ছবি: প্রতীকী
স্টাফ রিপোর্টার: মহাজোট গড়ে আজ কলকাতার রাজপথে মহামিছিল করতে চলেছে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন বিভাগের চাকরিপ্রার্থীদের ৯টি মঞ্চ। কিন্তু, সরকারের উপর পূর্ণ আস্থা রেখে চাকরিপ্রার্থীদের দুটি সংগঠন এই মিছিলে শামিল হচ্ছে না। আবার মহাজোটে থেকে মহামিছিলে শামিল হলেও সরকারি বিরোধী নয়, সামনে থাকা ‘নতুন শত্রু’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বার্তা দিতে চলেছে আরেকটি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চ।
এসএসসি যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চ, কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষা’র তরফে সোমবারের মিছিল-সহ সরকার বিরোধী কোনও কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঞ্চের নেতৃস্থানীয় মাহাফুজুর রহমান বলেন, ‘‘আমাদের সরকারের উপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আমাদের কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। তাই আমরা সরকারি বিরোধী কোনও কর্মসূচিতে বা কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করব না।’’ এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার শিক্ষক পদে চাকরিপ্রার্থীদের রাজ্য সরকারের প্রতি আস্থা রেখে সোমবারের মহামিছিল ও সরকার বিরোধী অন্যান্য কর্মসূচি থেকে দূরে থাকতে অনুরোধ জানিয়েছেন মঞ্চের নেতৃত্বরা। সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মেও মঞ্চের তরফে এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা করা হয়েছে।
অন্যদিকে, এসএসসি মারফত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির চাকরিপ্রার্থীদের ‘বঙ্গীয় ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা মঞ্চ’ও শামিল হচ্ছে না এদিনের মহামিছিলে। মঞ্চের তরফে শহিদুল্লা ফেসবুকে ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, বহুদিন আন্দোলন, পথে নেমে লড়াইয়ের পর সরকার তথা দফতরের সঙ্গে আলোচনার রাস্তা খুলেছে। সেই আলোচনা দীর্ঘ হলেও সামগ্রিকভাবে সদর্থক। সেই প্রেক্ষাপটেই সোমবারের মিছিলে যোগদান না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শহিদুল্লা বলেন, ‘‘আমরা সোমবারের মিছিলে যোগদান করছি না। সরকার চাইছে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে আমাদের নিয়োগ করতে। তাই আমরা অহেতুক বলপ্রয়োগ করে সরকারকে বিব্রত করতে চাইছি না। এই মুহূর্তে সরকারের সদিচ্ছাকে সম্মান জানাচ্ছি। আমরা নিয়োগের স্বার্থেই এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করছি না।’’
এদিকে, অন্য আটটি সংগঠনের সঙ্গে যৌথভাবে পথে নামছে কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার পদপ্রার্থীদের অপর একটি মঞ্চ। তবে সরকার বিরোধী নয়, ভিন্ন বার্তা নিয়েই এই মিছিলে তাঁরা শামিল হবেন বলে মঞ্চের তরফে জানাচ্ছেন রাজু দাস। বলেন, ‘‘আমাদের লড়াইটা হবে বঞ্চনার বিরুদ্ধে। যেসব আইনজীবী, গুটিকয় রাজনৈতিক নেতারা এই বঞ্চনা করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে। আগের যে শত্রু ছিল তার সঙ্গে নয়, বর্তমানে সামনে যে শত্রু, তার সঙ্গেই লড়ব। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের লড়াই সরকারের বিরুদ্ধে নয়।’’
চাকরিপ্রার্থীদের মহাজোটে রয়েছে এসএসসির নবম-দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীদের যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চ, ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রোগ্রেসিভ নার্সিং ফোরাম, ২০১৪-র টেট পাশ ঐক্যমঞ্চ, ২০১৪ প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ প্রশিক্ষিত নন-ইনক্লুডেড একতা মঞ্চ, রাজ্য গ্রুপ-ডি চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চ, এসএসসির গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চ, মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন পাশ প্রার্থী মঞ্চ, ২০১৮-র কলেজ সার্ভিস কমিশন মেধাতালিকাভুক্ত চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চ। গত ১৫ ডিসেম্বর এই মহাজোটকে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করার অনুমতি দিয়েছে হাই কোর্ট। সোমবার বেলা ১২টায় শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেল পর্যন্ত যাবে ওই মিছিল।
২০১৪-র প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ প্রশিক্ষিত নন-ইনক্লুডেড একতা মঞ্চের তরফে অচিন্ত্য সামন্ত বলেন, ‘‘২০১১ সালে নবান্ন থেকে করা মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে সামনে রেখেই আমরা মিছিলে যোগ দিচ্ছি। আমরা চাই, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ। চাই আমাদের সঙ্গে বৈঠক করুন এবং আমাদের জন্য যে ঘোষণা করেছিলেন সেটা পূরণ করুন।’’ আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থী মঞ্চগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে আলোচনায় বসার অনুরোধ জানিয়ে মিছিলে অংশগ্রহণ করবেন মহাজোটের বাকি মঞ্চগুলির প্রতিনিধিরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.