Advertisement
Advertisement
SSKM Hospital

সরকারি হাসপাতালে প্রথম রোটেশনপ্লাস্টি! ক‌্যানসার রোগীর প্রাণ বাঁচিয়ে দৃষ্টান্ত SSKM-এর

এই অপারেশনের ফলে একটি পা ছোট হয়ে গিয়েছে কিশোরের।

SSKM conducts rotationplasty, first time as government hospital | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:October 31, 2022 1:56 pm
  • Updated:October 31, 2022 2:02 pm  

ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: প্রায় এক দশকের জড়তার বাঁধ ভাঙল এসএসকেএম হাসপাতালের (SSKM Hospital) অর্থোপেডিক বিভাগ! ক‌্যানসার (Cancer) আক্রান্ত ১৪ বছরের এক কিশোরের পা কেটে ফের তা জুড়ে দিল। তবে গোড়ালিটা সামনে চলে এল! চিকিৎসা পরিভাষায় এমন অস্ত্রোপচারকে বলে রোটেশনপ্লাস্টি।

মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) থেকে ছেলে রজতকে নিয়ে অবনী রায় যখন কলকাতায় এলেন ভরসা বলতে একটা নাম পিজি হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগ। আউটডোরে ২ টাকার টিকিট কেটে বেলা দুটো নাগাদ ছেলের বাঁ পা দেখাতেই প্রথমেই এক্স-রে (X-ray) করতে বললেন। এক্স-রে করিয়ে আনতেই রাশভারী ডাক্তারবাবু বললেন, ‘‘রোগ বড় জটিল। সারাতে অপারেশন করতে হবে।” ছেলে ভরতি হল। দুটো কেমোথেরাপি হল। তারপর টানা পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় অস্ত্রোপচার করা হল। কিন্তু অপারেশনের পর এ কী? ছেলের বাঁ পায়ের গোড়ালি সামনে চলে এসেছে। পাও অনেক ছোট! এটা কেমন করে হল? জ্ঞান ফিরে কিশোর রজত প্রথমে খানিক ঘাবড়ে গেল। পরে বলল, ‘‘এ যে ভূতের পা!’’ সামনে দাঁড়ানো তিন চিকিৎসকও হেসে ফেললেন তার কথা শুনে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ছুটির দিনে গুজরাটের মোরবি ব্রিজ দেখতে যাওয়াই কাল, প্রাণ গেল বাংলার যুবকের]

বস্তুত রাজ্যের কোনও সরকারি হাসপাতালে এমন রেটোশনপ্লাস্টি এই প্রথম। রোগীর প্রাণ বাঁচিয়ে নজির গড়ল এসএসকেএম হাসপাতাল। আবার এই একই পদ্ধতিতে দরকারে ছোট পা বড় করাও সম্ভব বলছেন বিভাগীয় চিকিৎসকরা। তবে পূর্ণবয়স্কর ক্ষেত্রে এমনটা সম্ভব নয়। মোদ্দা কথা, হাত-পায়ের অস্থিসন্ধিতে কোনও টিউমার (Tumour) থেকে ক‌্যানস‌ার হলে এমন অস্ত্রোপচার করে রোগীর প্রাণ বাঁচানো হয়। আর এসএসকেএম হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ‌্যাপক ডা. মুকুল ভট্টাচার্য এবং সহযোগী ডা. কৌশিক নন্দী সেই কাজটাই করেছেন।

ঘটনা হল বিশ্বে এমন অস্ত্রোপচার চালু হয় ২০১৮ সালে। কয়েক বছরের মধ্যেই এশিয়া তথা ভারতের মতো দেশগুলিতে এই পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার শুরু হলেও তা নির্দিষ্ট কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালেই সীমাবদ্ধ ছিল। মুকুলবাবুর কথায়, ‘‘রাজ্যের কোনও সরকারি হাসপাতালে এমন অস্ত্রোপচার এই প্রথম।” বস্তুত, চিকিৎসকদের সমাজমাধ‌্যমে এই খবর রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গেছে। ফলে রাজ্যের বিভিন্ন অংশ থেকে হাঁটু বা হাতের কনুইয়ের ক‌্যানসার রোগীদের অস্ত্রোপচারের ভিড় ক্রমশ বাড়ছে। বুধবার ও শুক্রবার এমন দু’টি অস্ত্রোপচার হবে এসএসকেএমে।

[আরও পড়ুন: ব্যথিত হৃদয় নিয়েই কর্তব্যের পথে এগিয়ে যেতে হবে, মোরবির ঘটনায় শোকপ্রকাশ মোদির]

মূলত, ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত কিশোর-কিশোরীর হাঁটু বা কনুইয়ে কোনও টিউমার হলে পরীক্ষা করে দেখা হয় ক‌্যানসার হয়েছে কি না। ক‌্যানসার হলে কোমর থেকে হাঁটু পর্যন্ত অংশ বাদ দেওয়া হয়। প্রায় একইসঙ্গে হাঁটু জুড়ে দেওয়া হয় কোমরের সঙ্গে। এর ফলে একটি পা ছোট হয়ে যায়। হাঁটাচলায় সমস‌্যা হয়। সেই সমস‌্যা মেটাতে ‘ওয়াকার’ ব‌্যবহার করতে হয় রোগীকে। কালীপুজোর (Kali Puja) আগেই বাড়ি ফিরে গিয়েছে রজত। বাঁ পায়ের গোড়ালি সামনের দিকে। তাতে কী? ক‌্যানসারকে জয় করেছে। এসএসকেএমের তরফে রজতকে এটাই বড় উপহার।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement