Advertisement
Advertisement

Breaking News

হৃদ স্পন্দনের তালে হেঁচকি, ওপার বাংলার যুবকের প্রাণ বাঁচাল এসএসকেএম

মিনিটে ৭০ থেকে ৭২ বার হেঁচকি!

SSKM saves the life of Youth
Published by: Tanumoy Ghosal
  • Posted:December 13, 2018 9:03 am
  • Updated:December 13, 2018 9:03 am  

গৌতম ব্রহ্ম: মিনিটে ৭০ থেকে ৭২ বার! কার্যত নাড়ির স্পন্দনের তালে তালে হেঁচকি! ফল যা হওয়ার তা-ই। নাওয়া-খাওয়া ঘুম সব শিকেয়। সারাক্ষণ যেন রোলার কোস্টারে চড়ে থাকতেন কে এম হাসিবুল। দিনে ১১ ঘণ্টা হেঁচকি উঠলে যা হয়। অথচ ছেলেটি গিটার বাজিয়ে গান গাইতেন। ভালবাসতেন বন্ধুদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা। হেঁচকির হামলায় সব বন্ধ। এমনকী চলে গিয়েছিল চাকরিটিও। ডাক্তার-বদ্যি-হাকিম কম হয়নি। জল পড়া, তেল পড়া, তাবিজ-কবজও হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শুধু সময় আর অর্থ নষ্ট হয়েছে। চব্বিশ বছরের তরতাজা যুবকের জীবন থেকে হারিয়ে গিয়েছে মূল্যবান পাঁচ-পাঁচটা বছর। খরচ হয়েছে ৩ লক্ষেরও বেশি টাকা। অবশেষে এপারে এসে শাপমুক্তি। কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের ‘ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রি’ সারিয়ে তুলল হাসিবুলকে।

[ তরুণীকে কটুক্তি মদ্যপ যুবকদের, প্রতিবাদ করায় আক্রান্ত হবু স্বামী]

Advertisement

হাসিবুলের বাড়ি বাংলাদেশের গোপালগঞ্জে। বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের জন্ম এখানেই। ‘আইওপি’-র নতুন সাইকিয়াট্রিক বিল্ডিংয়ের মেল ওয়ার্ডে বসে একটানা নিজের গল্প বলছিলেন হাসিবুল। জানালেন, “খুব ভয়ংকর ছিল সেই সব দিন। হেঁচকি তুলতে তুলতে বুক-পিঠ ব্যথা হয়ে যেত। রাতে ঘুমোতে পারতাম না। খেতে পারতাম না। বেঁচে থাকাটা বোঝা হয়ে গিয়েছিল।” হাসিবুল আরও বলেন, “অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। জেনারেল মেডিসিন, গ্যাসট্রো এন্টেরোলজিস্ট, নিউরোলজিস্ট, এমনকী সাইকিয়াট্রিস্টও। কেউ আশার আলো দেখাতে পারেনি। বরং আমায় হতাশ করেছেন। বলার চেষ্টা করেছেন, এটা অত্যন্ত বিরলতম রোগ। মেডিক্যাল কাব্যে এর কোনও উল্লেখ নেই। সুতরাং চিকিৎসাও নেই।” অবশেষে এক ‘ডাক্তারকাকু’-র পরামর্শে দাদা আনিচুর রহমানের সঙ্গে কলকাতায় আসেন হাসিবুল। ‘আইওপি’-তে ডা. প্রদীপকুমার সাহাকে দেখান। তিনি হাসিবুলকে ভরতি হতে বলেন। হাসিবুল জানালেন, “দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল। তাই প্রদীপবাবুর কথায় রাজি হয়ে যাই। এখন আমি অনেক সুস্থ। শুধু দুপুরে ও রাতে খাবার পর হেঁচকি ওঠে। তাও খুব সামান্য। ডাক্তারবাবু বলেছে ওটাও ঠিক হয়ে যাবে।”

অনেকে অবশ্য হাসিবুলের রোগের সঙ্গে ‘ট্যুরেট সিন্ড্রোম’-এর মিল পেয়েছেন। রানি মুখোপাধ্যায় অভিনীত ‘হিঁচকি’ সিনেমা এই রোগ নিয়েই। সাধারণত, আঠারো বছরের আগেই এই রোগ ডানা মেলে। যদিও প্রদীপবাবু জানিয়েছেন, এটা ট্যুরেট নয়। ট্যুরেট-এ এত ঘনঘন হেঁচকি ওঠে না। পাভলভ হাসপাতালের সাইকিয়াট্রিস্ট ডা. শর্মিলা সরকারও জানালেন, “এত বেশি হেঁচকি ওঠা রোগী দেখিনি। এটা এক ধরনের বিরল সাইকোজেনিক মুভমেন্ট ডিসঅর্ডার।” ৮ অক্টোবর আইওপি-তে চিকিৎসা শুরু হয় হাসিবুলের। একদিকে ওষুধ, অন্যদিকে কাউন্সেলিং। প্রদীপবাবু জানালেন, হাসিবুল ‘পারসিসটেন্ট হিকক্যাপ উইথ অ্যাবনর্মাল মুভমেন্ট ডিস অর্ডার’-এ আক্রান্ত। চিকিৎসা করালে এই রোগ সেরে যায়। হাসিবুলও ৭০ শতাংশ ভাল হয়ে গিয়েছেন। আর কয়েকদিন পর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবেন।”

[শনিবার রাত থেকে ২০ ঘণ্টা বারাসত ও মধ্যমগ্রামের মাঝে বন্ধ থাকবে ট্রেন চলাচল]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement