Advertisement
Advertisement
SSC Scam

মানিক ভট্টাচার্যের ছেলের অ্যাকাউন্টে কোটি-কোটি টাকা! আদালতে বিস্ফোরক ইডি

পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্ট থেকে মোটা টাকার লেনদেনের দাবি।

SSC Scam: ED claims in court 2.6 crore in Manik Bhattacharya's son account | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:October 11, 2022 7:18 pm
  • Updated:October 11, 2022 7:49 pm  

অর্ণব আইচ: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে (SSC Scam) ধৃত মানিক ভট্টাচার্যের ছেলের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকার পাহাড়। তাঁর পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্ট থেকে মোটা টাকার লেনদেন হয়েছে। এমনকী, নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানানো চিঠি উদ্ধার হয়েছে মানিকের কাছ থেকে। মঙ্গলবার আদালতে এমনই বিস্ফোরক দাবি করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরটের (ED) আইনজীবী। একইসঙ্গে তাঁর দাবি, মানিকের কম্পিউটারের ফোল্ডারে ৬১ জন চাকরিপ্রার্থীর নাম ছিল যার মধ্যে ৫৫ জন বেআইনিভাবে নিয়োগ পেয়েছে। উলটোদিকে ইডির সমস্ত আরজি খারিজের পালটা আবেদন করল মানিক ভট্টাচার্যের আইনজীবী। তাঁর দাবি, “গ্রেপ্তারি মেমো পাওয়া যায়নি। এই গ্রেপ্তারি অনৈতিক ও বেআইনি।” দুপক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর ইডির আরজি মঞ্জুর করে আদালত। মানিক ভট্টাচার্যের ১৪ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। ২৫ অক্টোবর ফের আদালতে তোলা হবে তাঁকে।

জুন মাসে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে নিয়োগ দুর্নীতিতে আর্থিক লেনদেনের তদন্ত শুরু হয়। সেই সূত্রে ধরেই একের পর এক গ্রেপ্তারি হয়েছে। সেই তালিকায় জুড়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের নাম। এদিন ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি জানান,মুখ্যমন্ত্রীকে এক ব্যক্তি চিঠি লিখে অভিযোগ জানিয়েছিলেন, ৪৪ জন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ৭ লক্ষ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠি মানিক ভট্টাচার্যের কাছে কীভাবে এল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ইডির আইনজীবী আরও জানায়, “মানিক ভট্টাচার্য গ্রেপ্তারি মানতে চায়নি। তাঁর ছেলেকেও ফোন করা হয়েছিল। ফোন বেজে গেলেও ধরেননি।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘তমোঘ্নকে বিজেপিতে পাঠিয়েছে সুদীপদাই’, BJP’র উত্তর কলকাতার সভাপতি বদল নিয়ে বিস্ফোরক কুণাল]

এদিকে ইডির আইনজীবী আদালতে আরও জানান, মানিক ভট্টাচার্যের ছেলে সৌরভবাবুর একটি সংস্থা রয়েছে, যেখানে আইটির (তথ্যপ্রযুক্তি) কাজ হয়। ছেলের অ্যাকাউন্টে ২ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে। জানা গিয়েছে, গত ২ সেপ্টেম্বর বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের সঙ্গে ওই সংস্থার চুক্তি হয়। তাতে সৌরভবাবুর সংস্থাকে ৫১৪ টি বিএ এবং বিএড কলেজে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের (আপগ্রেডেশন) দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু কোনও আপগ্রেডশনের কাজ হয়নি। টাকাও ফেরত যায়নি। সৌরভবাবুকে ডেকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। মনে করা হচ্ছে, মানিকবাবুর পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্ট থেকেও প্রচুর আর্থিক লেনদেন হয়েছে। পালটা ধৃতের আইনজীবী সঞ্জয় দাসগুপ্তর দাবি, “মানিকবাবুর ছেলে লন্ডন থেকে ডিগ্রি নিয়ে এসেছেন। তারপর সংস্থা খুলেছেন। বিশেষ কারণে কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। টাকা রয়েছে। সেই টাকা তো আত্মসাৎ হয়নি। যারা টাকা দিয়েছে চেকে পেমেন্ট করেছে। তাহলে দুর্নীতির কথা আসছে কোথা থেকে? এটা জাগলারি অফ সিচুয়েশন।”

ইডির আইনজীবী আরও জানান, মানিকের কম্পিউটারে দু’টি ফোল্ডার পাওয়া গেছে। যেখানে ৬১ চাকরিপ্রার্থীর নাম পাওয়া গিয়েছে। যাদের মধ্যে ৫৫ জন প্রার্থী বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছে। টাকা দিয়ে। সে বিষয়ে প্রমাণ মিলেছে। ইডির তরফে যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের দুরবস্থার কথাও তুলে ধরা হয়েছে। আইনজীবী বলেন, “হাজার-হাজার যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা পায়নি। অযোগ্যরা পেয়েছে। ভেবে দেখেছেন, রাজ্যের ভবিষ্যত কী? ছাত্রছাত্রীরা ভুয়ো শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছে। অন্যদিকে দেখুন, ৫৭৬ দিন গান্ধীমূর্তির তলায় পড়েরয়েছেন যোগ্য প্রার্থীরা। লক্ষ্মী পুজোয় তারা কেদেছে। মা লক্ষ্মীর কাছে জানিয়েছে যাতে তারা চাকরি পায়।”

[আরও পড়ুন: হাই কোর্টে ধাক্কা ইডির, গরুপাচার কাণ্ডে ধৃত সায়গল হোসেনকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার আরজি খারিজ]

মানির ভট্টাচার্যের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত বলেন, জামিনের আরজি জানাচ্ছি না। ইডির আরজি বাতিলের আবেদন জানাচ্ছি। পালটা ইডির দাবি, “জিজ্ঞাসাবাদে সহযোগিতা করেননি। তাই কাল রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। পরিবারের সঙ্গে মুখোমুখি জোর প্রয়োজন রয়েছে।” কেস ডায়েরি চেয়ে পাঠান বিচারক। দুপক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর মানিক ভট্টাচার্যের ১৪ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement