Advertisement
Advertisement

Breaking News

St Xaviers University

কলকাতায় প্রথম AI কোর্স সেন্ট জেভিয়ার্সে, ক্যাম্পাসেই বিমানের ভিতর এভিয়েশনের ক্লাসরুম!

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে স্নাতক আর স্নাতকোত্তর কোর্স পড়ানো হবে।

St Xaviers University of Kolkata set to start AI course | Sangbad Pratidin
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:February 18, 2023 11:04 am
  • Updated:February 18, 2023 11:48 am  

অভিরূপ দাস: গানের সুরটুকু মাথায় আছে। মনে নেই একটি লাইনও। গুগলে স্রেফ সুরটা গুনগুন করতেই চলে এল গোটা গানটা। জানেন কী আছে এর নেপথ্যে? আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের কলকাঠি। যা শেখা যাবে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ব‌বিদ‌্যালয়ে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা ‘এআই’ নিয়ে স্নাতক আর স্নাতকোত্তর। দুই কোর্সই শুরু করতে চলেছে কর্তৃপক্ষ। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিশ্ববিদ‌্যালয়ের উপাচার্য ড. ফাদার জন ফেলিক্স রাজ।

দুনিয়াজুড়ে আলোচনা যন্ত্রের বুদ্ধি নিয়ে। তাবড় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী দিনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শাসন করবে জগৎ। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে ব‌্যবহার করে ব‌্যবসা উঠছে ফুলেফেঁপে। যে গতিতে পৃথিবী এগিয়ে চলেছে সেই প্রেক্ষিতে এ বিষয়ের পারদর্শীদের দুনিয়াজোড়া কদর। স্বাভাবিকভাবেই সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ‌্যালয়ের নতুন কোর্স নিয়ে ব‌্যাগ্রতা বিপুল। কোর্স পাস করে বেরোলেই টানাটানি পড়বে একাধিক সংস্থার। ডেটা অ‌্যানালিস্ট থেকে বৈজ্ঞানিক গবেষক কিংবা বিজনেস ইন্টেলিজেন্স ডেভলপার। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্বন্ধে যোগ‌্য জ্ঞান থাকলে চাকরির কমতি নেই। পৃথিবীর সব থেকে বুদ্ধিমান মানুষের বুদ্ধির সীমাবদ্ধতা নিয়েও আলোচনা কম নেই। মস্তিষ্কের কত শতাংশ আমরা ব্যবহার করছি, কতটুকুই বা করতে পারি তা নিয়ে চর্চা বিস্তর। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শেখাবে কীভাবে যন্ত্রের মধ্যে বুদ্ধি যোগ করে দিতে হয়।

Advertisement

উদ্বোধন হওয়ার মুখে নিউটাউনে সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ‌্যালয়ের নতুন একটি বিল্ডিং। শিগগিরি তার দরজা খুললেই শুরু হবে পঠনপাঠন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পাশাপাশি রোবোটিকস এবং অসামরিক বিমান চালানোর খুঁটিনাটি শেখানোর কোর্সও চালু হতে চলেছে সেন্ট জেভিয়ার্সে। বিশ্ববিদ‌্যালয় চত্বরে এয়ারক্র‌্যাফটের ভিতরে হবে এভিয়েশনের ক্লাস। উত্তরোত্তর বাড়ছে বিশ্ববিদ‌্যালয়ের ছাত্র সংখ‌্যা। বিশ্ববিদ‌্যালয়ের উপাচার্য ফাদার ফেলিক্স রাজ জানিয়েছেন, ‘‘দেশের যে কোনও নামজাদা, সুবিদিত প্রতিষ্ঠানে যান। একজন না একজন ‘জাভেরিয়ান’-এর সঙ্গে ধাক্কা লাগবেই।’’ এমনই যশ-খ‌্যাতি এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। এহেন সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ‌্যালয় বাড়তে চলেছে বহরে। উপাচার্য জন ফেলিক্স রাজের কথায়, আপাতত ১৭ একর জমির উপর বিশ্ববিদ‌্যালয়। কিন্তু একাধিক নতুন কোর্স শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। মুখ‌্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায় কথা দিয়েছেন, শিক্ষা প্রসারে জমির অভাব হবে না। এখনও পর্যন্ত ৪২০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে বিশ্ববিদ‌্যালয় গড়তে। একাধিক শিল্পপতি, যাঁরা সেন্ট জেভিয়ার্সের প্রাক্তনী। বাড়িয়ে দিয়েছেন সাহায্যের হাত। তাঁদের নামাঙ্কিত ফলক রয়েছে সংশ্লিষ্ট বিল্ডিংয়ের সামনে। ‘‘মানুষ জানুক কারা আমাদের সাহায‌্য করেছে। তা দেখে আরও মানুষ এগিয়ে আসুক।’’ জানিয়েছেন উপাচার্য। ১৩০ জন অধ‌্যাপক রয়েছেন বিশ্ববিদ‌্যালয়ে। ৯০ জন নন টিচিং স্টাফ। বিশ্ববিদ‌্যালয়ে কুড়িজন ছাত্র-ছাত্রী পিছু একজন অধ‌্যাপক।

[আরও পড়ুন: দরিদ্র প্রমাণের মরিয়া চেষ্টা! কোটি কোটি লেনদেনের মাথা ‘সৎ রঞ্জনে’র পকেটে মাত্র ২০৩ টাকা]

স্রেফ ম‌্যানেজম‌েন্ট অথবা বিটেক করলেই ক‌্যাম্পাসিং। বাকিদের ভিড়ে গুঁতোগুঁতি করতে হবে। চিরাচরিত ধারণায় জল ঢেলেছে সেন্ট জেভিয়ার্স। সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তো বটেই। সেন্ট জেভিয়ার্সের অগুনতি প্রাক্তনী সফল উদ্যোগপতি। উপাচার্য জানিয়েছেন, এখানকার ছাত্র-ছাত্রীদের কর্মসংস্থানে সমস‌্যা নেই। আর শুধু চাকরি কেন? স্টার্ট আপে উৎসাহ দিচ্ছে সম্ভ্রান্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। চাকরি না পেলে জীবন বৃথা নয়, বরং এমন জায়গায় নিজেকে নিয়ে যাও যে পাঁচজনকে চাকরি দিতে পারো। ছাত্র-ছাত্রীদের তেমনই মতাদর্শে দীক্ষিত করছে সেন্ট জেভিয়ার্স। তার জন‌্য তৈরি হয়েছে ‘সেন্টার ফর ইনকিউবেশন অ‌্যান্ড কনসালেটেন্সি অ‌্যান্ড এন্টারপ্রেনারশিপ।’ এ রাজ্যের উদ্যোগপতিদের বিশ্ববিদ‌্যালয়ে নিয়ে আসছেন কর্তৃপক্ষ। ছাত্র-ছাত্রীদের তাঁরা ধারণাশক্তি দিচ্ছেন। কীভাবে শান দেওয়া যায় ব‌্যবসার আক্কেলে।

বাংলা থেকে মেধা বাইরে চলে যাচ্ছে। এমন অভিযোগকে কুঠারাঘাত করছে সেন্ট জেভিয়ার্স। উপাচার্য ফাদার ফেলিক্স রাজের বক্তব‌্য, ‘‘খোদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও লন্ডনে গিয়েছিলেন পড়তে। উলটোদিকটাও দেখবেন। বাইরের রাজ‌্য থেকেও বাংলায় প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী আসছে পড়তে।’’ এই মুহূর্তে তামিলনাড়ু, কেরল, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, দিল্লি থেকে অগুনতি ছাত্র-ছাত্রী এসেছেন সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ‌্যালয়ে। একাধিক কোর্সের মধ্যে তাঁদের পাখির চোখ মাস কমিউনিকেশন আর সেন্ট জেভিয়ার্স ল স্কুল।

মাস কমিউনিকেশনে তিন বছরের গ্র‌্যাজুয়েশন। দু’বছরের পোস্ট গ্র‌্যাজুয়েশন কোর্স। এই কোর্সে শর্ট ফিল্ম, ভিডিও বানাতে শেখানো হয় হাতেকলমে। সুযোগ পাওয়া সহজ নয়। রয়েছে মাত্র ৬০টি আসন। উপাচার্য জানিয়েছেন, লিখিত পরীক্ষার মাধ‌্যমে ছাঁকনির মতো ছেঁকে সেরাদের সুযোগ দেওয়া হয়। প্রতিবছর ১৩০টি চলচ্চিত্র তৈরি করেন সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ‌্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা। সত‌্যজিৎ রায় ফিল্ম অ‌্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট এবং এডুকেশনাল মাল্টিমিডিয়া অ‌্যান্ড রিসার্চ সেন্টার যৌথভাবে এই সিনেমাগুলি তৈরি করে।

[আরও পড়ুন: বোমা রয়েছে যোগী আদিত্যনাথের বাড়িতে! হুমকি ফোন ঘিরে আতঙ্ক, বাড়ল নিরাপত্তা]

অন‌্যদিকে সেন্ট জেভিয়ার্স ল স্কুলে পাঁচ বছরের কোর্স। দেশের অন‌্যতম সেরা ফ‌্যাকাল্টি রয়েছে এই ল স্কুলে। চারটে করে সেকশন। শীঘ্রই শুরু হচ্ছে বিএ ইন এলএলবি। এই ল স্কুলে সুযোগ পেতে হলে সেন্ট জেভিয়ার্সের নিজস্ব লিখিত পরীক্ষায় পাস করতে হয়। যার নাম জেভিয়ার্স ল এলিজিবিলিটি টেস্ট। পাঁচ বছরের কোর্সে চারটে করে সেকশন। চাহিদা তুঙ্গে! উপাচার্যর কথায়, দেশের এমন কোনও আদালত নেই যে যেখানে সেন্ট জেভিয়ার্সের একজন আইনজীবী নেই। সমস্ত বিষয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের তুখড় করে তুলতে বইয়ে ঠাসা লাইব্রেরি বানিয়েছে সেন্ট জেভিয়ার্স। ফাদার ফেলিক্স রাজের আক্ষেপ, ইন্টারনেটে ওয়াইফাই-তে মশগুল ছাত্র-ছাত্রী লাইব্রেরিতে কম যাচ্ছে। তাঁদের জন‌্য উপাচার্যর আদেশ, সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীকে প্রতিদিন একবার অন্তত লাইব্রেরিতে যেতেই হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement