Advertisement
Advertisement

Breaking News

SSC scam

ভাইকে টোপ, ভাতৃবধূর সই ‘জাল’, মানিকের কাণ্ডে হতবাক তদন্তকারীরা

নিজের ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার টোপ।

SSC scam: Manik Bhattaacharya duped brother and sister-in-law! | Sangbad Pratidin
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:December 9, 2022 7:54 pm
  • Updated:December 9, 2022 7:54 pm  

অর্ণব আইচ: নিজের ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার টোপ। সেই টোপ দিয়েই পাসপোর্ট করানোর নামে ভাই ও ভাতৃবধূর পরিচয়পত্রের কপি নিয়েছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। তাঁদের অজ্ঞাতেই নিয়োগ দুর্নীতির টাকা পাচার করতে ব্যাংক অ‌্যাকাউন্ট খোলেন মানিক। একইভাবে অন‌্য ভাই, এমনকী ছোটবেলার বন্ধুকেও কাজে লাগিয়ে দুর্নীতির টাকা পাচারের জন‌্য ব্যাংক অ‌্যাকউন্ট খোলেন মানিক ভট্টাচার্য। তাঁদের অ‌্যাকাউন্টের মাধ‌্যমে যে কত লাখ টাকা পাচার করা হয়েছে, তা তাঁরা জানতেন না কেউই! জিজ্ঞাসাবাদের সময় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকের কাছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য ও তাঁর ছেলে শৌভিকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন পরিজন ও আত্মীয়রাই।

ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তে দেখা যায়, মানিক ভট্টাচার্যের ভাইয়ের স্ত্রীর নামে একটি সরকারি ব্যাংকে ৬টি অ‌্যাকাউন্ট রয়েছে। এই ব‌্যাপারে এই মাসেই মানিকের ভাতৃবধূ, যিনি দক্ষিণ কলকাতার সন্তোষপুর এলাকার বাসিন্দা, তাঁকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। তদন্তকারীদের দাবি, তাঁর সামনে ৬টি ব্যাংক অ‌্যাকাউন্ট, যাতে রেকারিংয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা রাখা হয়েছে, সেগুলি সামনে আনা হয়। সেগুলি দেখে তিনি রীতিমতো আকাশ থেকে পড়েন। মহিলার দাবি, তিনি জানেনই না যে, কে বা কারা তাঁর হয়ে এই ব্যাংক অ‌্যাকাউন্টগুলি খুলেছেন। এ ছাড়াও দেখা যায়, গত ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল ওই অ‌্যাকাউন্টগুলির মধ্যে একটি থেকে চার দফায় মোট ২৭ লাখ ২৮ হাজার ৪০৯ টাকা তোলা হয়েছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: স্বস্তি শুভেন্দুর, হাই কোর্টের অনুমতি ছাড়া বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে করা যাবে না FIR]

মহিলা দাবি করেন, এই ক্ষেত্রে তাঁর সই জাল করা হয়েছে। কিন্তু কে তাঁর সই জাল করেছে, তা তিনি জানেন না। তিনি ইডি আধিকারিকদের জানান যে, ২০১১ সাল পর্যন্ত মানিক ভট্টাচার্য ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে সন্তোষপুরের বাসিন্দা ওই ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে ভাল সম্পর্ক ছিল। ২০১০ সালে মানিক ভট্টাচার্য তাঁর ওই ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার টোপ দিয়ে বলেন, পাসপোর্ট তৈরি করিয়ে দেওয়া হবে। তার জন‌্য তাঁদের প‌্যান কার্ড, আধার কার্ডের মতো পরিচয়পত্রের কপি নিয়ে নেওয়া হয়। তাতে তাঁদের সই ছিল। এ ছাড়াও পাসপোর্টের আবেদন করানোর নামে সাদা পাতায় সই করানো হয়। মানিক ও মানিকের ভাইয়ের স্ত্রীর দাবি, তাঁদের যাদবপুর এলাকার একটি ব্যাংকে জয়েন্ট অ‌্যাকাউন্ট ছিল। মানিক ভট্টাচার্য জোর করে তাঁদের কাছ থেকে ব্যাংকের পাসবই ও অন‌্যান‌্য নথি নিয়ে নেন। যদিও সন্দেহের বশে তাঁরা ওই অ‌্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়ে অন‌্য ব্যাংকে অ‌্যাকাউন্ট খোলেন।

মানিকের অন‌্য এক ভাই ইডির কাছে দাবি করেন যে, তাঁর বউদি শতরূপা ভট্টাচার্যর সঙ্গে তিনি জয়েন্ট অ‌্যাকাউন্ট খোলেন। অথচ পরে জানতে পারেন যে, ভাইপো শৌভিকের সঙ্গে একটি জয়েন্ট অ‌্যাকউন্ট তাঁর রয়েছে। অথচ তাঁর দাবি, তিনি ব্যাংকের নথিতে সই করে চলে যান। এর পর তাঁর সই বা নথি ব‌্যবহার করে কী করা হয়, তা তিনি জানেন না। তিনি কোনও টাকা ব্যাংক অ‌্যাকাউন্ট দু’টিতে রাখেননি বা তোলেননি বলে দাবি তাঁর।

মানিক ভট্টাচার্যের এক পুরনো বন্ধু, যিনি বর্ধমানের মধুপুর এলাকার বাসিন্দা ও মানিকের সঙ্গে আইন কলেজ পর্যন্ত একসঙ্গেই পড়েছেন, তাঁকে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের একটি সরকারি ব্যাংকে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই বন্ধুটি ইডিকে জানান, মানিক তাঁর পরিচয়পত্রর কপি নিয়ে কয়েকটি ব্যাংক নথিতে সই করতে বাধ‌্য করেন। কিন্তু অ‌্যাকাউন্ট সম্পর্কে কখনও কিছু জানানো হয়নি। ইডির কাছ থেকেই জানতে পারেন যে, মানিকের ছেলে শৌভিক ভট্টাচার্যর সঙ্গে তাঁর চারটি জয়েন্ট অ‌্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়েছে। সেই অ‌্যাকাউন্টগুলি মানিক ও শৌভিক নিয়ন্ত্রণ করতেন। ওই অ‌্যাকউন্টগুলির মাধ‌্যমেই কয়েক কোটি টাকা পাচার করা হয় বলে জানিয়েছে ইডি।

[আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতির ‘আঁতুড়ঘর’ SSC অফিস, হাই কোর্টে চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট সিবিআইয়ের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement