গৌতম ব্রহ্ম: ‘আমি এখন হাঁটতে পারি, খেলতে পারি। দৌড়তেও পারি।’ আধো আধো গলায় কথাগুলো বলছিল চার বছরের অদ্রীশ। অদ্রীশ পাল। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) পাথরপ্রতিমায়। সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত শিশুটি হাঁটাচলা করতে পারত না। প্রায় তিন বছর ন’মাস পর্যন্ত বাবা-মায়ের কোলে কোলেই বড় হয়েছে। পায়ের পেশিতে গুরুতর সমস্যা থাকায় এই স্থবিরতা। সেই শিশুকেই সঠিকভাবে পরীক্ষা করে এক ওষুধেই চাঙ্গা করে তুলল এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালের ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ (PMR)।
সম্প্রতি অদ্রীশ বাবার সঙ্গে পিজিতে আসেন শারীরিক পরীক্ষার জন্য। সেই সময় অদ্রীশের বাবা সুভাষচন্দ্র পাল বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. রাজেশ প্রামাণিককে সুখবরটি শোনান। বলেন, অদ্রীশ এখন কারও সাহায্য না নিয়েই হাঁটতে পারছে। রাজেশবাবু অদ্রীশকে কাছে ডাকেন। বাবার কাছ থেকে টলমল পায়ে হেঁটে ডাক্তারবাবুর কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ে অদ্রীশ। তার কথায়, ‘‘এখন আমি হাঁটতে পারছি। হেঁটে হেঁটে খেলতে পারছি।’’
অদ্রীশকে হাঁটি হাঁটি পা পা দেখে খুব খুশি রাজেশবাবু। অদ্রীশকে আদর করতে করতে বললেন, ‘‘২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর অদ্রীশকে পিএমআর বিভাগে ভরতি করা হয়েছিল। সাতদিন চিকিৎসা চলেছিল। বটুলিনাম টক্সিন নামে ৪০ হাজার টাকা দামের একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল অদ্রীশকে। একটা ডোজেই কাজ হয়েছে। তিন মাস হল অদ্রীশ হাঁটছে।’’ রাজেশবাবুর দাবি, এমন অনেক রোগীই তাঁদের পিএমআর ক্লিনিকে এসে সুস্থ হচ্ছেন। নতুন জীবন পাচ্ছেন। অঙ্কোলজি, স্ট্রোকের রোগী, সবারই পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করছেন রাজেশবাবুরা।
পিজির পাশাপাশি শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালেও চালু হয়েছে পিএমআর-এর আলাদা বিভাগ। তৈরি হচ্ছে ৭৫ বেডের ওয়ার্ড। যেখানে অদ্রীশের মতো শিশুদের জন্য ১৪টি বেড নির্দিষ্ট করা থাকছে। রাজেশবাবু জানালেন, ‘‘শুধু ওষুধ বা ইঞ্জেকশনে পুরোপুরি সুস্থতা আসে না। সঙ্গে চাই বিজ্ঞানসম্মত ব্যয়াম, ফিজিওথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি, স্পিচ থেরাপি, অর্থো-স্পাইন সাপোর্ট। এই দুটো বিষয়কে একসূত্রে বেঁধেছে পিএমআর।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.