে পরিকল্পনা করে সন্তানকে খুনের পর সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দিয়েছে। মাত্র ১৫ মিনিটে সন্তানকে খুন করার পদ্ধতি শুনে চোখ কপালে ওঠে পুলিশের। তদন্তকারীদের কাছে সন্ধ্যা স্বীকার করে পরিজন এবং পরিচারিকার নজর এড়িয়ে নিজের মেয়ের কান্না থামাতে মুখে সেলোটেপ আটকে নৃশংসভাবে খুন করে একরত্তিকে। এরপরই নিজের দোষ ঢাকতে অপহরণের নাটক করে। যদিও তাতে শেষরক্ষা হয়নি। পুলিশি জেরায় অপরাধ কবুল করতে বাধ্য হয় সে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.