সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে চাঞ্চল্যকর মোড়। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ ধৃত মিডলম্যান প্রসন্ন রায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার দিলীপ ঘোষের নামের ডিড। দলিলে নাম থাকা দিলীপ ঘোষ যে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি, সে বিষয়ে তেমন সন্দেহের অবকাশ নেই। কারণ, সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রসন্নর হাতে দলিল দেওয়ার কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন বিজেপি নেতা। দলিল উদ্ধারের ইস্যুতে দিলীপকে গ্রেপ্তারির দাবিতে সরব তৃণমূল।
ঠিক কী হয়েছে? দিনচারেক আগে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত এসএসসি উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান এসপি সিনহাকে (SP Sinha) আদালতে তোলা হয়। তিনি বিচারকের সামনে সিবিআই সিজার লিস্ট জমা দেওয়ার দাবিতে সরব হন। তারপর সিবিআই (CBI) নড়েচড়ে বসে। জমা পড়ে সিজার লিস্ট। ওই সিজার লিস্টই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সিজার লিস্টের ৮ নম্বর পয়েন্ট দেখে কার্যত হতবাক প্রায় সকলেই।
৮ নম্বর পয়েন্টে রয়েছে দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) জমির দলিলের উল্লেখ। প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ ধৃত মিডলম্যান প্রসন্ন রায়ের ফ্ল্যাট থেকে ওই দলিলটি বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই। ওই ডিড অনুযায়ী, দিলীপ ঘোষ ২০২২ সালের ২২ এপ্রিল জনৈক শৌভিক মজুমদারের কাছ থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা এলাকায় জমিটি কেনেন।
ওই জমির দলিল সামনে আসার পর থেকে রাজনৈতিক মহলে জোর শোরগোল। ডিডে নাম থাকা দিলীপই কি বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। ওই ডিড যে তাঁরই, তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন খোদ দিলীপ ঘোষ। দাবি করেন, প্রসন্ন রায় ও তিনি একই আবাসনে থাকতেন। সেই সূত্রে প্রসন্নকে চিনতেন। বিদ্যুতের সংযোগ সংক্রান্ত কাজকর্মের জন্য দলিলটি প্রসন্নকে দিয়েছিলেন। তবে প্রসন্ন কোনও দুর্নীতিতে জড়িত জানলে দলিল দিতেন না বলেও দাবি দিলীপ ঘোষের।
যদিও বিরোধীরা এই ব্যাখ্যা মানতে নারাজ। তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত প্রসন্ন রায়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে দিলীপ ঘোষের জমির দলিল পাওয়া গিয়েছে। সিবিআই উদ্ধার করেছে। আদালতে জমা দিল। কিন্তু প্রথমে সিজার লিস্ট গোপন করা হল। আরেকজন অভিযোগের আইনজীবী যখন প্রশ্ন তুললেন তখন জমা পড়ল। যার বিরুদ্ধে বিজেপির এত অভিযোগ সেখানে দিলীপ ঘোষের দলিল? প্রসন্ন রায়ের বাড়িতে কী করে যায় দলিল? আমরা লক্ষ্য করলাম সিজার লিস্টে উঠে আসার পর সেটা গোপন করা হয়েছে। আদালতে বলার পর তা দেখানো হয়েছে। অবিলম্বে দিলীপ ঘোষকে গ্রেপ্তার করতে হবে। কথায় কথায় নোটিস পাঠিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাহলে দিলীপ ঘোষকে নয় কেন? কী কারণে প্রসন্নর বাড়িতে দলিল গেল? এই ঘটনায় দিলীপের গ্রেপ্তারি চাই। তিনি স্বীকার করেছেন প্রসন্ন রায়কে চেনেন। জমির সমস্যার কারণে সাহায্য চেয়েছেন। এই স্বীকারোক্তি তো গ্রেপ্তারির পর জেরার মুখে দেওয়ার কথা। তৃণমূলের হলে আগে গ্রেপ্তার, বিজেপি হলে নয়? অবিলম্বে দিলীপ ঘোষকে গ্রেপ্তার করে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.